করোনা সুনামির কবলে চীন!

চীনে করোনার নতুন উপরূপ ‘বিএফ.৭’-এর থাবায় রেকর্ড হারে সংক্রমণ বাড়ছে! প্রতিদিন সেখানে নতুন করে ১০ লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন মৃত্যু হচ্ছে ৫ হাজার জনের। লন্ডনের একটি বিশ্লেষক সংস্থার গবেষণার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে ব্লুমবার্গ।

চলছে গণ পরীক্ষা

এয়ারফিনিটি লিমিটেড নামের লন্ডনের ওই বিশ্লেষক সংস্থার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, সামনের দিনগুলোতে চীনের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। আগামী মাসে দৈনিক সংক্রমণ বেড়ে দাঁড়াতে পারে ৩০ লাখের বেশি। দুই মাস পর এ সংখ্যা ৪০ লাখ অতিক্রম করতে পারে। এয়ারফিনিটি এ-ও জানিয়েছে, এ দফায় চীনে করোনার কারণে ১৩ লাখ থেকে ২১ লাখ লোকের মৃত্যু হতে পারে।

তবে চীন সরকারিভাবে যে তথ্য প্রকাশ করছে, তাতে দেখা গেছে, গত বুধবার দেশটিতে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছে মাত্র দুই হাজার ৯৬৬ জন। এ সময় ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা।

চীনে করোনায় মৃত্যুর হারও অনেক বেড়েছে

অথচ বিভিন্ন মাধ্যমে সংক্রমণ ও মৃত্যুর যেসব খবর ও ছবি আসছে, তাতে দেখা গেছে, চীনের কয়েকটি হাসপাতালে তিল ধারনের জায়গা নেই। শ্মশানেও লম্বা লাইন। দুই বছর আগে ইউরোপ ও আমেরিকায় যেমন চিত্র দেখা গিয়েছিল, এখন সে চিত্র দেখা যাচ্ছে চীনে।

করোনা মোকাবিলায় ২০১৯ সালের শেষ দিক থেকেই ‘জিরো কোভিড নীতি’ নিয়েছিল শি জিনপিং সরকার। তাতে সুফলও মিলেছিল বেশ। তবে কঠোর বিধিনিষেধে অতিষ্ঠ নাগরিকদের ক্ষোভের কাছে নতি স্বীকার করে এই মাসের শুরুর দিকেই পিছু হটে চীন সরকার। তখন থেকেই করোনার সংক্রমণ বিদ্যুৎ গতিতে বাড়ছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও এর প্রভাব পড়েছে। সেখানেও দ্রুত বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। সেখানে আবারও মাস্ক ফিরিয়ে আনার কথা চলছে।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের শেষের দিকে চীনেই প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কথা শোনা যায়। চীন সেটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেও পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে এ মহামারী ভাইরাস। এ পর্যন্ত এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে ৬৬ লাখ ৮০ হাজার ৬২০ জন মারা গেছে। মনে করা হচ্ছিল, ভ্যাকসিনের জোরে করোনা বিদায় নিয়েছে। কিন্তু যে দৌর্দণ্ড প্রতাপে আবারো চীনে আঘাত হানতে শুরু করেছে, তাতে বিশ্বজুড়ে ফের শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।