বিশ্বজুড়ে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার  ভক্তদের মধ্যে যে একটা লড়াই সবসময় লেগে থাকে, ম্যারাডোনা আর পেলে কিছু না বলেও যেন সেই দুই পক্ষের সেনাপতি হিসেবে হাজির থাকতেন। দুই বছর আগে দুই সেনাপতির একজন ডিয়েগো ম্যারাডোনা পরকালে পাড়ি জমান। গতরাতে চলে গেলেন আরেকজন, এডসন আরান্তেস দো নাসিমেস্তো পেলে। বিশ্বের কোথায় যেন একটা বড় শূন্যতা তৈরি হয়ে গেল।

pele and maradonaপেলে ও ম্যারাডোনা

কাতার বিশ্বকাপ চলাকালে গত নভেম্বরে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন পেলে। অন্ত্রের ক্যানসারে দীর্ঘদিন ধরে ভুগছিলেন তিনি। হাসপাতালে নেওয়ার পর তার শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হয়ে পড়লে তাকে রাখা হয়েছিল প্যালিয়েটিভ কেয়ার ইউনিটে। পরে অবস্থার সামান্য উন্নতি হলেও হাসপাতাল ছাড়ার মতো পরিস্থিতি হয়নি তার। বড়দিনও হাসপাতালেই কাটাতে হয় তাকে। নতুন বছর আসার আগেই পরপারে পাড়ি জমালেন ব্রাজিল ফুটবলের এই কিংবদন্তি।

পেলের নামের পাশে তিনটি বিশ্বকাপ জয়ের ইতিহাস, সেই সাথে অসংখ্য ট্রফি-সম্মাননা। অন্যদিকে একবারের বিশ্বকাপ জেতা ম্যারাডোনার সিভিটা এককভাবে প্রশংসায় ভরা ছিল না। ফুটবল মাঠের বিজয়ী সেনাপতি যেমন ছিলেন, তেমনি অসংখ্য কেলেঙ্কারির সাথেও নাম জড়িয়ে গিয়েছিল তার। তারপরও সব কিছু ঠেলে, যখনই বিশ্ব ফুটবলের আলোচনা উঠে এসেছে, তখনই উঠে এসেছে এই দুই কিংবদন্তির নাম। কোনো ইস্যুতে একজনের মন্তব্য পাওয়া গেলে, সাংবাদিকরা অপেক্ষায় থাকতেন অপরজনের প্রতিক্রিয়ার। এভাবে পেলে-ম্যারাডোনা যেন নিজেদের অজান্তেই এক সুতায় গাঁথা হয়ে গিয়েছিলেন।

pele celebrateপেলে

ফুটবলভক্তরা উভয়কে সম্মানের পাশাপাশি তাদের এই অবস্থানকে উপভোগ করতেন। দুই বছর আগে সেই উপভোগ্য যাত্রার একটি অংশ থেমে গিয়েছিল। এবার চলে গেলেন পেলেও।

মেসি-রোনালদোদের পাশাপাশি বিশ্বে এখন তরুণ, উদীয়মান খেলোয়াড়ের অভাব নেই। কিন্তু আরেকটি পেলে-ম্যারাডোনা জুটি গড়ে উঠতে অনেক সময় লাগবে। আদৌ হবে কি না তাই বা কে বলবে।

১৯৪০ সালের ২৩ অক্টোবর ব্রাজিলের মিনাস জেরাইসে জন্ম নেওয়া পেলের শৈশব কেটেছিল চরম দারিদ্র্যের মধ্য দিয়ে। কিন্তু বাবা স্থানীয় ফুটবল ক্লাবের কর্মকর্তা হওয়ায় রক্তে মিশে ছিল ফুটবলের নেশা। এক সময় তিনি নজরে পড়েন ওয়ালদেমার দে ব্রিটোর। তিনিই তাকে নিয়ে যান ব্রাজিলের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব স্যান্টোসে। পেলের ব্যাপারে ব্রিটো এতটাই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যে, স্যান্টোসের পদস্থ কর্তাদের তিনি সরাসরি বলে দেন, এই ছেলে একদিন বিশ্বসেরা ফুটবলার হবে।

১৯৫৬ সালের জুনে প্রথম পেশাদার চুক্তি সই করেন পেলে। পরের মওসুমেই লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা হন। পেশাদার ক্লাবে সই করার ১০ মাসের মধ্যে তিনি সুযোগ পেয়ে যান জাতীয় দলে। এরপর ১৯৫৮, ১৯৬২ ও ১৯৭০ সালের বিশ্বকাপজয়ী দলে ছিলেন পেলে। ১৯৫৮ ও ১৯৭০ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে গোল করেছিলেন তিনি। সব মিলিয়ে পেলেই একমাত্র ফুটবলার যার তিনটে বিশ্বকাপ জয়ের নজির রয়েছে।

রিয়াল মাদ্রিদ, জুভেন্টাস, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ইন্টার মিলানসহ একাধিক ক্লাব তার পেছনে ঘুরলেও তিনি জীবনের ১৮ বছরই কাটিয়ে দেন জীবনের প্রথম ক্লাব স্যান্টোসে। পরে কিছুদিন খেলেন আমেরিকার নিউ ইয়র্ক কসমসের হয়ে।

ফুটবল ছাড়ার পর তিনি ইউনেস্কোর ‘গুডউইল অ্যাম্বাসাডর’ হয়ে ফুটবলের প্রসারে বহু কাজ করেছেন। রাজনীতিতেও একসময় সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি। একসময় দেশের ক্রীড়ামন্ত্রীও হয়েছিলেন।

পেলে শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন বহু বছর ধরে। ২০১৮ সালের বিশ্বকাপে শারীরিক অসুস্থতার কারণে হাজির থাকতে পারেননি। কাতার বিশ্বকাপ তো কাটিয়ে দিলেন হাসপাতালেই। শেষ পর্যন্ত সেই হাসপাতাল থেকে আর বাড়ি ফেরা হলো না। চলে গেলেন অনন্তের পথে।

Stay on top of the latest sports news, including cricket and football, from around the world. Get comprehensive coverage of matches, tournaments, and leagues— along with expert analysis and commentary from our team of sports journalists. Whether you're a die-hard fan or a casual observer, you'll find everything you need to know about your favorite sports here.

Sports, cricket, and football are popular topics in the world of sports. Cricket is a bat-and-ball game played between two teams of eleven players and is particularly popular in South Asian countries. Football, also known as soccer, is a team sport played with a spherical ball between two teams of eleven players and is widely popular worldwide. Sports enthusiasts follow the latest news, matches, tournaments, and leagues in these sports and analyze and comment on the performances of players and teams.