এই বছরের শেষের দিকে ভারতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসর ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ২০২৩ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে দলগুলো প্রস্তুতি নিচ্ছে যে যার মতো করে। বাংলাদেশও সেখানে পিছিয়ে নেই। টাইগাররাও নিয়েছে বিস্তর পরিকল্পনা। এই ফরম্যাটের অধিনায়ক তামিম ইকবাল কদিন আগে বলেছিলেন বাংলাদেশ বিশ্বকাপকে গুরুত্ব দিচ্ছে।

sylhet stadiumসিলেট স্টেডিয়াম

তাই ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের মতো দলকে পেয়েও সিরিজ জেতার চেয়ে ভালো উইকেটে খেলার প্রবণতা বেশি দেখা গেছে। যেটা সচরাচর দেখা যায় না। বিদেশি কোনো দল আসলে মিরপুরে ঘূর্ণি উইকেট বানিয়ে ম্যাচ জেতার লক্ষ্য থাকে। এবার ব্যতিক্রম দেখা গেছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বেলায়। তাদেরকে ঘরের মাঠে বাংলাদেশ আতিথেয়তা দিয়েছে তামিমের ভাষ্যমতে ট্রু উইকেটেই।

কারণটাও পরিষ্কার, বিশ্বকাপে সাধারণত স্পোর্টিং উইকেটে খেলা হবে। তাই মিরপুরে ঘূর্ণি উইকেটে সেই প্রস্তুতিতে ঘাটটি থাকতে পারে। এজন্যই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডে মিরপুর থেকে সরিয়ে চট্টগ্রামে নেওয়া হয়। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ম্যাচটা জিতে হোয়াইট ওয়াশের লজ্জা এড়ায়। ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জেতে ইংল্যান্ড।

এরপর চট্টগ্রামে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি খেলে ঢাকায় আসে দুই দল। বাংলাদেশ তিনটি ম্যাচেই বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হারায়। এর আগে বড় দুটি দল অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডকে ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারিয়েছিল মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দল। যদিও সেই জয়ে একটা খচখচানি ছিল উইকেটের কারণে। এবার সেটা বলার সুযোগ নেই। বাংলাদেশ খেলেই জিতেছে প্রতিটি ম্যাচ।

সেই ধারাবাহিকতা রেখেই আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সাদা বলের ম্যাচগুলো মিরপুরে না রেখে সিলেটে এবং চট্টগ্রামে রাখা হয়েছে। ফলটাও হাতে-নাতে পেয়েছে বাংলাদেশ। এটা ঠিক যে, কিছুটা দুর্বল শক্তির আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জয়টাই স্বাভাবিক ছিল। তিন ম্যাচ সিরিজের একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। বাকি দুটিতে রেকর্ড করে জয় পায় বাংলাদেশ। পরিত্যক্ত হওয়া ম্যাচেও নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৩৪৯ রান করেছিল বাংলাদেশ। যদিও সিলেটের পিচে শুরুর ১০ থেকে ১৫ ওভার পর্যন্ত বোলাররা সুইং, গতি এবং বাউন্স পেয়েছেন। তা সত্ত্বেও বাংলাদেশের ব্যাটারা অনেক রান করেছেন। যেটা নিঃসন্দেহে ইতিবাচক দিক।

ওই সিরিজে সবচেয়ে দেখার বিষয় ছিল পেসারদের দশ উইকেট নেওয়াটা। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের পেসাররা ইনিংসে ১০ উইকেট নেওয়ার গৌরব অর্জন করে। এটা বিশ্বকাপকে সামনে রেখে স্বস্তি দেবে যে কোনো অধিনায়ককে। কারণ দুদিন আগেও পাকিস্তানের কিংবদন্তি ক্রিকেটার আকরাম খান বলেছেন, ভারতে যেই দলের পেস বোলিং অ্যাটাক ভালো হবে তারাই বিশ্বকাপ জিতবে।

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডের পর বাংলাদেশের বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড সিলেটের পিচ নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিলেন। সিলেটের পিচকে নিজ দেশ দক্ষিণ আফ্রিকার পিচের সঙ্গে তুলনা করেন তিনি। ফাস্ট উইকেটে তাসকিন-হাসান-ইবাদতরা যত খেলবে তাদের স্কিল তত বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।

ডোনাল্ড আরও ব্যাখ্যা করেছেন কেন বাংলাদেশকে সিলেটে নিয়মিত খেলার দরকার। তিনি মনে করেন, ভারতের পিচগুলো স্পিনারদের খুব বেশি সাহায্য নাও করতে পারে। যা তিনি ২০১১ বিশ্বকাপের সময় অনুভব করেছিলেন। ডোনাল্ড তখন নিউজিল্যান্ডের ফাস্ট-বোলিং কোচ ছিলেন।

তিনি বলেন, ‘আমি ভারতে ২০১১ বিশ্বকাপে গিয়েছি। আমি আপনাকে বলতে পারি বিশ্বকাপে খুব বেশি স্পিনিং উইকেট নেই। তাই আমাদের সিলেটের মতো উইকেটে খেলতে হবে, যাতে আপনার মানসিকতা পরিবর্তন করতে না হয়। ভারতের উইকেট এখানকার মতো হবে।’

বাংলাদেশের ফাস্ট বোলাররাও মুগ্ধ করেছেন। সিলেটে শেষ হওয়া দুটি ম্যাচে তারা ২০টি উইকেটের মধ্যে ১৬টিই তুলে নিয়েছেন।

এদিকে ঢাকার পিচগুলো হয় সাধারণ ধীরগতির। যেখানে বল নিচু হয়ে আসে। পেসারদের জন্য কিছুই থাকে না সেখানে। গত চার বছরে টি-টোয়েন্টিতে সর্বনিম্ন স্কোরিং রেটের দিক থেকে সেরা তিনে আছে মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়াম। যেখানে আলাদা সিলেট এবং চট্টগ্রাম। যদিও বিসিবি এই মিরপুরকেই তাদের দুর্গ হিসেবে বিবেচনা করে। যেখানে কী না গত সাত বছরে শুধুমাত্র স্পিনাররাই দাপট দেখিয়েছে।

তাই ঢাকার মতো উইকেটে খেলে গিয়ে ভারতের বিশ্বকাপের জন্য আদর্শ প্রস্তুতি হবে না। ২০২১ সালে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডকে ঘরের মাঠে ৪-১ এবং ৩-২-এ পরাজিত করেছিল বাংলাদেশ। সেই প্রস্তুতি নিয়ে পরবর্তী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গিয়েছিল বাংলাদেশ। সংযুক্ত আরব আমিরাতের ওই বিশ্বকাপে সুপার-১২-এর সবগুলো ম্যাচ হেরেছিল বাংলাদেশ।

নিশ্চয়ই সেই অভিজ্ঞতার মুখোমুখি আরেকবার হতে চাইবে না বাংলাদেশ।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.