বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে গণহারে ঋণ নিচ্ছে সরকার!

চরম তারল্য সংকটের মধ্যে রয়েছে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। এ অবস্থায় এসব ব্যাংকগুলো থেকে কোনো সহায়তা পাচ্ছে না সরকার। তাই ঋণ নিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে। এই ঋণের পরিমাণ অনেক বেশি। খরচ মেটাতে গণহারে এসব ঋণ নিচ্ছে সরকার। খবর ডেইলি স্টার।

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে গণহারে ঋণ নিচ্ছে সরকার

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এভাবে ঋণ নিতে থাকলে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়, ২০২২ সালের ১ জুলাই থেকে ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৪৫ হাজার ৫৭ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার। ২০২১ সালের একই সময় ঋণ নিয়েছিল ৩১ হাজার ৪০৩ কোটি টাকা।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সরকার ঋণ নিচ্ছে তার মানে হলো, বাজারে নতুন নোট ছাড়া হচ্ছে। এই প্রক্রিয়া মূল্যস্ফীতির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।

তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে কোনো অর্থ বাজারে গেলে তা পাঁচগুণ পর্যন্ত বাড়তে পারে। অর্থনীতির ভাষায় এটাকে বলে ‘মানি মাল্টিপ্লায়ার’। তাই সরকার যে টাকা ইতোমধ্যে ঋণ নিয়েছে তা বেড়ে গিয়ে ২ লাখ ২৫ হাজার ২৮৫ কোটি টাকায় দাঁড়াতে পারে। যদি এমনটা হয় তবে নতুন টাকা সরবরাহের বিপরীতে তৈরি হওয়া অতিরিক্ত অর্থ পণ্যের চাহিদা বাড়াবে। সাথে সাথে পণ্যের দামও বাড়বে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বলছে, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের মূদ্রাস্ফীতি ছিল ৮ দশমিক ৭১ শতাংশ। নভেম্বরে ছিল ৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ। আগস্টে ছিল ৯ দশমিক ৫২ শতাংশ, যা ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

২০২২-২০২৩ অর্থবছরে এখন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কোটি ডলার সরবরাহ করেছে অর্থনীতিতে। এর আগের অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার।

এদিকে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার বিষয়ে সরকারের সতর্ক থাকা উচিত। কারণ এই ঋণের ফলে মূল্যস্ফীতি আরও বেড়ে যেতে পারে।