মোতির কীর্তি, ক্যারিবীয়দের সিরিজ জয়

আগের ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের চোখে চোখ রেখে লড়াই করেছিল জিম্বাবুয়ে। রোমাঞ্চকর টেস্টে শেষ পর্যন্ত ড্র করে তারা। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচেই স্বাগতিকদের কঠিন বাস্তবতা বুঝিয়ে দিলো ক্যারিবীয়রা। মঙ্গলবার তৃতীয় দিন জিম্বাবুয়েকে ইনিংস ও চার রানে হারিয়ে দুই ম্যাচের সিরিজ ১-০ ব্যবধানে জিতে নিল সফরকারীরা।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম স্পিনার হিসেবে এক টেস্টে ১৩ উইকেট নিয়েছেন গুডাকেশ মোতি

ঘরের মাঠ বুলাওয়ের কুইন্স স্পোর্টস ক্লাব গ্রাউন্ডে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ইনিংসে ১১৫ রানে গুটিয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। জবাব দিতে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ইনিংস থামে ২৯২ রানে। ক্যারিবীয়দের দ্বিতীয়বার ব্যাটিংয়ে নামাতে জিম্বাবুইয়ানদের দরকার ছিল ১৭৭ রান। কিন্তু স্বাগতিকরা ফিরতি ইনিংসে ১৭৩ রানে অলআউট হয়ে যায়।

ফিরতিবার ব্যাটিংয়ে নামা জিম্বাবুয়ের পক্ষে দুই অংক ছুঁতে পারলেন কেবল তিনজন। প্রায় ওয়ানডে মেজাজে ব্যাটিং করা ওপেনার ইন্নোসেন্ট কায়া ফেরেন ৫৭ বলে ৪৩ রান করে। ১০৫ বলে অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিনের ব্যাট থেকে আসে ৭৩ রান। শেষ দিকে ৩০ বলে ১৬ রানে ফেরেন ব্রেন্ডন মাভুতা। বাকি আট ব্যাটার মিলে করেন ২৩ রান!

ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুর্দান্ত জয়ের নায়ক গুডাকেশ মোতি। দুই ইনিংসেই জিম্বাবুয়েকে ধসিয়ে দিয়েছেন বাঁহাতি এই স্পিনার। তৃতীয় টেস্ট খেলতে নেমে মোতি পেলেন ১৩ উইকেট! প্রথম ইনিংসে সাত উইকেট নিয়েছেন মোতি; ফিরতি ইনিংসে একটি কম। অবধারিতভাবেই ম্যাচ সেরা হয়েছেন তিনি। দুই ম্যাচে ১৯ উইকেট নিয়ে মোতি পেয়েছেন সিরিজ সেরার পুরস্কারও!

আগুনঝরা বোলিংয়ে দুর্দান্ত একটা রেকর্ডও গড়েছেন মোতি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে স্পিনারদের মধ্যে এক টেস্টে সর্বোচ্চ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়লেন তিনি। ১৯৫০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১১ উইকেট পেয়েছিলেন সনি রামদিন। ৭৩ বছর পর গুঁড়িয়ে গেল তার রেকর্ডটা। পূর্বসুরিকে টপকে গেলেন ২৭ বছর বয়সী মোতি।

একই সঙ্গে এই স্পিনার ছুঁয়ে ফেললেন দুই পেসার কোর্টনি ওয়ালশ ও শ্যানন গ্যাব্রিয়েলকে। দুজনই টেস্টে ১৩ উইকেট নিয়েছিলেন। আর এক উইকেট নিতে পারলে তাদের ছাড়িয়ে নতুন ইতিহাস গড়তে পারতেন মোতি; ভাগ বসাতে পারতেন মাইকেল হোল্ডিংয়ের রেকর্ডে। ১৯৭৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৪ উইকেট পেয়েছিলেন এই কিংবদন্তি পেসার।

বিস্ময়কর হচ্ছে, টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাচে উইকেটই পাননি মোতি! গত বছরের জুনে অভিষেক টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৬ ওভার বোলিং করে উইকেটশূন্য ছিলেন তিনি। ঘরের মাঠে অভিষেকের চাপটা হয়তো নিতে পারেননি মোতি। সেই তিনিই কিনা জিম্বাবুয়ে গিয়ে গা ঝাড়া দিয়ে উঠলেন; গড়লেন দারুণ একটা ইতিহাস!

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জিম্বাবুয়ে: ১১৫ ও ১৭৩।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২৯২।
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংস ও ৪ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: গুডাকেশ মোতি (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)।
সিরিজ সেরা: গুডাকেশ মোতি (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)।