ফের খেরসন ছাড়ছেন শত শত মানুষ
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইউক্রেনের শহর খেরসনের রুশ হামলা জোরদার হয়েছে বলে জানা গেছে। এর ফলে সেখান থেকে হাজার হাজার লোক সরে যাচ্ছে। জাতিসংঘ বলছে, রুশ সৈন্যরা খেরসেন শত শত বেসামরিক লোককে হত্যা করেছে, যা যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে। খবর বিবিসি।
নিপ্রো নদীর পূর্ব তীর থেকে এখন খেরসনের ওপর হামলা চালাচ্ছে রুশ সেনাবাহিনী। ইউক্রেনে হামলা শুরুর প্রথম পর্যায়েই রাশিয়া ইউক্রেনের কৌশলগতভাবে বেশ গুরুত্বপূর্ণ এই শহরটি দখল করে নিয়েছিল। এটিকে রাশিয়া অধিকৃত ক্রিমিয়ার প্রবেশদ্বার বলেও বর্ণনা করা হয়।
গত ১১ নভেম্বর এই অঞ্চল ছেড়ে যায় রুশ বাহিনী। তবে ইউক্রেন দাবি করছিল, তাদের জোরদার হামলার পরিপ্রেক্ষিতেই রুশ বাহিনী এ অঞ্চল থেকে পিছু হটেছে। তবে অনেকে রাশিয়ার এ সরে যাওয়াকে ফাঁদ হিসেবে ধারণা করেছিল। তাদের সেই ধারণা সত্য হয়েছে।
রুশ সেনারা খেরসন ছেড়ে যাওয়ার পর সেখানকার বাসিন্দারা ফিরে এসেছিলেন। তবে গত কয়েকদিনের প্রচণ্ড রুশ হামলায় তারা আবারও শহর ছাড়ছেন। খেরসন ছাড়ার পর রুশ সেনারা নিপ্রো নদীর পূর্ব তীরে আশ্রয় নিয়েছিল। সেখান থেকেই তারা এখন খেরসনের ওপর হামলা চালচ্ছে। নদীটি এখন দুই পক্ষের যুদ্ধরেখা হিসেবে কাজ করছে।
খেরসনের বাসিন্দা এলেনা বলেন, আগে রুশ বাহিনী আমাদের ওপর দিনে সাত থেকে দশবার হামলা চালাতো। কিন্তু এখন তারা দিনে ৭০-৮০ বার মানে সারাদিনই হামলা চালাচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, তারা বেসামরিক বাড়ি, ঘর, স্থাপনায় হামলা চালাচ্ছে। গত মঙ্গলবার তারা একটি হাসপাতালে হামলা চালিয়েছিল। এতে কেউ আহত হয়নি, কিন্তু পুরো হাসপাতাল ও শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এলেনা বলেন, আমি ইউক্রেনকে ভালোবাসি, আমি আমার শহরকে ভালোবাসি। কিন্তু আমাদের এখান থেকে চলে যেতে হচ্ছে।
খেরসনে হামলা বাড়ায় সেখান থেকে লোকজন অন্যত্র সরে যাচ্ছেন। ইউক্রেন সরকার বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার সুবিধার্থে ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে। তবে চলমান আতঙ্কজনক অবস্থায় খেরসনের শত শত মানুষ অবশ্য নিজেদের ব্যবস্থাপনা খেরসন ছেড়ে পালাচ্ছেন। খেরসন থেকে বেরুনোর পথে গাড়ির দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে।
খেরসন ছেড়ে যাওয়া ইরিনা আন্তোনেনকো নামের আরেক নারী বলেন, রুশ বাহিনী তীব্র গোলাবর্ষণ করছে। আমরা আর নিতে পারছি না। আমরা এতদিন কষ্ট করেও সেখানে থেকে গিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম এক সময় থামবে। কিন্তু এখন হামলা আরও তীব্রতর হয়েছে। আমাদের পরের বাড়িটাতেই বোমা এসে পড়েছে। আমার বাবার বাড়িতেও বোমার আঘাত লেগেছে। এ অবস্থায় সেখান থেকে পালাতে বাধ্য হচ্ছি আমরা।
তিনি বলেন, খেরসনে এভাবে অব্যাহত হামলা চালিয়ে রাশিয়া কী অর্জন করতে চায়, তা আমাদের জানা নেই। এখানে তারা সাধারণ মর্টার শেল ছাড়াও নানা ধরনের ধ্বংসাত্মক বোমার ব্যবহার করছে। আমাদেরকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়ার জন্যই তারা এমন বোমা ব্যবহার করছে।
লারিসা রেভটোভা নামের একজন বাসিন্দা বলেন, প্রায় সময়ই আমাদের পানি বা বিদ্যুৎ থাকে না। মাঝে মাঝে অল্প সময়ের জন্য আসলেও হামলার কারণে আবার চলে যায়। আমাদের রাতগুলো এখন খুবই ভীতিকর।
খেরসনে এখনো হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ অবস্থান করছে। কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনায় সেখানকার স্থানীয় প্রশাসন এ সপ্তাহেই অন্তত দুবার তাদের শহর ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
এদিকে খেরসনে এ ধরনের নির্বিচার হামলার ব্যাপারে জাতিসংঘ বলছে, রুশ সৈন্যরা খেরসনে শত শত বেসামরিক লোকজনকে হত্যা করেছে, যা যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক বলেন, বেসামরিক লোক যারা রুশবাহিনীর জন্য কোনো হুমকি ছিল না, তাদেরকেও কোনো বিচার ছাড়াই হত্যা করা হয়েছে। জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলে উপস্থাপন করা রিপোর্টে এ ধরনের চার শতাধিক ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে। তবে সেখানে বলা হয়েছে, প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে আরও অনেক বেশি।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.