যাদেরকে ‘ইহুদী তালেবান’ বলা হয়
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
রক্ষণশীল ইহুদী গোষ্ঠী লেভ তাহোরের ২৬ জন নারী-শিশু সদস্য মেক্সিকোতে কারারক্ষীদের ওপর হামলা চালিয়ে জেল থেকে পালিয়েছে। গত শুক্রবার মেক্সিকো ও ইসরায়েলের একটি যৌথ টিম চিয়াপাস প্রদেশের জঙ্গলে লেভ তাহোরের ঘাঁটিতে অভিযান চালিয়ে এদের আটক করে। বিষয়টির সুত্রানুসন্ধান করতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে ‘ইহুদী তালেবান’ নামে পরিচিত লেভ তাহোর সম্পর্কে বিচিত্র কিছু তথ্য। খবর এল পেইস, বিবিসি ও টাইমস অব ইসরায়েল।
লেভ তাহোর সদস্যরা সবসময় পা থেকে মাথা পর্যন্ত ঢেকে রাখা পোশাক পরে থাকে
ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মেক্সিকো, স্পেনসহ বিভিন্ন দেশের সংবাদমাধ্যম লেভ তাহোরকে বরাবরই ‘ইহুদী তালেবান’ নামে অভিহিত করে এসেছে। মেক্সিকোর কর্মকর্তারা জানান, লেভ তাহোর সদস্যরা কারারক্ষীদের আক্রমণ ও মারধর করে জেলখানার পাঁচিল ডিঙ্গিয়ে বাইরে অপেক্ষমান একটি বাসে চড়ে পালিয়ে যায়। বাসটি হন্ডুরাস সীমান্তের দিকে এগোতে থাকায় মেক্সিকোর পুলিশ, সেনাবাহিনী ও সীমান্তরক্ষীরা সেটিকে আর অনুসরণ করেনি।
লেভ তাহোর সদস্যরা যদি মেক্সিকো থেকে সীমান্ত পেরিয়ে হন্ডুরাসে যায়, তাহলে এটা হবে তাদের চতুর্থবারের মতো দেশত্যাগ। আশির দশকে ইসরায়েল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তরের পর লেভ তাহোরের প্রতিষ্ঠাতা ইহুদী ধর্মযাজক শ্লোমো হেলব্রানস ১৯৯০ সালে শিশু অপহরণের অভিযোগে পড়েন। হেলব্রানসের সাজা হয় এবং তাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইসরায়েলে প্রত্যর্পণ করা হয়।
কিছুদিন পর অনুসারীদের নিয়ে কানাডার মন্ট্রিয়লের ছোট শহর সেইন্ট-আগাথেতে বসতি স্থাপন করেন হেলব্রানস। সেখানে কেবল ধর্মকর্ম শিখিয়ে শিশুদের ভবিষ্যত নষ্ট করার অভিযোগ উঠলে কানাডা ছেড়ে গুয়েতেমালায় মায়া সম্প্রদায় অধ্যুষিত সান হুয়ান লা লাগুনায় যান তিনি। অতি রক্ষণশীল লেভ তাহোর সদস্যরা কারও সঙ্গে মিশতো না বলে মায়ান সমাজপতিরা তাদের অবাঞ্চিত ঘোষণা করেন। এ অবস্থায় প্রথমে গুয়েতেমালা সিটি ও পরে মেক্সিকোর চিয়াপাসে স্থানান্তর হতে বাধ্য হয় গোষ্ঠীটি।
লেভ তাহোর নিয়ে অভিযোগ ও প্রশ্নের আসল কারণ এ গোষ্ঠীর রক্ষণশীলতা। লেভ তাহোরের পুরুষ সদস্যরা জীবনে দাড়ি কাটে না। সবসময় তারা লম্বা জোব্বা ও মাথায় ইহুদী স্টাইলের টুপি পরে। নারী সদস্যরা তিন বছর বয়স হলেই পা থেকে মাথা পর্যন্ত ঢেকে রাখা আবায়া পরে। পূর্ণবয়স্ক নারীরা সবসময় কালো বোরখা পরে। মুখমণ্ডল ছাড়া সবকিছু আবৃত রাখেন এ সম্প্রদায়ের অনুসারীরা।
লেভ তাহোর সদস্যরা বাড়িতে কম্পিউটার, টেলিভিশন রাখে না, দেয়াল অলঙ্করণ করে না
খাদ্য নির্বাচনে বাইবেলে বিবৃত কাশরুত ও কোশের কঠোরভাবে অনুসরণ করে লেভ তাহোর সদস্যরা। সব খাবার অবশ্যই ঘরে তৈরি, প্রাকৃতিক ও অর্গানিক হতে হবে। প্রক্রিয়াজাত খাবার একেবারেই অনুমোদিত নয়। মুরগী ও ডিম জেনেটিক্যালি মোডিফায়েড হতে পারে বলে সন্দেহ থাকায় লেভ তাহোর সদস্যরা এ দুটি জিনিস সবসময় পরিহার করে। তবে হাঁস ও হাঁসের ডিম খেতে আপত্তি নেই।
পোকামাকড় থাকতে পারে বলে লেভ তাহোর সদস্যরা কখনও ভাত, পেঁয়াজ ও শাক খায় না। সবজি ও ফলমূল সবসময় খোসা ছাড়িয়ে খেতে হবে। এমনকি টমেটোরও খোসা ছাড়িয়ে খায় তারা। নিজ হাতে দুধ দুইয়ে নিতে না পারলে তারা গরুর দুধ খায় না। শিশুদেরকে কখনও দোকানের চকলেট, মিষ্টি খেতে দেওয়া হয় না। ঘরে বাদাম, ফলমুল দিয়ে তৈরি পায়েস খেতে আপত্তি নেই।
কম্পিউটার, টেলিভিশনের মতো ইলেকট্রনিক ডিভাইস তারা ব্যবহার করে না। ঘরে রেডিও বা অন্যান্য যন্ত্রপাতিও রাখে না তারা। লেভ তাহোর সদস্যদের বাড়ির দেওয়ালে কখনও কারও ছবি ঝোলানো হয় না, কোনো ডেকোরেশনও থাকে না। কেবলমাত্র মোমদানি দেওয়ালে রাখা যাবে। লেভ তাহোর সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বাল্য বিবাহ উৎসাহিত করার অভিযোগের জবাবে তাদের আইনজীবী ওবাদিয়া গুজমান বলেন, কেউ সংসার শুরু করার ইচ্ছা পোষণ করলে তাদের বাধা দেওয়া হয় না। এ ব্যাপারে জবরদস্তির কিছু নেই।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.