আপনি পড়ছেন

দুই দেশে (তুরস্ক এবং সিরিয়া) ভূমিকম্পে হৃদয়বিদারক দৃশ্য তৈরি হয়েছে। এই ভূমিকম্প দুই দেশের মানুষসহ বিশ্বের সব ধর্মের মানুষকে এক সুতোয় গেঁথে ফেলেছে। ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবপক্ষ মানবতার পাশে দাঁড়িয়েছে। তবে এর অন্তরালে দুই প্রেসিডেন্ট যে ভিন্ন হৃদয়ের তা ধরা পড়েছে। একজন উদ্ধারকারীদের সঙ্গে থেকে কেঁদেছেন, সমবেদনা প্রকাশ করেছেন, উদ্ধার শিশুদের জড়িয়ে ধরেছেন।

erdogan and basharযৌথ সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান

অপরদিকে আরেকজন প্রেসিডেন্ট ভূমিকম্পের চারদিন পর বিলাসবহুল প্রাসাদ থেকে নেমে হাসপাতালে আহতদের সঙ্গে ছবি তুলেছেন। বিদেশি ত্রাণের খবর পেয়ে হেসেছেন, খুশি হয়েছেন। তারা হলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ও সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ। বিষয়টি মিডল ইস্ট মনিটরে এক নিবন্ধে তুলে ধরেছেন ড. আমিরা আবো এল-ফেতুহ।

নিবন্ধে বলা হয়, এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, যাদের বিবেক আছে বা যাদের মধ্যে মানবতার অণুটুকুও আছে, ভূমিকম্পের মর্মান্তিক পরিণতিতে তাদের হৃদয় ভেঙে গেছে। দুই দেশের হাজার হাজার মানুষ নিহত ও আহত হয়েছে, শহরের ভবনগুলো ধ্বংস হয়েছে। ভূমিকম্পে তুর্কি-সিরীয় রক্ত মিশে একাকার হয়ে গেছে। হাতে হাত, কাধেঁ কাঁধ মিলিয়ে উদ্ধার তৎপরতা চলছে। এক কাতারে থেকে প্রাণ ঢেলে দোয়া করা হচ্ছে সৃষ্টিকর্তার কাছে।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান এবং তার স্ত্রী ভূমিকম্পের পরের দিন কাহরামানমারাস শহর পরিদর্শন করেন। তারা উদ্ধার কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জনগণকে আশ্বস্ত করেছেন। এরদোয়ান ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন এবং তাদের সঙ্গে কাঁদতে কাঁদতে রাস্তায় হাঁটেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, এক বছরের মধ্যে ধ্বংসপ্রাপ্ত অবকাঠামোর পুনর্নির্মাণ করবেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের উপযুক্ত আবাসনের ব্যবস্থা করবেন।

তুর্কি নেতা আরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, কঠিন সময় মোকাবেলায় নাগরিকদের অর্থ সহায়তাও দেওয়া হবে। সাত দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণার পাশাপাশি তিন মাসের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন তিনি।

অপরদিকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ ও তার স্ত্রী ভূমিকম্পের চার দিন পর আলেপ্পোতে যান। আফটারশক শেষ হওয়ার আশঙ্কা ম্লান হওয়ার পরই তারা সেখানে যান। তারা ছবির জন্য পোজ দিয়েছেন, ক্যামেরার সামনে হেসেছেন।

আসাদ নিঃসন্দেহে আরব এবং অন্যান্য নেতাদের কাছ থেকে তাদের সমবেদনা পেয়েছেন। সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ফোন পেয়ে খুশিও হয়েছেন। নিষেধাজ্ঞাগুলো তার সরকারের সিনিয়র কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ছিল। তাদের বিরুদ্ধে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার অবসানের অর্থ মানবিক সাহায্য সিরিয়ায় প্রবাহিত হবে, উচ্চ স্তরের লুটপাট চলবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায়ই এসব অভিযোগ তোলা হয় সিরিয়ার সরকারের বিরুদ্ধে।

বাশার ২০১১ সাল থেকে আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক মিত্রদের সহায়তা নিয়ে নিরীহ সাধারণ জনগণের ওপর হামলা চালিয়ে আসছেন। সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে জারি করা তার সরকারের অবরোধ চলছে দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে। এতে ৫ মিলিয়ন সিরীয় নাগিরকের জীবনে নেমে এসেছে এক ভয়াবহ অবস্থা। তাদের বেশিরভাগই বাস্তুচ্যুত এবং বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। যদিও কিছু আরব দেশ আসাদ সরকারকে সরাসরি সমর্থন দিয়ে আসছে।

নিবন্ধে আসাদকে খুনি হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়, আসাদ ভূমিকম্পে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার সুযোগকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করতে চাচ্ছেন। তার শাসনের ওপর নিষেধাজ্ঞার অবসানের আহ্বান আরও জোরদার হচ্ছে। যদি এটি ঘটে তাহলে বিরোধী দলের নেতাদের ওপর আরও নির্যাতনের খড়গ নেমে আসবে। আসাদ হয়তো তখন কুটিল হাসি হাসবেন।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.