নেপালি শ্রমিকের কণ্ঠে কাতার বিশ্বকাপের আগের দিনগুলো
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
এক যুগ আগে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতার যখন বিশ্বকাপ ফুটবলের ২২তম আসরের আয়োজক দেশ হওয়ার সুযোগ পায়, সে সময় শ্রমিক হিসেবে দেশটিতে তিন বছর কাজ করেছিলেন নেপালের হরি বাহাদুর শ্রেষ্ঠা। বিশ্বকাপ শুরু হলে জাপান-কোস্টারিকার ম্যাচ দেখার পর সেখানে কাজ করার অভিজ্ঞতা বার্তা সংস্থা এএনআইয়ের কাছে তুলে ধরেছেন তিনি।
২০১০ সালের শুরুর দিকে ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা ২২তম আসরের আয়োজক দেশ হিসেবে কাতারের নাম ঘোষণার পর হরি বাহাদুর সেখানে কাজ করতে যান। কিন্তু নিয়োগের সময় তার কোম্পানি যে সুযোগ-সুবিধার কথা বলেছিল, সেগুলো তারা পরিপূর্ণ করেনি।
এএনআইকে হরি বাহাদুর বলেন, “তারা মাসে ১ হাজার ২০০ কাতারি রিয়াল দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু কাজ শুরুর পর তারা মাত্র ৯০০ রিয়াল দেওয়া শুরু করে। আমরা প্রতিবাদ জানানোর চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু নিয়োগকর্তা কোম্পানি আমাদের ফেরত পাঠানোর হুমকি দেয়।”
কাতারের রাজধানী দোহার সিটি সেন্টারে তিনি পেইন্টারের কাজ করতেন। তার কাছে কেবল জাম্পস্যুট আর হেলমেট ছিল। সেখানে তিনি তিন বছর কাজ করেছেন। তার ফিরে আসারও প্রায় সাত-আট বছর হয়ে গেছে। আর কাতারে যেখানে থাকতেন সেখানে একটি কক্ষে তার সঙ্গে নেপালসহ অন্যান্য দেশের প্রবাসী শ্রমিকরাও ছিল।
হরি বাহাদুরের ভাষায়, নিয়োগকর্তা কোম্পানি তাদের পর্যাপ্ত থাকার জায়গা ও খাবারের ব্যবস্থা করেনি। ভোর ৩টায় ঘুম থেকে উঠতেন। কাজ শেষে ফিরতেন রাত ৮টায়। আর কর্মস্থলে শ্রমিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার নিত্য ঘটনা ছিল।
হরি বাহাদুরের মতো আরেক নেপালি রেজানও (ছদ্মনাম) কাতার থেকে ফেরেন এক সময়। তিনি বলেন, “কাতারে থাকা বেশ কঠিন ছিল। সেখানে আমরা কাজ করলেই বেতন পেতাম। কোনো শ্রমিক একদিনের জন্য অনুপস্থিত থাকলে তার তিন দিনের মজুরি কেটে নেওয়া হতো ।”
এ বছরের মার্চে ‘ভাইটাল সাইনস: ডেথস অব মাইগ্রান্টস ইন দ্য গালফ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ পায়। সেখানে বলা হয়, উপসাগরীয় অভিবাসী শ্রমিকরা তাপ, আর্দ্রতা, বায়ু দূষণ, অতিরিক্ত কাজ ও স্বাস্থ্যসহ বেশ কয়েকটি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। দুর্বল পেশাগত স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, মানসিক চাপ এবং উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকিতেও আছে। সেইসঙ্গে তীব্র তাপমাত্রায় দীর্ঘক্ষণ কায়িক শ্রমের ফলে তাদের ওপর চাপ তৈরি হয়, যা শরীরের ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতি বছর উপসাগরীয় ছয়টি দেশে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রায় ১০ হাজার অভিবাসী শ্রমিক প্রাণ হারায়। এসব শ্রমিকদের অর্ধেকের মৃত্যুর পেছনে কারণ কী, তার ব্যাখ্যা নেই।
অভিবাসী শ্রমিকদের মৃত্যুকে মোটামুটিভাবে সাতটি বিভাগে ভাগ করা হয়- কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট, হার্ট অ্যাটাক, প্রাকৃতিক কারণ, ট্রাফিক দুর্ঘটনা, আত্মহত্যা, কর্মক্ষেত্রে মৃত্যু এবং অন্যান্য কারণ।
২০০৮-২০০৯ এবং ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের মধ্যে এক দশকে নেপালের ৭ হাজার ২৯৬ জন পুরুষ এবং ১৭১ জন নারী অভিবাসী শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন। এদের ৪৭ শতাংশের মৃত্যুর পেছনে দায়ী হার্ট অ্যাটাক ও প্রাকৃতিক কারণ। সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায় ২০ শতাংশ নেপালি অভিবাসী আর আত্মহত্যা করেন ৯ শতাংশ অভিবাসী।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.