বিশ্বকাপের প্রাচীন দলগুলোর একটি মেক্সিকো। ১৯৩০ সালে প্রথম বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছিল ‘এল ট্রি’রা। ফুটবল মহাযজ্ঞে তাদের সর্বোচ্চ সাফল্য কোয়ার্টার ফাইনাল। তিনবার শেষ আটে খেলেছে তারা। কিন্তু সবশেষ সাত আসরে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালের বৃত্তে আটকা পড়েছে মেক্সিকানরা। কাতার বিশ্বকাপ তাদের জন্য শেষ ষোলোর বৃত্ত ভাঙার চ্যালেঞ্জ নিয়ে এসেছে।
টানা সাত বিশ্বকাপে নক আউট পর্বের শুরুতেই বিদায় নিয়েছে মেক্সিকো। এবার বৃ্ত্ত ভাঙার চ্যালেঞ্জ
গত আসরেও সুযোগ ছিল তাদের। চারবারের চ্যাম্পিয়ন জার্মানিকে গ্রুপপর্বে বিদায় করে মেক্সিকো। কিন্তু নক আউট পর্বের শুরুতেই ব্রাজিলের কাছে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যায় উত্তর আমেরিকার দলটি। এবারো গ্রুপপর্বের বাধা পাড়ি দেওয়ার আশা আছে তাদের। তবে কাজটা কঠিন। কারণ গ্রুপে তাদের লড়তে হবে আর্জেন্টিনা ও পোল্যান্ডের মতো দলের বিপক্ষে।
তারকা: ২০১৪ বিশ্বকাপে ব্রাজিল-মেক্সিকো ম্যাচের কথা মনে আছে? পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের দুর্দান্ত আক্রমণের বিপরীতে মহাপ্রাচীর গড়ে তুলে দিয়েছিলেন গুলের্মো ওচোয়া। সেদিন গোল পোস্টের নিচে প্রায় অবিশ্বাস্য হয়ে উঠেছিলেন তিনি। এখনো মেক্সিকোর গোলবারের নিচে ওচোয়া-ই মূল ভরসা। দেশের হয়ে ১৩০টি ম্যাচ খেলে ফেলেছেন তিনি। ২০০৫ সালে আন্তর্জাতিক ফুটবলে অভিষেক হয় তার। এবারো মেক্সিকানদের ভরসার প্রতীক তিনি। দলটিতে আরও একজন বড় তারকা আছেন। তিনি আন্দ্রেস গুয়ার্দাদো। মেক্সিকোর অধিনায়ক। আর একবার মাঠে নামলেই দেশের হয়ে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ড হয়ে যাবে তার। গুয়ার্দাদো ছাড়িয়ে যাবেন ১৭৭ ম্যাচ খেলা ক্লদিও সুয়ারেজকে।
প্রধান কোচ: দুই যুগের কোচিং ক্যারিয়ারে ক্লাব ফুটবলে বেশির ভাগ সময় কাটলেও মেক্সিকো জেরার্ডো টাটা মার্টিনোর দ্বিতীয় জাতীয় দল। আর্জেন্টিনার দায়িত্বও পালন করেছিলেন তিনি। বার্সেলোনার কোচের ভূমিকাতেও এক মৌসুম দেখা গেছে আর্জেন্টাইন কোচকে। ২০১৯ সালে মেক্সিকোর প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ পান মার্টিনো। তার অধীনে কাতার বিশ্বকাপের মূলপর্বের টিকিট কাটে। তার ওপর অগাধ আস্থা আছে মেক্সিকানদের। দলে তিনিই সর্বক্ষমতার অধিকারী। যার একটা নমুনা মার্টিনো দেখিয়েছেন। বিশ্বকাপ দলে তিনি রাখেননি অভিজ্ঞ দুই ফুটবলার হ্যাভিয়ের হার্নান্দেজ ও কার্লোস ভেলাকে। যা অনেককেই বিস্মিত করেছে। অভিজ্ঞদের বদলে তরুণ ফুটবলারদের প্রাধান্য দিয়েছেন মেক্সিকো কোচ।
কিংবদন্তি: মেক্সিকোর ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে বড় কিংবদন্তি ভাবা হয় ক্লদিও সুয়ারেজকে। মেক্সিকোর হয়ে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ডটা তার দখলেই। যদিও সুয়ারেজের রেকর্ডটা নড়বড়ে হয়ে উঠেছে। এবারের বিশ্বকাপে ভেঙে যেতে পারে রেকর্ডটা। ১৯৯২ সালে মেক্সিকোর জার্সিতে অভিষেক হয় সুয়ারেজের। ২০০৬ সালে অবসর নেন তিনি। সুয়ারেজ ছাড়াও মেক্সিকান ফুটবলে কিংবদন্তিদের তালিকায় আছেন রাফায়েল মার্কেজ ও র্যামন র্যামিরেজের মতো সাবেক ফুটবলাররা। তবে একবিংশ শতাব্দীতে দেশটির সবচেয়ে তারকা হয়ে ওঠেন হ্যাভিয়ের হার্নান্দেজ ‘চিচারিতো’। মেক্সিকোর সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি। হার্নান্দেজের গোল ৫২টি।
মেক্সিকো
গ্রুপ ‘সি’: আর্জেন্টিনা, মেক্সিকো, পোল্যান্ড, সৌদি আরব
ফিফা র্যাঙ্কিং: ১৩
বিশ্বকাপ অভিজ্ঞতা
১৯৩০: গ্রুপপর্ব
১৯৩৪: বাছাইপর্ব
১৯৩৮: নাম প্রত্যাহার
১৯৫০-৬৬: গ্রুপপর্ব
১৯৭০: কোয়ার্টার ফাইনাল
১৯৭৪: বাছাইপর্ব
১৯৭৮: গ্রুপপর্ব
১৯৮২: বাছাইপর্ব
১৯৮৬: কোয়ার্টার ফাইনাল
১৯৯০: নিষিদ্ধ
১৯৯৪-২০১৮: শেষ ১৬
গ্রুপপর্বের সূচি:
২২ নভেম্বর: মেক্সিকো-পোল্যান্ড
২৬ নভেম্বর: আর্জেন্টিনা-মেক্সিকো
৩০ নভেম্বর: মেক্সিকো-সৌদি আরব