লিজ ট্রাসের পতনে দুঃখিত নয় ফিলিস্তিন!

দিন কয়েক আগে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস পদত্যাগ করেছেন। তার মেয়াদ ছিল মাত্র ছয় সপ্তাহ। নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের আগ পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব পালন করে যাবেন। পদত্যাগের একদিন আগে মন্তব্য করেছিলেন, তিনি একজন যোদ্ধা, লড়াই করে যাবেন। তার এমন পতনে ফিলিস্তিনিরা বরং বেশ খুশি। খবর মিডলইস্ট মনিটর।

লিজ ট্রাস

ব্রিটিশ ইতিহাসে সবচেয়ে কম সময়ের প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস মূলত তার বেশকিছু অর্থনৈতিক পরিকল্পনার কারণেই দেশবাসী ও দলীয় সদস্যদের ক্ষোভের মুখে পড়েন। অথচ অর্থনৈতিক মুক্তির কথা বলেই ঋষি সুনাককে পরাজিত করে বরিস জনসনের উত্তরাধিকারী হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসেছিলেন তিনি।

লিজ ট্রাসের এ পরিণতিতে ফিলিস্তিনিরা বেশ খুশি। মূলত ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল বিষয়ে তার সাম্প্রতিক ও আগের মনোভাবই এর জন্য দায়ী। এই মাসের শুরুতে কনজারভেটিভ ফ্রেন্ডস অব ইসরায়েল (সিএফআই) লবি গ্রুপকে লিজ ট্রাস বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথমবারের মতো সিএফআইয়ে আসতে পেরে আমি খুব খুশি। আপনারা জানেন আমি একজন বড় ইহুদিবাসী। আমরা ইচ্ছে করলে যুক্তরাজ্য-ইসরায়েল সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করে তুলতে পারি।

ফিলিস্তিনের অধিকৃত স্থানে ইসরায়েলের বসতি

ফিলিস্তিনিরা তার এ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলে, ট্রাস যেভাবে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন দিয়েছেন, তা তার বর্ণবাদী প্রকৃতির এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যে নিন্দা জানাচ্ছে তার প্রতি অবমাননার শামিল। ইহুদিবাদীরা আমাদের খরচে আমাদের দেশেই একটি ইহুদি রাষ্ট্র গঠন করতে চায়। লিজ ট্রাস সেটিকেই সমর্থন করেন। তিনি মূলত শত সহস্র ফিলিস্তিনিদের বিতাড়ন, গণহত্যা এবং ফিলিস্তিনজুড়ে আদিবাসীদের বাড়িঘর, শহর ও গ্রাম ধ্বংসকে সমর্থন দিয়েছেন।

এর আগে লিজ ট্রাস যখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন, তখন তিনি বলেছিলেন, যুক্তরাজ্য বিশ্বজুড়ে বন্ধু ও মিত্রদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায়। আর এক্ষেত্রে আমাদের জন্য ইসরায়েলের চেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও মিত্র আর কেউ নেই।

তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অনুসরণ করে ব্রিটিশ দূতাবাস তেল আবিব থেকে সরিয়ে অধিকৃত জেরুজালেমে স্থানান্তরের পরামর্শ দিয়েছিলেন। তখন তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের একটি মাত্র রাজধানী আছে, সেটি হলো লন্ডন। অন্যদিকে ইসরায়েলের একটি রাজধানী আছে, আর সেটি হচ্ছে জেরুজালেম।

সবমিলিয়ে লিজ ট্রাসের আকস্মিক পতনে বিন্দুমাত্র দুঃখিত নয় ফিলিস্তিন।