দরজায় কড়া নাড়ছে বিশ্বকাপ। কাতারে বসতে যাচ্ছে ফুটবল মহাযজ্ঞের ২২তম আসর। তার আগের প্রতিযোগিতাগুলো কেমন ছিল, কারাই বা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল-ফুটবল উৎসবের বানে ভেসে যাওয়ার আগে একটু চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক সেখানে-

france জিদানের হাতে স্বপ্নের শিরোপা

১৯৩৮ সালের প্রথমবারের মতো ফ্রান্সে বসেছিল বিশ্বকাপ আসর। ১৯৯২ সালে জুরিখে ফিফা অধিবেশনে মরক্কোকে ১২-৭ ভোটে হারিয়ে ষোড়শ আসর আয়োজনের দায়িত্ব পায় তারা।

১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপ থেকেই ২৪ দলের জায়গায় অংশ নেয় ৩২ দল। আট গ্রুপে রাখা হয় চারটি করে দল। ১০ জুন থেকে ১২ জুলাই- ৩২ দিন ধরে চলে টুর্নামেন্ট, এখন পর্যন্ত যা সবচেয়ে দীর্ঘ আসর।

স্বাগতিক ফ্রান্স ও শিরোপাধারী ব্রাজিল মূল পর্বে খেলে সরাসরি। বাছাই পর্ব পেরিয়ে আসে ৩০ দেশ। এর ১৪টি আসে ইউরোপ থেকে। আফ্রিকা থেকে আসে পাঁচটি দেশ। লাতিন আমেরিকা ও এশিয়া থেকে আসে চারটি করে ম্যাচ। কনমেবল অঞ্চল থেকে অংশ নেয় তিনটি দেশ। আর সেবারই ফাইনালে আগের আসরের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলকে ৩-০ গোলে হারিয়ে প্রথমবার বিশ্বকাপ জেতে ফ্রান্স। জিনেদিন জিদানের দুর্দান্ত পারফম্যান্সে ব্রাজিলিয়ান সাম্রাজ্য ভেঙে উৎসবে মাতে ফরাসিরা।

ব্রাজিল দলে ছিলেন আগের বিশ্বকাপ জয়ের অধিনায়ক দুঙ্গা। ছিলেন কাফু, রিভাল্ডোর মতো অভিজ্ঞ মিড ফিল্ডার ও প্লে মেকার। আরও ছিলেন বিশ্বকাপের স্বাদ পাওয়া ‘মিস্টার ফ্লেমেঙ্গো’ খ্যাত রোনালদো, রবার্ট কার্লোসের মতো খেলোয়াড়েরা।

ব্রাজিলের বিপক্ষে ফ্রান্স দলে প্লে-মেকার জিনেদিন জিদান আর স্ট্রাইকার স্টিফেন গুইভার্চ ছাড়া উল্লেখযোগ্য কেউ ছিলেন না। তবে দলের অন্যতম ভরসার নাম ছিল গোলরক্ষক ফেবিয়েন বার্থেজ।

ফ্রান্সের সেইন্ট ডেনিস শহরের স্টেড ডি ফ্রান্স জাতীয় ফুটবল স্টেডিয়াম। এখানেই ১৯৯৮ সালের ১২ জুলাই ফাইনালে মুখোমুখি হয় ব্রাজিল ও ফ্রান্স। কিক অফের শুরু থেকেই ব্রাজিল শিবিরে একের পর এক আক্রমণ চালাতে থাকে ফ্রান্স। গোল পোস্টের দিকে প্রথম আক্রমণটিও করে ফ্রান্স।

খেলার প্রায় ৪ মিনিটের মাথায় স্ট্রাইকার গুইভার্চের জন্য দারুণ এক সুযোগ করে দেন জিদান। তবে সে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি গুইভার্চ। ম্যাচের প্রায় ৭ মিনিটের মাথায় প্রথম ফ্রি-কিকের বাঁশি বাঁজে। জিদানের নেওয়া শটে মাথা ছোয়ান রাফি জরকায়েফ। তবে গোল পোস্টের অনেক বাইরে আর ওপর দিয়ে যায় সেই হেড।

ব্রাজিলের পক্ষ থেকে বলার মতো আক্রমণ হয় ম্যাচের ২১ মিনিটে। ডি-বক্সের বাইরে বাম কোণা থেকে রবার্ট কার্লোসের সেই শট কাপিয়ে দিয়েছিল স্বাগতিকদের। খুব সামান্য ব্যবধানে জালের ওপরে গিয়ে পরে বলটি। এর প্রায় দেড় মিনিট পরে আরেকটি সুযোগ পায় ব্রাজিল। একই দিক থেকে ক্রস নেয় স্ট্রাইকার রোনালদো। কিন্তু গোল পোস্টের সামনে থেকে বেবেতো কিছু করার আগেই সেই ক্রস তালুবন্দী করেন ফেঞ্চ গোলরক্ষক বার্থেজ। হাত থেকে প্রায় ছুটে যাওয়া বল ঠিকই ধরে রাখেন তিনি। আর সেই সঙ্গে মনে হয় ফ্রান্সের বিশ্বকাপটাও!

