লেন্সের চশমা পরে গোলের পর গোল

প্রতিটি বিশ্বকাপই কোনো না কোনো চমক রেখে যায়। সেটা মাঠে হোক কিংবা বাহিরে। ১৯৩৪ বিশ্বকাপ ছিল চমকে ঠাসা। সেবার সুইজারল্যান্ডের স্টাইকার লিওপোল্ড কিলহোলজ পুরু লেন্সের চশমা পরে মাঠে নেমে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন।

চশমায় বদলে যাওয়া খেলোয়াড়

ঘটনা হলো, এই সেন্টার ফরওয়ার্ড ছিলেন বইয়ের পোকা! টানা পড়তে পড়তে তার চোখের দৃষ্টি ক্ষীণ হয়ে গিয়েছিল। তবে চশমা লাগিয়ে মাঠে নেমে দুই ম্যাচে তিন গোল করে নিজের ক্ষমতার দারুণ প্রদর্শনী দেখান।

উরুগুয়েতে প্রথম আসরে ইতালি খেলতে আসেনি। সেই বদলা নিতে চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়ে চার বছর পর ১৯৩৪ সালে ইতালি গিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বকাপ খেলেনি। প্রথম বিশ্বকাপ খেলার জন্য দলই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। অথচ দ্বিতীয় আসরে খেলতে কড়াকাড়ি অবস্থার সৃষ্টি হয়! ফলে ফিফা বাধ্য হয়েই বাছাই পর্ব চালু করে এবং সিদ্ধান্ত নেয় ১৬ দেশ অংশগ্রহণ করবে। ৩২ দেশ থেকে ২৫টি বাছাই ম্যাচের মাধ্যমে আয়োজক ছাড়া টিকিট পায় অন্য ১৫ দেশ।

ল্যাটিন আমেরিকা ছেড়ে ইউরোপে পাড়ি জমানো এই বিশ্বকাপ অনেক ঘটনার সাক্ষী। যারমধ্যে নকআউট পদ্ধতির ব্যবহার, রিপ্লে ম্যাচ, অমীমাংসিত খেলা, সফল ও বিফল পেনাল্টি কিকের হিসেব রাখা, নির্ধারিত সময়ে ড্র থাকলে অতিরিক্ত সময়ে খেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রথম আফ্রিকান দেশ হিসেবে বিশ্বকাপ খেলতে আসে মিশর। স্পেন ও সুইডেনের কাছে হেরে প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নেয় ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা। জার্মানি হট ফেভারিট হিসেবে খেলতে এলেও শেষপর্যন্ত তৃতীয় স্থান নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়। যুক্তরাষ্ট্রকে ৭-১ গোলে বিধ্বস্ত করে মিশন শুরু করা ইতালি উপহার দেয় প্রচণ্ড রকমের ডিফেন্সিভ ফুটবল! শেষ হাসি হাসে তারাই! রোমে অনুষ্ঠিত ফাইনালে ওরসি ও শিয়াতিওর গোলে চেককে ২-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় ইতালি।

ইতালির তৎকালীন স্বৈরশাসক বেনীতো মুসোলিনির অবৈধ হস্তক্ষেপে বিশ্বকাপের গায়ে লাগে কলঙ্কের আচর! কথিত আছে, সেমিফাইনাল ও ফাইনাল ম্যাচের আগে সুইডিশ ও ইতালিয়ান রেফারিকে ডেকে নিয়ে মুশোলিনি নিজেদের পক্ষে সিদ্ধান্ত দিতে প্রভাবিত করেছিলেন। মাঠের খেলাতেও রেফারিদের পক্ষপাতিত্বের প্রতিফলন দেখা যায়।