নিহাদ, হার না মানা এক যোদ্ধা

বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলার সুবাদে মোস্তাফিজুর রহমান, লিটন কুমার দাস, মেহেদি হাসান মিরাজ, জাকির হাসানরা এদেশের সব ক্রিকেট বোদ্ধাদের কাছে বেশ পরিচিত। এদের সাথে ২০১৪ সালের যুব বিশ্বকাপ খেলেছেন নিহাদুজ্জামান। হয়তো নিহাদও বন্ধুদের মতো নিজেকে মেলে ধরতে পারতেন। জড়াতে পারতেন লাল সবুজ জার্সি।

উইকেট পাওয়ার পর সতীর্থদের সাথে বাঁহাতি স্পিনারের উদযাপন

তবে একাধিক অপ্রত্যাশিত ঘটনার কারণে সেটা সম্ভব হয়নি নিহাদের জন্য। উঠতি ক্যারিয়ারে ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো বড় ধরনের ধাক্কা খান রাজশাহীর এই স্লো লেফট আর্ম অর্থোডক্স স্পিনার। সেবার সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত হন। অল্পের জন্য মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে ফেরা এই ক্রিকেটারকে নিতে হয়েছে ১২টি সেলাই।

সে ধাক্কা সামলে ক্রিকেটে মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টায় ছিলেন নিহাদ। তবে আরও একবার ভাগ্যের কাছে হেরে যান। ২০১৭ সালে বল লেগে হাত ভেঙে যাওয়ায় ফের বাইশ গজ থেকে দূরে সরে যান এই বোলার। এই ধাক্কা সামলে দুই বছর পর ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তন হয় তার। এজন্য কি করেননি নিহাদ। বোলিং অ্যাকশন বদলেছেন, রাজশাহী বাংলা ট্র্যাক ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে নিয়মিত ঘাম ঝরিয়েছেন।

দারুণ ফর্মে আছেন নিহাদ

চলমান বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ, বিপিএলে এর সুফলও পাচ্ছেন নিহাদ। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে করছেন দুর্দান্ত বোলিং। টুর্নামেন্ট শুরুর ঠিক আগ মুহূর্তে তাকে দলে ভিড়িয়েছিল বন্দর নগরীর ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। সে সুযোগের শতভাগ ব্যবহার করে আলোচনায় এসেছেন প্রতিভাবান স্পিনার।

চট্টগ্রামের হয়ে এখন পর্যন্ত পাঁচ ম্যাচ খেলে ৮ উইকেট শিকার করেছেন নিহাদ। সবশেষ ম্যাচে গতকাল ফরচুন বরিশালের কাছে তিন উইকেটে হেরেছে তার দল চট্টগ্রাম। দলের পরাজয়ের দিনে বল হাতে দারুণ সফল ছিলেন নিহাদ। ১৭ রানের বিনিময়ে প্যাভিলিয়নে ফিরিয়েছেন সাকিব আল হাসান, ইফতিখার আহমেদ, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, চতুরঙ্গ ডি সিলভাকে। তবে দলের পরাজয়ে ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতা হয়নি তার।

নিজের দারুণ বোলিংয়ের পেছনের গল্প শোনাতে গিয়ে নিহাদ বলেন, ‘বোলিং ভালো হচ্ছে। নিজে নিজে পরিকল্পনা করেই বোলিং করেছি। কীভাবে কোন অবস্থায় বল করতে হবে এসব নিয়ে ভেবেছি। ভেজা বলেও অনুশীলন করেছি। যে চেষ্টা ছিল সেটা কাজে দিচ্ছে।’

তারকা ক্রিকেটারদের উইকেট পেয়ে বেজায় খুশি নিহাদ, ‘সাকিব ভাই খুব ভালো ফর্মে আছে। ইফতিখারও ভালো ব্যাট করছিল। এই উইকেট দুইটা নেওয়ার ইচ্ছা ছিল আমার। শেষ পর্যন্ত সেটা পেরেছি। তবে সবচেয়ে প্রিয় ছিল সাকিব ভাইয়ের উইকেট।’

বিপিএলে এই ফর্ম ধরে রেখে লাইম লাইটের আলোয় আসতে চান নিহাদ, ‘আমার ফেরার জন্য বিপিএল খুব ভালো প্ল্যাটফর্ম। শেষ দুটি বিপিএল খেলতে পারিনি। তাই আমার মনে হয় এটা অনেক বড় একটা সুযোগ।’