ঐতিহাসিক সিরিজ জয়, বাংলাওয়াশের মুখে ইংলিশরা

একদিনের ক্রিকেটে বিশ্ব মানচিত্রে ভালোভাবেই নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে বাংলাদেশ। এই সংস্করণে যে কোনো দলকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে সক্ষম টাইগাররা। খুব স্বাভাবিকভাবেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের আশা ছিল। আশভঙ্গ হয়েছে। কিন্তু টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশ যেটা করল সেটা ছিল ভাবনারও বাইরে। কুড়ি ওভারের ক্রিকেট সিরিজে ইংলিশদের হারিয়ে দিলো টাইগাররা!

অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ

চট্টগ্রামে শেষ ওয়ানডে জয়ের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরুর ম্যাচেও ইংল্যান্ডকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। সেই ফর্মটা ঢাকাতেও টেনে এনেছে টাইগাররা। আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হারিয়েছেন সাকিব আল হাসানরা। ইংলিশদের বিপক্ষে বাংলাদেশ জিতেছে চার উইকেট। এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে নিশ্চিত করে ফেলল টাইগাররা। ক্রিকেটে তিন সংস্করণ মিলিয়ে এই প্রথম ইংলিশদের সিরিজ হারাল বাংলাদেশ।

টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামা ইংল্যান্ডকে ১১৭ রানে গুঁড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। এই রান তাড়া করতে গিয়ে সহজ জয়ের পথেই ছিল টাইগাররা। শেষ দিকে কিছুটা ছন্দপতন হলেও তাতে জয়ের পথ আটকায়নি। মামুলি লক্ষ্য সাকিব অ্যান্ড কোং (১২০/৬) পেরিয়ে যায় সাত বল হাতে রেখেই। এই হারে বাংলাওয়াশের মুখে পড়ল ইংল্যান্ড। আগামী মঙ্গলবার একই ভেন্যুতে মান বাঁচানোর লড়াইয়ে নামবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

রান তাড়ায় বাংলাদেশের শুরুটা ভালো হয়নি। ২৭ রানের মধ্যে সাজঘরে ফিরে যান দুই ওপেনার লিটন দাস ও রনি তালুকদার। দুজনই ফেরেন সমান নয় রানে। পরে দলের হাল ধরেন নাজমুল হোসেন শান্ত। মনোযোগ দেন ইনিংস মেরামতে। দুটিতে তৌহিদ হৃদয় ও মেহেদি হাসান মিরাজকে নিয়ে এগোতে থাকেন তিনি। মসৃণ হয়ে যায় জয়ের পথ। শেষ দিকে গিয়ে অবশ্য হোঁচট খেতে হয় দলকে।

৯৭ রান থেকে ১০৫ রানে পৌঁছাতে বাংলাদেশ হারিয়ে ফেলে তিন উইকেট। পরে শান্তর ব্যাটে ভয়টা কেটে গেছে। ৪৭ বলে ৪৬ রানে অপরাজিত থাকেন ফর্মে থাকা বাঁহাতি ব্যাটার। এ ছাড়া হৃদয় ১৮ বলে ১৭ ও মিরাজ ১৬ বলে ২০ রান করেন। দ্বিতীয়জন বল হাতেও আলো ছড়িয়েছেন। চার ওভারে ১২ রানে চার উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডের মিডল অর্ডার ধসিয়ে দিয়েছেন মিরাজ।

অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সে প্রত্যাশিতভাবেই ম্যাচ সেরা হয়েছেন তিনি। চার ওভারে ১৩ রানে তিন উইকেট নিয়েছেন জফরা আর্চার। কিন্তু বিফলেই গেল তার বোলিং দ্যুতি। ইংলিশদের হারের আয়োজনটা অবশ্য করে দিয়েছেন টাইগাররা বোলাররাই। মন্থর উইকেটে অতিথিদের ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান সাকিব। ব্যাট হাতে ইংলিশদের শুরুটা একেবারে মন্দ ছিল না। এক উইকেটে দলীয় ফিফটি ছুঁয়েছিল তারা। এরপরই সফরকারীদের চেপে ধরেন বাংলাদেশের বোলাররা।

বোলিংয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন মিরাজ। ধস নামান ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনে। একদিকে উইকেটের রাশ টেনে ধরার চ্যালেঞ্জ অন্যদিকে দ্রুত গতিতে রান তোলার তাড়না। এই দুই চাপেই শেষ হয়ে গেছে তারা। শেষ ওভারেই তাদের পতন হয়েছে তিন উইকেটের। এর কেবল একটিই নিয়েছেন পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। বাকি দুটি হয়েছে রান আউট।

‘কাটার মাস্টারে’র মতো একটি করে উইকেট নিয়েছেন তাসকিন আহমেদ, সাকিব ও হাসান মাহমুদ। তবে ইংলিশদের অলআউট করতে আসল ভূমিকাটা রেখেছেন মিরাজই। বল হাতে মিতব্যয়ি ছিলেন মোস্তাফিজও। ইংল্যান্ডের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৮ বলে ২৮ রান করেছেন বেন ডাকেট। ১৯ বলে ২৫ রান এসেছে ওপেনার ফিলিপ সল্টের ব্যাট থেকে। এ ছাড়া মইন আলি ১৭ বলে ১৫, স্যাম কারান ১৬ বলে ১২ এবং রেহান আহমেদ ১১ বলে ১১ রানে আউট হয়েছেন।