বিপর্যস্ত আয়ারল্যান্ড: টাইগারদের নতুন ইতিহাস

ম্যাচটার ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে গেছে বাংলাদেশের ইনিংস শেষেই। ওয়ানডে ক্রিকেটে নিজেদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের পাহাড় গড়েছে টাইগাররা। সেই রানপাহাড়ে চাপা পড়ল সফরকারী আয়ারল্যান্ড। আজ সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম ওয়ানডেতে আইরিশদের রেকর্ড ১৮৩ রানে হারিয়েছে তামিম ইকবালের দল।

আয়ারল্যান্ডকে রেকর্ড ১৮৩ রানে হারিয়ে নিজেদের ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ

এই সংস্করণে এটাই সবচেয়ে বড় বাংলাদেশের। এর আগে টাইগারদের সবচেয়ে বড় জয়টি ছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ২০২০ সালে এই সিলেটেই আফ্রিকান দলটিকে ১৬৯ রানে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। ২০১৮ সালে মিরপুরে শ্রীলঙ্কাকে ১৬৩ রানে হারায় টাইগাররা। অবশেষে নিজেদের ছাড়িয়ে নতুন ইতিহাস গড়ল তারা।

টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে সাকিব আল হাসান ও তৌহিদ হৃদয় দৃঢ়তায় আট উইকেটে ৩৩৮ রানের পাহাড় গড়ে বাংলাদেশ। ওয়ানডে সংস্করণে এটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। এর আগে ২০১৯ বিশ্বকাপে ট্রেন্ট ব্রিজে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আট উইকেটে ৩৩৩ রান করেছিল বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের বড় রেকর্ড সংগ্রহের ভিত গড়ে দিয়েছেন সাকিব আল হাসান ও তৌহিদ হৃদয়

হিমালয়তুল্য রানের জবাব দিতে নেমে ৩১তম ওভারে ১৫৫ রানে গুটিয়ে যায় আয়ারল্যান্ড। রেকর্ড গড়া জয়ের ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পেয়েছেন অভিষিক্ত তৌহিদ হৃদয়। এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। আগামী সোমবার একই ভেন্যুতে দ্বিতীয় ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে।

রান তাড়ায় আয়ারল্যান্ডের শুরুটা অবশ্য ভালোই ছিল। উদ্বোধনী জুটিতে ৬০ রান যোগ করে সফরকারীরা। এই জুটি ভাঙতেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে আইরিশদের ব্যাটিং লাইন। স্টিফেন দোহেনি ৩৪ এবং পল স্টার্লিং ২২ রানে আউট হন। শুরু হয় সাজঘরে আসা-যাওয়ার মিছিল।

একপ্রান্ত আগলে রেখে জর্জ ডকরেল হারের ব্যবধান কমাতে লড়াই চালিয়ে যান। দলীয় সর্বোচ্চ ৪৫ রান করেন তিনি। এ ছাড়া কার্টিস ক্যাম্ফার ১৬ ও মার্ক অ্যাডাইর ১৩ রান করেন। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ইবাদত হোসেন নিয়েছেন চার উইকেট। তিনটি শিকার নাসুম আহমেদের। দুই উইকেট পেয়েছেন তাককিন আহমেদ। খালি হাতে ফেরেননি সাকিবও।

এর আগে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের শুরুটা ভালো হয়নি। নয় বলে তিন রান করে সাজঘরে ফিরে যান অধিনায়ক তামিম ইকবাল। আরেক ওপেনার লিটন দাস আউট হন দলীয় ফিফটি ছোঁয়ার আগেই। ৩১ বলে ২৬ রান করেন লিটন। তিনে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত ৩৪ বলে ফেরেন ২৫ রানে। এরপরই সাকিব-হৃদয়ের প্রতিরোধ।

চতুর্থ উইকেট জুটিতে এ যুগল যোগ করেন ১৩৫ রান। বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় বাংলাদেশ। জুটি ভাঙে সাকিবের বিদায়ে। ৮৯ বলে নয়টি চারে ৯৩ রানে থামে সাকিব ঝড়। একটু পর তার মতো শতক হাতছাড়া করলেন হৃদয়। অভিষেকে তৃতীয় বাংলাদেশি হিসেবি ফিফটি করা এই তরুণ ৮৫ বলে আটটি চার ও দুই ছয়ে ৯২ রানে সাকিবের পথেই হাঁটলেন।

ততক্ষণে শুরু হয়ে গেছে মুশফিকুর রহিমের তাণ্ডব। ২৬ বলে তিনটি করে চার-ছক্কায় ৪৪ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। শেষ দিকে ইয়াসির আলি ১৭ রানে আউট হন। তাসকিন আহমেদ ও নাসুম আহমেদ সমান ১১ রান তোলেন। দ্বিতীয়জন অবশ্য অপরাজিত ছিলেন। আয়ারল্যান্ডের পক্ষে সর্বোচ্চ চার উইকেট নেন গ্রাহাম হুম। একটি করে শিকার মার্ক অ্যাডাইর, অ্যান্ডি ম্যাকব্রিন ও কার্টিস ক্যাম্ফারের।