ইউক্রেন যুদ্ধ জলবায়ুর জন্য আশীর্বাদ!

ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের প্রভাব-প্রতিক্রিয়ায় বিশ্ব যখন জীবাশ্ম জ্বালানির দিকে ফিরে যেতে শুরু করছে, তখন বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার প্রধান মন্তব্য করেছেন, ইউক্রেনের যুদ্ধকে জলবায়ু দৃষ্টিকোণ থেকে আশীর্বাদ হিসেবে দেখা যেতে পারে। খবর হিন্দুস্তান টাইমস।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার সেক্রেটারি-জেনারেল পেটেরি তালাস

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার সেক্রেটারি-জেনারেল পেটেরি তালাস এমন সময় মন্তব্যটি করেছেন, যখন বিশ্ব জুড়ে জ্বালানির ঘাটতি তৈরি হয়েছে। তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের অন্যতম শীর্ষ উৎপাদক রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এর দরুন রাশিয়ার তেল ও গ্যাস পাওয়ার দ্বার সংকুচিত হয়েছে। ফলে বাধ্য হয়েই বিশ্ব জীবাশ্ম জ্বালানির দিকে ফিরছে। আবার কেউ কেউ বিপজ্জনক পরমাণু শক্তি উৎপাদনের দিকে ঝুঁকছে।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার প্রধান তার মন্তব্যের ব্যাখ্যায় বলেছেন, কিছু দেশ দ্রুত কয়লার মতো বিকল্পের দিকে ঝুঁকছে। কিন্তু তেল, গ্যাস ও কয়লার মতো কার্বন নির্গত করা জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেকে সৌর, বায়ু ও হাইড্রোথার্মালের মতো পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ব্যবহারের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদে তারা সবুজ শক্তির বিকাশ ও বিনিয়োগে নজর দিয়েছে।

সবুজ শক্তি

ইউক্রেনের যুদ্ধ ইউরোপীয় জ্বালানি সেক্টরের জন্য বড় একটি ধাক্কা এবং এর কারণে জীবাশ্ম শক্তির ব্যবহার অনেকাংশে বেড়েছে স্বীকার করে এই শীর্ষ নির্বাহী বলেন, আপাতদৃষ্টিতে কিছুদিনের জন্য এটি আমাদের জীবাশ্ম শক্তির ব্যবহারকে ত্বরান্বিত করবে। তবে দীর্ঘ মেয়াদে এই যুদ্ধ সবুজ রূপান্তরকে স্বাভাবিকের তুলনায় ত্বরান্বিত করছে।

তালাস বলেন, আমরা পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি সঞ্চয়ে আরও অনেক বেশি বিনিয়োগ করতে যাচ্ছি। ফলে জলবায়ুর দৃষ্টিকোণ থেকে, ইউক্রেনের যুদ্ধকে আশীর্বাদ হিসাবে দেখা যেতে পারে।

অন্য এক জায়গায় তিনি মন্তব্য করেন, বর্তমানের গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনে জ্বালানি বিভাগই তিন-চতুর্থাংশ দায়ী। এ অবস্থা রোধে তিনি পুরো জ্বালানি ব্যবস্থা সম্পূর্ণ রূপান্তরের আহ্বান জানিয়েছেন।

আবহাওয়া সংস্থার শীর্ষ নির্বাহী যখন এ কথা বলছিলেন, তখন এই সংস্থাই নতুন আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যেখানে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি রোধে আগামী আট বছরের মধ্যে শক্তির পরিষ্কার উৎস থেকে (সৌর, বায়ু ইত্যাদি) বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিমাণ দ্বিগুণ করতে হবে।