ফের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ল আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া

নাগোর্নো-কারাবাখ সীমান্তে ফের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার সেনাবাহিনী। আজ মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ভোরে দুই পক্ষের মধ্যে এ সংঘর্ষকালে তুমুল গোলাবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের সেনা হতাহত হলেও তাৎক্ষণিক সংখ্যা প্রকাশ করা হয়নি। সংঘর্ষে উস্কানির জন্য একে অপরকে দোষারোপ করেছে দেশ দুটি। এর আগে ২০২০ সালে সীমান্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়েছিল দুই দেশ। খবর আল জাজিরা ও টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

নাগোর্নো-কারাবাখে ফের সংঘর্ষে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া

আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আর্মেনিয়ার সেনাবাহিনী প্রথমে দাশকেসান, কেলবাজার ও লাচিনের সীমান্তে গোলাবর্ষণ করে উস্কানি দেয়। আর্মেনিয়ার সেনাসদস্যরা আজারবাইজানীয় সেনাবাহিনীর অবস্থান লক্ষ্য করে সীমান্ত সড়কসহ বিভিন্ন স্থানে মাইন পাতে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় আজারবাইজানীয় সেনারা ব্যবস্থা নিতে গেলে সেনাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় ও মর্টার শেল ছোঁড়ে আর্মেনিয়ার সেনারা। এতে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে উভয়পক্ষ ভারী কামান ও ড্রোন ব্যবহার করেছে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের কিছু সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন, তবে তাদের সংখ্যা জানা যায়নি। 

এদিকে পাল্টা অভিযোগ করে আর্মেনিয়া জানিয়েছে, আজারবাইজানের সেনারা সীমান্তের গোরিস, সক ও জারমুকে আর্মেনিয়ার সেনাদের অবস্থান লক্ষ্য করে গভীর রাতে উপর্যুপরি গোলা নিক্ষেপ করতে শুরু করে। এ সময় জবাব দিয়েছে আর্মেনিয়ার সেনারা। 

আর্মেনীয় সরকার জানিয়েছে, সীমান্তে সর্বশেষ সংঘর্ষের বিষয়ে আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান মঙ্গলবার ভোরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। ফোনালাপে ম্যাক্রোন জোর দিয়ে বলেছেন, সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধি অগ্রহণযোগ্য এবং পরিস্থিতি শান্ত করা দরকার।

সীমান্ত সংঘাত নিরসনে গত মে ও এপ্রিলে ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যস্থতায় দুই পক্ষের আলোচনা হয়। এতে আজারবাইজানীয় প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ এবং আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান ভবিষ্যতের শান্তি চুক্তির বিষয়ে ‌'আগাম আলোচনা' করতে সম্মত হন। তা সত্ত্বেও নতুন করে সংঘর্ষে জড়ালো দেশ দুটি। 

এর আগে ২০২০ সালে নাগোর্নেো-কারাবাখ সীমান্তে যুদ্ধে জড়ায় আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান। ওই লড়াইয়ে আর্মেনিয়ার দখলে থাকা কিছু অঞ্চল পুনরুদ্ধার করেছিল আজারবাইজান। ওই যুদ্ধে দুই দেশের সীমান্তবর্তী হাজার হাজার বাসিন্দা বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছিল। ছয় সপ্তাহের যুদ্ধে প্রাণ হারায় সাড়ে ছয় হাজারের বেশি মানুষ। পরবর্তীতে রাশিয়ার মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি হয়।

১৯৮০-এর দশকের শেষের দিকে দুদেশের মধ্যে প্রথম শুরু হয়। তখন উভয়পক্ষই সোভিয়েত শাসনের অধীনে ছিল এবং আর্মেনিয়ান বাহিনী নাগোর্নো-কারাবাখের কিছু অংশ দখল করে নেয়। বিতর্কিত অঞ্চলটি দীর্ঘ সময় ধরে আন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজানের এলাকা হিসেবে স্বীকৃত। তবে অঞ্চলটিতে আর্মেনীয় জনসংখ্যার একটি বিরাট অংশ বাস করে।