২৪ মিনিটে আরও একটি সুযোগ পায় ব্রাজিল। লিও নার্ডোর নেওয়া কর্ণার কিক নিখুঁতভাবে পৌঁছায় রিভালদোর মাথায়। হেড নেন গোলপোস্টে। কিন্তু ফ্রান্সের দেয়াল হয়ে তা রুখে দেন বার্থেজ। ২৭ মিনিটে আরও একটি কর্ণার। তবে এবার ব্রাজিলের ডি-বক্সে ফ্রান্সের কর্ণার। কর্ণার শট থেকে ছুটে আসা বলে আলতোভাবেই যেন মাথাটা ছুইয়ে দিলেন জিদান। তবে বার্থেজের মতো তা রুখে দিতে পারেননি ব্রাজিলের গোলরক্ষক তাফারেল। খেলায় তখন ব্রাজিল ১-০ গোলে এগিয়ে।

এরপর প্রথমার্ধে আরও অনেক সুযোগ পেয়েও তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় দুদলই। এরই মধ্যে বের হয়ে আসে ম্যাচের প্রথম হলুদ কার্ড। কার্ডটি দেখেন ব্রাজিলের জুনিয়র বায়ানো। খানিক বাদেই রিভালদো ফাউল করার জন্য হলুদ কার্ড দেখেন ফ্রান্সের অধিনায়ক দিদিয়ের দেশ্চ্যাম্প। এমন উত্তেজনার মধ্যেই প্রথমার্থের অতিরিক্ত সময়ে ব্রাজিলের জালে আরও একবার বল জড়ান জিদান। এবারও সেই কর্ণার, আর জিদানের মাথা!

দ্বিতীয়ার্থে শিরোপা ধরে রাখার যুদ্ধে মরিয়া অনেক চেষ্টা করেও গোল পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়। কোনভাবেই ফ্রান্সের প্রতিরক্ষা কবজ ভাঙ্গতে পারছিল না কাফু-কার্লোস-রিভালদো আর রোনালদোরা। এক পর্যায়ে ডি-বক্সের অনেক বাইরে থেকে দূরবর্তী শট নিতে শুরু করে ব্রাজিল। কিন্তু সেগুলোও গোল পোস্ট ভেদ করতে পারেনি।

এক প্রকার নিশ্চিত জয়ে ব্রাজিলের কফিনে শেষ পেরেকটি ঢুকে দেন ফ্রান্সের ইমানুয়েল পেটিট। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের পর অতিরিক্ত সময়ে তৃতীয় মিনিটে ফ্রান্সের হয়ে তিন নম্বর গোলটি করেন তিনি। ফ্রান্স বিশ্বকাপ জিতে নেয় ৩-০ গোলে। দলের জন্য দুই গোল করে ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন ফ্রান্সের জিদান। আর নিজের অধিনায়কত্বের শেষ ম্যাচে খালি হাতে দল নিয়ে বাড়ি ফেরেন ব্রাজিল দলপতি দুঙ্গা।

একনজরে
স্বাগতিক: ফ্রান্স
চ্যাম্পিয়ন: ফ্রান্স
রানার্সআপ: ব্রাজিল
মোট ম্যাচ: ৬৪
মোট গোল: ১৭১
গোল গড়: ২.৬৭
সর্বোচ্চ গোলদাতা: দাভোর সুকের (ক্রোয়েশিয়া-৬ গোল)
সেরা খেলোয়াড়: জিনেদিন জিদান (ফ্রান্স)
মোট দর্শক: ২৭৮৪৬৮৭
ম্যাচ প্রতি দর্শক: ৪৩৫১২।

Stay on top of the latest sports news, including cricket and football, from around the world. Get comprehensive coverage of matches, tournaments, and leagues— along with expert analysis and commentary from our team of sports journalists. Whether you're a die-hard fan or a casual observer, you'll find everything you need to know about your favorite sports here.

Sports, cricket, and football are popular topics in the world of sports. Cricket is a bat-and-ball game played between two teams of eleven players and is particularly popular in South Asian countries. Football, also known as soccer, is a team sport played with a spherical ball between two teams of eleven players and is widely popular worldwide. Sports enthusiasts follow the latest news, matches, tournaments, and leagues in these sports and analyze and comment on the performances of players and teams.