কাতার বিশ্বকাপে যে কয়টি শিরোপা প্রত্যাশী দল আছে তাদের মধ্যে অন্যতম ফ্রান্স। টুর্নামেন্টে রাজত্ব ধরে রাখাই স্বপ্ন তাদের। চার বছর আগে রাশিয়া বিশ্বকাপেও ফেভারিট ছিল তারা। সেই তকমটার যথার্থ মূল্যায়ন করেছে। প্রায় তরুণ একটা দল নিয়ে বাজিমাত করে ফরাসিরা। স্বপ্নের সেই টুর্নামেন্টের বেশির ভাগ খেলোয়াড়ই এবার কাতার যাচ্ছেন। কিলিয়ান এমবাপ্পে, অ্যান্তনি গ্রিজম্যান, উসমান ডেম্বেলেরা এবার আরও পরিণত।

france in world cup 2022আসন্ন কাতার বিশ্বকাপের হট ফেভারিট ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স

নিষেধাজ্ঞার কারণে আগের আসরে খেলতে না পারা করিম বেনজেমা এবার ফিরেছেন দলটিতে। আছেন হুগো লরিসের মতো বিশ্বমানের গোলরক্ষক। সবমিলিয়ে শিরোপা জেতার মতো শক্তি এবং সামর্থ্য দুটোই আছে তাদের। কিন্তু ফাইনাল তো অনেক দূরের পথ, আপাতত গ্রুপপর্ব নিয়েই ভাবতে হচ্ছে ফরাসিদের। কারণ ২০০২ সালে শিরোপা ধরে রাখার অভিযানে নক আউট পর্বেই উঠতে পারেনি দলটি! ফ্রান্সের অবশ্য দোষ দিয়ে লাভ নেই। এই শতাব্দীর বিশ্বকাপ এমনই চলছে।

ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা গ্রুপপর্বে বিদায় নেওয়ার ঘটনা গত পাঁচটি আসরেই দেখা গেছে। ফ্রান্সের জন্য এবারের আসরটা ইতিহাসের দেয়াল ভাঙার চ্যালেঞ্জ। এ যাত্রায় তাদের গ্রুপটাও কিছুটা কঠিন। গ্রুপে আছে ডেনমার্ক। যাদের কাছে শেষ দুবারই হেরেছে তারা। গ্রুপপর্বে ফরাসিদের অন্য দুই প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া ও তিউনিসিয়া। এই দুটি দলকে হারাতে পারলে শেষ ষোলোর পথ ফ্রান্সের জন্য পরিষ্কার হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু বিশ্বকাপ শুরুর কিছুদিন আগেই ধাক্কা খেতে হলো ফ্রান্সকে। চোট নিয়ে আসর থেকে ছিটকে গেছেন অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার পল পগবা।

তারকা: গত বিশ্বকাপ খেলতে পারেননি করিম বেনজেমা। সতীর্থের ফাঁস হওয়া সেক্সটেপ কেলেঙ্কারির বোঝা নিয়ে দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ বছর ফান্স দল থেকে নির্বাসিত ছিলেন তিনি। জাতীয় দলে তার প্রত্যাবর্তনটা হয়েছে স্বপ্নের মতো। ফিরেই বেনজেমা ফরাসিদের জেতান উয়েফা নেশনস লিগের শিরোপা। আন্তর্জাতিক ফুটবলে নিষিদ্ধ থাকলেও এ সময়ে ক্লাব ফুটবলে নিয়মিত পারফর্ম করেছেন তিনি। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে জেতেন চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা। গত মৌসুম ধরে তো প্রায় একই রিয়ালের ঘানি টানছেন তিনি।

সবশেষ মৌসুমে স্প্যানিশ ক্লাবটি যে ডাবলস জিতল সেটার মূল নায়ক ছিলেন এই বেনজেমাই। ক্লাব এবং আন্তর্জাতিক ফুটবলে ধারাবাহিক সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে এ বছর ফিফা বর্ষসেরা খেলোয়াড়, উয়েফা বর্ষসেরা খেলোয়াড় এবং ব্যালন ডি’অরের মুকুট জিতেছেন বেনজেমা। এবার কাতার বিশ্বকাপে তিনিই ফ্রান্সের সবচেয়ে বড় তারকা। ২০০৭ সালে ফ্রান্সের জার্সিতে অভিষেক হওয়া এই তারকা ৩৭টি গোল করেছেন। ৩৪ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার কয়েক বছর ধরে যেমন ফর্মে আছে সেটা কাতারে অব্যাহত থাকলে আবারো ফ্রান্সের হাতে উঠতে পারে শিরোপা।

