আশঙ্কাজনকভাবে কমেছে তামার সরবরাহ

বিশ্ববাজারে তামা সরবরাহ আশঙ্কাজনকভাবে কমেছে। আগে নিয়মিত চাহিদা মিটিয়ে বাজারে কয়েক সপ্তাহের প্রয়োজন মেটানোর মতো উদ্বৃত্ত মজুত থাকত। এখন সে তুলনায় পাঁচদিনের চাহিদা মেটানোর মতো মজুতও বাজারে থাকছে না। বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ মেটাল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ট্র্যাফিগুরা এ তথ্য জানিয়েছে।

বিশ্ববাজারে তামা সরবরাহ আশঙ্কাজনকভাবে কমেছে বলে শীর্ষস্থানীয় ট্রেডাররা

ট্র্যাফিগুরার মেটালস অ্যান্ড মাইনিং ট্রেডিং ডিভিশনের উপপ্রধান কস্তাস বিন্তাস বলেছেন, বর্তমানে ৪ দশমিক ৯ দিনের প্রয়োজন মেটানোর মতো তামা বাজারে মজুত থাকছে। এভাবে চললে বছরের শেষ নাগাদ বড় জোর ২ দশমিক ৯ দিনের মজুত থাকবে বাজারে। তামার মজুত এমন আশঙ্কাজনক কমে আসায় ঝুঁকির মুখে রয়েছে ভারী যন্ত্রপাতি, স্মার্টফোন, বিদ্যুৎচালিত গাড়ির ব্যাটারি, খননযন্ত্র, বায়ু বিদ্যুতের টারবাইন ও অন্যান্য যন্ত্রাংশ উৎপাদন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, চীনের আবাসন বাজারে ধস নামায় তামার চাহিদা ধাক্কা খেয়েছিল। তবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি শিল্প চাঙ্গা হওয়ায় তামার চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা দ্বিগুণ করার লক্ষ্যমাত্রা হাতে নেওয়ায় ধাতুটির চাহিদা আরও বাড়বে।

বর্তমানে প্রতি টন তামা বিক্রি হচ্ছে ৭ হাজার ৪০০ ডলার দরে, যা মার্চ মাসের তুলনায় কম। মার্চ মাসে তামার বাজারদর ছিল প্রতি টন ১০ হাজার ডলার। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে সুদহার বৃদ্ধির কারণে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড হোঁচট খাওয়ায় তামার চাহিদা ও দাম হ্রাস পায়। তবে বাজারে মজুত কমতে থাকায় যে কোনো সময় পন্যটির দর বেড়ে যেতে পারে।

কস্তাস বিন্তাস বলেন, তামার দাম এখনকার তুলনায় আগামী দিনগুলোতে নিশ্চিতভাবে বাড়বে। প্রতি টনের দাম ১৫ হাজার ডলারের বেশি হতে পারে এমন সম্ভাবনাও নাকচ করা যায় না। প্রথাগত জ্বালানি বাজারের ঝুঁকি ও অস্থিতিশীলতার কারণে ইইউসহ অনেকে নবায়নযোগ্য শক্তির দিকে ঝুঁকছে। সৌর ও বায়ুশক্তি শিল্পের অনেক উপকরণেই তামার প্রয়োজন। চলতি দশকের আরও পরের দিকে তামার চাহিদা যখন হু হু করে বাড়বে তখন পন্যটির খনিজ মজুত আহরণ করাও কঠিন হতে থাকবে।

মেটাল খাতের আরেক প্রতিষ্ঠান বিএইচপি গ্রুপের সিইও মাইক হেনরি বলেন, তামা, নিকেল, লিথিয়াম ও অন্যান্য ধাতুর ভূগর্ভস্থ মজুত যথেষ্ট থাকলেও বাজারে চাহিদা বৃদ্ধির সময় খনি থেকে সরবরাহ নিশ্চিত করা যায় কিনা সে বিষয়ে অনিশ্চয়তা থেকে গেছে।

নির্মাণ খাত থেকে শুরু করে ভারি যন্ত্রপাতি, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্সসহ অনেক শিল্পে তামার চাহিদা রয়েছে। এজন্য তামার চাহিদার ওঠানামাকে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ব্যারোমিটার ভেবে থাকেন অনেকে।