দুর্দান্ত সাকিব: বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হারাল বাংলাদেশ

সিরিজ আগেই হাতছাড়া হয়ে গেছে। অবশেষে তৃতীয় ম্যাচে এসে জ্বলে উঠেছে বাংলাদেশ। আজ চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে ৫০ রানে হারিয়ে দিয়েছে টাইগাররা। দুর্দান্ত এই জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ধবলধোলাই এড়িয়েছে স্বাগতিক শিবির (২-১)।

ইংল্যান্ডের আরেকটি উইকেটের পতন। উল্লাসে মেতে ওঠে বাংলাদেশ

বাংলাদেশের জয়ের নায়ক সাকিব আল হাসান। তার অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সের ওপর দাঁড়িয়ে ইংলিশদের বিপক্ষে দাপুটে জয় পেয়েছে টাইগাররা। ব্যাট হাতে ৭৫ রানের ইনিংস খেলার পর বল হাতেও চার উইকেট নিয়েছেন সাকিব। অবধারিতভাবেই ম্যাচ সেরার পুরস্কার উঠেছে তার হাতেই। সিরিজ সেরা হয়েছেন ইংলিশ অলরাউন্ডার আদিল রশিদ।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের সাত বল বাকি থাকতে ২৪৬ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। জবাবে দিতে নামা ইংল্যান্ডের ইনিংসের ৪৪তম ওভারে ১৯৬ রানে অলআউট করে দেয় টাইগাররা। এই সিরিজে এই প্রথম ইংল্যান্ডকে অলআউট করতে পারল বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ লড়াকু পুঁজি পেয়েছে তিন ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম ও অলরাউন্ডার সাকিবের ফিফটির ওপর দাঁড়িয়ে। তবে ম্যাচের শুরুটা হয়েছে বিপর্যয় দিয়ে। দলীয় ১৭ রানের মধ্যে সাজঘরে ফিরে গেছেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। দ্বিতীয়জন খুলতে পারেননি রানের চাকা।

আগের ম্যাচেও লিটন ফিরেছেন শূন্য রানে। ছয় বলে ১১ রানে বিদায় নেন অধিনায়ক ও অপর ওপেনার তামিম। পরে শান্তকে নিয়ে জোড়া ধাক্কা সামাল দেন মুশফিক। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৯৮ রানের জুটি ভাঙে শান্তর বিদায়ে। ঠিক সময়ে দৌড় শুরু করলে হয়তো বাঁহাতি ওপেনার রান আউটের হাত থেকে বাঁচতে পারতেন।

৭১ বলে ৫৩ রানে আউট হন শান্ত। দলীয় সংগ্রহ দেড় শ’ পার হতে সাজঘরের পথ ধরেন মুশিও। ৯৩ বলে ৭০ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন তিনি। এর মিডল ও লোয়ার অর্ডার ব্যাটারদের নিয়ে লড়াই শুরু করেন সাকিব। এক প্রান্ত আগলে রেখে ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন বাঁহাতি অলরাউন্ডার। ৭১ বলে ৭৫ রানে আউট হন সাকিব। এ ছাড়া আফিফ হোসেন ধ্রুব ২৪ বলে ১৫ রান করেন। শেষ ৩৪ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে অলআউট হয়ে যায়।

বাংলাদেশকে ইংল্যান্ড অলআউট করেছেন সম্মিলিত বোলিং প্রচেষ্টায়। সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন পেসার জফরা আর্চার। দুটি করে শিকার স্যাম কারান ও আদিল রশিদের। খালি হাতে ফেরেননি ক্রিস ওকস, অভিষিক্ত রেহান আহমেদও। ব্যাটাররা বড় সংগ্রহ এনে দিতে পারেননি। তবে সেই ঘাটতি পুষিয়ে দিয়েছেন বোলাররা।

তাদের নেতৃত্ব দিয়েছে সাকিব। তবে ইংল্যান্ডের শুরুটা ছিল ভয় পাইয়ে দেওয়ার মতো। উদ্বোধনী জুটিতে দলীয় ফিফটি পার করেন জেসন রয় ও ফিলপ সল্ট। ৫৫ রানের মধ্যে তিন ব্যাটারকে ফিরিয়ে লড়াইয়ে ফেরে বাংলাদেশ। ব্রেক থ্রু এনে দেন সাকিব। রয় ১৯ এবং সল্ট ৩৫ রানে আউট হন।

এরপর মিডল অর্ডার হাল ধরে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং অর্ডারের। কিন্তু টাইগাদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে তা মুখ থুবড়ে পড়ে। বড় ইনিংসের সম্ভাবনা জাগিয়েও পারেননি ইংল্যান্ডের কোনো ব্যাটার। জেমস ভিঞ্চি ৩৮, স্যাম কারান ২৩, অধিনায়ক জস বাটলার ২৬ এবং ক্রিস ওকস ৩৪ রানে আউট হন। ৩৫ রানে চার উইকেট নিয়েছেন সাকিব। দুটি করে শিকার ইবাদত হোসেন ও তাইজুল ইসলামের। অন্য দুটি উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদি হাসান মিরাজ।