প্রধান কোচ: ১৯৯৮ সালে ফ্রান্সের বিশ্বকাপ জয়ী দলের অধিনায়ক ছিলেন দেশাম। জিনেদিন জিদান জাদুতে অনেকটাই আড়ালে থেকে গেছে তার পারফরম্যান্স ও নেতৃত্ব। তবু ফরাসি ফুটবল ইতিহাসে দেশাম এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম। খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপ জেতা এই কিংবদন্তি কোচ হিসেবেও করেছেন বাজিমাত।

টুর্নামেন্টে বড় কোচদের মধ্যে তিনি একজন। ফরাসিদের তৃতীয় স্বর্গে নেওয়ার মতোই একটা দল পেয়েছেন দেশাম। রক্ষণ, মধ্যমাঠ কিংবা আক্রমণ তিন বিভাগে অভিজ্ঞ ও তরুণ ফুটবলারদের নিয়ে দলে দারুণ একটা ভারসাম্য তৈরি করেছেন তিনি। বিশ্বকাপ জিততে একটি আদর্শ দলের যেসব উপদান দরকার এর সবকিছুই আছে দেশামের কাছে।

কিংবদন্তি: ফ্রান্সের ফুটবল ইতিহাসে সর্বকালের সেরা ফুটবলার জিনেদিন জিদার। তার দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের ওপর দাঁড়িয়ে ১৯৯৮ সালে স্বপ্নের প্রথম বিশ্বকাপে জেতে ফরাসিরা। ২০০৬ সালেও ট্রফি জয়ের সুযোগ ছিল তার। কিন্তু টুর্নামেন্টের ফাইনালে ইতালিয়ান ডিফেন্ডার মার্কো মাতোরাজ্জিকে ঢুঁস মেরে লাল কার্ড দেখেছিলেন জিজু। জিদানের ওই ঢুঁস-কাণ্ডে বিশ্বকাপের ইতিহাসে ন্যক্কারজনক ঘটনাগুলোর একটি। সেটাই ছিল জাতীয় দলের হয়ে তার শেষ ম্যাচ।

১৯৯৪ সালে আন্তর্জাতিক ফুটবলে প্রথম ম্যাচটি খেলেন জিজু। দেশের হয়ে ১০৮ ম্যাচে ৩১টি গোল করেছিলেন। খেলোয়াড়ি জীবনে নিজেকে প্রমাণ করা জিজু কোচ হিসেবে নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। প্রথম কোচ হিসেবে টানা তিনটি উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা জেতেন তিনি। আপাতত নির্বাসনে আছেন জিদান। অনেকেরই ধারণা এবারের বিশ্বকাপ শেষে ফ্রান্সের প্রধান কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেবেন জিজু। তিনি ছাড়াও ফ্রান্সের কিংবদন্তিদের মধ্যে আছেন মিশেল প্লাতিনি, থিয়েরি অঁরি, লিলিয়ান থুররামের মতো ফুটবলাররা।

ফ্রান্স:

গ্রুপ ‘ডি’: ফ্রান্স, তিউনিসিয়া, অস্ট্রেলিয়া, ডেনমার্ক

ফিফা র‌্যাঙ্কিং: ৪

বিশ্বকাপ রেকর্ড:

১৯৩০: গ্রুপপর্ব
১৯৩৪: শেষ ১৬
১৯৩৮: কোয়ার্টার ফাইনাল
১৯৫০: বাছাই
১৯৫৪: গ্রুপপর্ব

১৯৫৮: সেমিফাইনাল
১৯৬২: বাছাই
১৯৬৬: গ্রুপপর্ব
১৯৭০-৭৪: বাছাই
১৯৭৮: গ্রুপপর্ব

১৯৮২: সেমিফাইনাল
১৯৮৬: সেমিফাইনাল
১৯৯০-৯৪: বাছাই
১৯৯৮: চ্যাম্পিয়ন
২০০২: গ্রুপপর্ব

২০০৬: রানার্সআপ
২০১০: গ্রুপপর্ব
২০১৪: কোয়ার্টার ফাইনাল
২০১৮: চ্যাম্পিয়ন

গ্রুপপর্বের সূচি:

২২ নভেম্বর: ফ্রান্স-অস্ট্রেলিয়া, সন্ধ্যা ৭টা
২৬ নভেম্বর: ফ্রান্স-ডেনমার্ক, বিকেল ৪টা
৩০ নভেম্বর: তিউনিসিয়া-ফ্রান্স, রাত ৯টা

Stay on top of the latest sports news, including cricket and football, from around the world. Get comprehensive coverage of matches, tournaments, and leagues— along with expert analysis and commentary from our team of sports journalists. Whether you're a die-hard fan or a casual observer, you'll find everything you need to know about your favorite sports here.

Sports, cricket, and football are popular topics in the world of sports. Cricket is a bat-and-ball game played between two teams of eleven players and is particularly popular in South Asian countries. Football, also known as soccer, is a team sport played with a spherical ball between two teams of eleven players and is widely popular worldwide. Sports enthusiasts follow the latest news, matches, tournaments, and leagues in these sports and analyze and comment on the performances of players and teams.