আপনি পড়ছেন

গুজরাট গণহত্যার সময় মুসলিম গৃহবধু বিলকিস বানু, তার মা ও বোনকে ধর্ষণ এবং পরিবারের সাত সদস্যকে হত্যার ঘটনায় সাজাপ্রাপ্ত ১১ অপরাধীকে মুক্তির অনুমোদন দিয়েছিল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। বিজেপির সাবেক সভাপতি অমিত শাহর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ অনুমোদন দেয়। ভারতের সুপ্রিম কোর্টে দাখিলকৃত এফিডেভিটে গুজরাট রাজ্য সরকার এ কথা জানিয়েছে। খবর এনডিটিভি।

11 convicts in the bilkis banoভারতের স্বাধীনতা দিবসে ছাড়া পায় বিলকিস বানু মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ১১ ধর্ষক ও হত্যাকারী

ধর্ষণের দায়ে দণ্ডিতদের সাজার মেয়াদ শেষ হবার আগে মুক্তি দেওয়ার সুযোগ ভারতের বিদ্যমান আইনে নেই। তারপরও বিলকিস বানু গণধর্ষণ ও হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ১১ অপরাধীকে গত ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবসে গুজরাটের জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। ওইদিন স্থানীয় বিজেপি নেতারা এসব অপরাধীকে মিষ্টি খাইয়ে ও মালা পরিয়ে বরণ করে নিলে সারা ভারতে নিন্দার ঝড় ওঠে।

ধর্ষণ ও হত্যায় সাজাপ্রাপ্তদের মুক্তি দিতে হলে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন। বিলকিস বানু গণধর্ষণ মামলায় সাজাপ্রাপ্তদের মুক্তির বিষয়ে অমিত শাহের মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছিল কিনা, গুজরাটের বিজেপি-দলীয় সরকার সে বিষয়ে এতদিন স্পষ্ট কিছু বলেনি।

ভারতে ও ভারতের বাইরে নিন্দার ঝড় তোলা এ মুক্তির আদেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে পৃথক পৃথক পিটিশন রুজু করেন তৃণমূল কংগ্রেসের এমপি মহুয়া মৈত্র, সিপিআই-এম নেত্রী সুহাসিনী আলী ও একজন মানবাধিকার সংগঠক। এরই প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট বিলকিস বানু মামলার সব কাগজপত্র হাজির করতে গুজরাট সরকারকে নির্দেশ দেয়।

গুজরাট সরকার গতকাল সুপ্রিম কোর্টে দাখিলকৃত এফিডেভিটে বলেছে, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার গত ১১ জুলাই ২০২২ তারিখের এক চিঠির মাধ্যমে সাজার মেয়াদ ফুরোনোর আগেই ১১ অপরাদীর মুক্তির অনুমোদন দেয়। চিঠিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৩৫ ধারার আওতায় আগাম মুক্তি দিতে কেন্দ্রীয় সরকারের সম্মতি/অনুমোদনের কথা জানানো হয়।

২০০২ সালে নরেন্দ্র মোদি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে সেখানে মুসলমানদের বিরুদ্ধে সহিংসতা শুরু হলে বিলকিস বানু ও তার পরিবারের সদস্যরা গুজরাটের দাহোড় এলাকায় বাড়ির কাছের কৃষিজমিতে আশ্রয় নেন। বিলকিস সে সময় পাঁচ মাসের অন্তঃসত্তা ছিলেন। ধর্ষণকারীরা বিলকিস বানু ও তার পরিবারের সদস্যদের আটক করে নিয়ে যায়।

বিলকিসের চোখের সামনে তার তিন বছর বয়সী কন্যা সন্তানের মাথা পাথর দিয়ে গুঁড়িয়ে শিশুটিকে হত্যা করা হয়। বিলকিস জানান, এ সময় পরিবারের আরও সাত সদস্যকে হত্যা করা হয়, যাদেরকে ভারতের সরকারি কাগজপত্রে নিখোঁজ হিসেবে দেখানো হয়েছে। অপরাধীরা বিলকিস, তার বোন ও মাকে উপর্যুপরি ধর্ষণ করে। অন্য দুজন ঘটনাস্থলে মারা যান। বিলকিস এ পাশবিকতার একপর্যায়ে মরে যাবার ভান করে অসাড় পড়ে থাকলে অপরাধীরা তাকে ফেলে রেখে চলে যায়। চার ঘণ্টা পর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে তিনি অন্যত্র আশ্রয় নেন এবং পরদিন অপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

ভুলভাল পুলিশী তদন্ত, একের পর এক আলামত ও নথিপত্র গায়েবের পরও হাল ছেড়ে দেননি বিলকিস বানু। নানা আদালতে মামলা নিয়ে ঘোরাঘুরির পর অবশেষে মুম্বাইয়ে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত বিলকিস বানু গণধর্ষণ ও হত্যা মামলায় অভিযুক্ত তার ১১ প্রতিবেশীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। পরে হাইকোর্ট ওই আদেশ বহাল রাখে।

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.