বঙ্গবন্ধু কৃষি পদক পাচ্ছেন ৪৪ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান

দেশের কৃষিখাতে অবদান রাখায় ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার’ পাচ্ছেন ৪৪ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। বুধবার (১২ অক্টোবর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিজয়ীদের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গবন্ধু কৃষি পদক তুলে দেওয়া হবে। এরমধ্যে ১৪২৫ বঙ্গাব্দের জন্য ১৫ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান এবং ১৪২৬ বঙ্গাব্দের জন্য ২৯ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান এ পুরস্কার পাচ্ছেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালী যুক্ত হবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। খবর বাসস।

সংবাদ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কারের কথা জানান কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক

কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ১৪২৫ ও ১৪২৬’ প্রদান উপলক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

কৃষিমন্ত্রী জানান, ৩টি স্বর্ণ, ১৬টি রৌপ্য ও ২৫টি ব্রোঞ্জ পদক দেওয়া হবে। এছাড়া বিজয়ীদের সনদ ও নগদ অর্থ পুরস্কার দেওয়া হবে। স্বর্ণ পদকপ্রাপ্তরা নগদ ১ লাখ টাকা, রৌপ্য পদকপ্রাপ্তরা ৫০ হাজার টাকা এবং ব্রোঞ্জ পদকপ্রাপ্তরা ২৫ হাজার টাকা পাবেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, ১৪২৫ বঙ্গাব্দের পুরস্কারের মধ্যে স্বর্ণপদক পেয়েছেন একজন। তিনি বগুড়ার শেরপুরের প্রাণিসম্পদ দপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. রায়হান।

সাত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান পাচ্ছেন রৌপ্যপদক। ব্যক্তিরা হলেন- পিরোজপুরের নাজিরপুরের বদরুল হায়দার বেপারী, কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার উপ-সহকারী কৃষি অফিসার হামিদুল, ঝিনাইদহ সদরের শারমিন আক্তার, পাবনার আটঘরিয়ার দুলাল মুখা, সাভারের কোব্বাদ হোসাইন ও রাজশাহী গোদাগাড়ির মনিরুজ্জামান মনির। প্রতিষ্ঠান ক্যাটাগরিতে পদক পাচ্ছে প্যারামাউন্ট এগ্রো লিমিটেড।

ব্রোঞ্জ পদক প্রাপ্ত সাত জন হচ্ছেন, রাজশাহীর তানোরের নুর মোহাম্মদ, পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ার বারেক হাওলাদার, রংপুরের বুড়িহাটের মজিদুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের শফিকুল ইসলাম, রাজশাহীরর পুঠিয়ার মোছা. পূর্ণিমা বেগম, নওগাঁর পোরশা উপজেলার গৌতম কুমার সাহা ও  ঢাকার নবাবগঞ্জের নিপু ট্রেডার্স।

১৪২৬ বঙ্গাব্দের জন্য পুরস্কার পাচ্ছে ২৯ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে স্বর্ণপদক প্রাপ্ত দুই জন হলেন, রাজশাহী গোদাগাড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম ও পাবনার ঈশ্বরদীর আমিরুল ইসলাম।

রৌপ্যপদক পাচ্ছেন ৯ জন। তারা হচ্ছেন, ঢাকা শেরে বাংলা নগরের মুহাম্মদ রকিবুল আহসান রনি, যশোরের ঝিকরগাছার নাসরিন সুলতানা, ঝিকরগাছা উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আইয়ুব হোসেন, খুলনার খালিশপুরের হালিমা বেগম, সিলেটের আব্দুল হাই আজাদ বলা, মাদারীপুর হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক সাইফুল ইসলাম, খুলনা ডুমুরিয়ার আবুল হোসেন সরদার, ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার রফিকুল ইসলাম ও  নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁর বাবুল হোসেন।

ব্রোঞ্জ পদক প্রাপ্ত ১৮ জন হচ্ছেন- দিনাজপুরের বিরল উপজেলার সাবেক কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবার রহমান, সিরাজগঞ্জের সহিদুল ইসলাম, ঝিনাইদহের কালিগঞ্জের মকবুল হোসেন,  খাগড়াছড়ির মহালছড়িরর হ্লাশিং মং চৌধুরী, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রোস্তম আলী, সিরাজগঞ্জের কামারখন্দের মাহবুবুল ইসলাম, ময়মনসিংহের গৌরীপুরের গাজী মামুদ, টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারের রিনা বেগম, নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা কৃষি অফিসার মোমরেজ আলী, পাবনার ঈশ্বরদীর শাহীনুজ্জামান, বান্দরবানের তোওয়াব্রোয়াও ম্রো, ফেনীর  মজিবুল হক, টাঙ্গাইলের মধুপুরের ছানোয়ার হোসেন, মুন্সীগঞ্জের সিরাজ খান, রাঙ্গামাটির রাজস্থলির আবদুল আউয়াল, নড়াইলের তনিমা আফরিন, গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরের শাকিল মিয়া এবং দিনাজপুরের রাখী।

ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের কৃষকদের উন্নয়নে স্বাধীনতার পরপরই যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। কৃষি গবেষণায় মেধাবীদের আকৃষ্ট করতে বঙ্গবন্ধু সরকারি চাকুরিতে কৃষি গ্র্যাজুয়েটদের প্রথম শ্রেণির মর্যাদা দিয়েছিলেন। কৃষির আধুনিকায়নে ওই পদক্ষেপ ছিল অনন্য দৃষ্টান্ত। এছাড়া কৃষি ও কৃষকদের উৎসাহিত করতে বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালে ‘বঙ্গবন্ধু পুরস্কার তহবিল’গঠন করেছিলেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর মতোই তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষি ও কৃষকবান্ধব হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। কৃষক, কৃষি বিজ্ঞানীসহ খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের উৎসাহিত ও সম্মাননা জানাতে কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (এআইপি) সম্মাননা প্রবর্তন করেছেন তিনি। ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার’ প্রবর্তনের মাধ্যমে কৃষিতে আগ্রহী জনশক্তি যেমন বাড়ছে, তেমনি কৃষি উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার বিজয়ী ব্যক্তিবর্গ ও প্রতিষ্ঠানগুলোও কৃষি ক্ষেত্রে নানাভাবে অবদান রাখছেন।