আপনি পড়ছেন

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রোজা শুরু হয়ে গেছে। বাংলাদেশে রোজা পালন শুরু হবে আগামীকাল থেকে। ইসলামের অন্যতম এই ফরজ পালনের বিষয়টি শিশুদের জন্য বাধ্য করা হয়নি শরিয়তে। তবে সময়মতো রোজায় অভ্যস্ত হওয়ার জন্য রোজা পালনে তাদের উৎসাহী করে তোলা উচিত।

ramadan of childশিশুদের রোজা

শরিয়তে সাবালকত্ব অর্জনের পর রোজা রাখতে বলা হয়েছে। তবে আমাদের দেশে অনেক শিশুই আরও কম বয়স থেকে রোজা রাখতে আগ্রহ দেখায়। ভোররাতের সেহরি, সন্ধ্যার ইফতারে তারা বেশ উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে অংশ নেয়। অভিভাবকরা তাদেরকে দিনের বেলায় খেতে বললেও অনেক শিশুই বড়দের মতো পুরো রোজা রাখতেই আগ্রহী। এক্ষেত্রে তার দিকে একটু বেশি নজর রাখতে অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

তারা বলেন, অপ্রাপ্তবয়স্করা রোজা রাখতে চাইলে তার সেহরি, ইফতার, রাতের খাবারে ইত্যাদিতে পুষ্টিমানের দিকে বেশি মনোযোগ দিতে হবে। তবে শিশু রোজা রেখে সারা দিন অভুক্ত থাকবে বলে সেহরি, ইফতারে তাকে জোর করে বেশি খাবার খাওয়ানো মোটেও ঠিক হবে না। কারণ এতে উল্টো ফল হতে পারে। বরং তার প্লেটে যেন স্বাস্থ্যকর ও সুষম খাবার থাকে সেদিকে মনোযোগ দিতে হবে।

children 1রোজা রাখা শিশুদের দিকে দিতে হবে বাড়তি নজর

রোজা রাখা অবস্থায় শিশুরা যাতে ভারী কোনো কাজ, রোদে অযথা ঘোরাঘুরি না করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ এসব কাজে শিশু খুব অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারে। বেশি ঘাম হওয়ার কারণে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। দিনের বেলায় তার প্রতি সতর্ক নজর রাখতে হবে। অবস্থা বেগতিক হওয়ার আগেই তাকে যেন খাইয়ে দেওয়া যায়, সে প্রস্তুতিও রাখতে হবে। যদি রোজা রেখে শিশু স্কুলে যায়, তাহলে তার সঙ্গে কিছু খাবার ও পানি দিয়ে দেওয়া উচিত। যাতে কোনো সমস্যা দেখা দিলে যেন সে খাবার খেয়ে নিতে পারে।

আমিরাতভিত্তিক প্রাইম হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ এবং নিওনাটোলজিস্ট ডা: শহিদ গওহর বলেন, সেহরি বা ইফতারের সময় বাচ্চাদের অতিরিক্ত খেতে বাধ্য করবেন না। এর ফলে বদহজম, ফোলাভাব এবং অস্বস্তি হতে পারে। তাদের খাবারে বেশি চিনিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন কারণ এটি অল্প পুষ্টি সরবরাহ করবে কিন্তু অনেক অপ্রয়োজনীয় ক্যালোরি দিয়ে শিশুকে অস্বস্তিতে ফেলবে।

ইসলামি শরিয়তে শিশুর জন্য রোজা বাধ্যতামূলক করা হয়নি। তাই শিশু রোজা রেখে কোনো সমস্যায় পড়ে গেলে তাকে এ ব্যাপারে বুঝিয়ে বলতে হবে। শুরুতেই সবগুলো রোজা না রেখে বরং তাকে সপ্তাহে একটি বা দুটি রোজা রাখার উৎসাহ দেওয়া যেতে পারে। এভাবে ধীরে ধীরে রোজা রাখার অভ্যাস তৈরি হয়ে গেলে বড় হয়ে আর রোজা রাখতে কষ্ট হবে না।

এ ব্যাপারে শহিদ গওহর আরও বলেন, শিশুদের রোজায় অভ্যস্ত করে গড়ে তুলতে তাদের প্রথম রোজাকে সবাই মিলে উদযাপন করুন এবং তাকে পুরস্কৃত করুন। তাহলে শিশুরা রোজার রাখার ব্যাপারে ইতিবাচক মেসেজ পাবে এবং রোজা রাখতে আগ্রহী হয়ে উঠবে।

ভারতীয় উপমহাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে মেয়েরা ১০ থেকে ১৪ বছর এবং ছেলেরা ১২ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক হয়। তাই সব মিলিয়ে, রোজা শুরু করার সর্বোত্তম বয়স হল ১০ থেকে ১২ বছরের মধ্যে।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর