রাবাদায়-ক্যালিসের উক্তির পুনরাবৃত্তি!

১২ মার্চ ২০০৬, তারিখটা ক্রিকেট ভক্তদের ভুলে যাওয়ার কথা নয়। যেদিন ওয়ানডে ক্রিকেটের আইকনিক ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। জোহানেসবার্গে অস্ট্রেলিয়ার ছুড়ে দেওয়া রেকর্ড ৪৩৪ রানের জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকা জিতেছিল এক উইকেটে। প্রোটিয়াদের সেই জয়টা আজও একদিনের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড হয়ে আছে।

অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ (২০০৬), উইন্ডিজ-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ (২০২৩)

২৬ মার্চ ২০২৩। ১৭ বছর পর আরও একটি মার্চ, আরও একটি রেকর্ড, আরও একবার নামটা দক্ষিণ আফ্রিকা। ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টিতেও সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার নতুন রেকর্ড গড়েছে প্রোটিয়ারা। গতকাল সেঞ্চুরিয়নে উইন্ডিজের ২৫৮ রানের জবাবে প্রোটিয়ারা জিতেছে সাত বল বাকি থাকতে।

ক্যারিবিয়ান ব্যাটার জনসন চার্লসের ৩৯ বলের সেঞ্চুরির জবাব কুইন্টন ডি কক দিয়েছেন ৪৩ বলে শতক হাঁকিয়ে। রেকর্ড গড়েছেন দুজনেই। দেশের হয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরি চার্লসের। যা সবমিলিয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ষষ্ঠ দ্রুততম। অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন ডি কক। যেটা সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ১৩তম দ্রুততম সেঞ্চুরি।

২০০৬ সালের অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে রেকর্ড জয়ের নায়ক ছিলেন হার্সেল গিবস। ১১১ বলে সেদিন খেলেছিলেন ১৭৫ রানের বিস্ফোরক ইনিংস। তবে হিমালয়তুল্য রানের জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকা সাহস পেয়েছিল জ্যাক ক্যালিসের একটি কথায়। প্রথম ইনিংস শেষে ড্রেসিংরুমে ক্যালিস সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, অস্ট্রেলিয়া ১০ রান কম করেছে। তার মানে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন জোহানেসবার্গে দক্ষিণ আফ্রিকা পিছিয়ে নেই, চেষ্টা করলে অবশ্যই ওই রান তাড়া করে জেতা সম্ভব। ম্যাচ শেষে দলের অনেকেই সেটা স্বীকার করেছিলেন, ম্যাচ জয়ে তাদের সাহস জুগিয়েছিলেন ক্যালিস।

উইন্ডিজকে গতকাল হারানোর পর সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন রেজা হেন্ডরিক্স। প্রথম ইনিংস শেষে ড্রেসিংরুমে না কী কাগিসো রাবাদা হেন্ডরিক্সকে বলেছিলেন, উইন্ডিজ ১০ রান কম করেছে। ক্যালিসের সেই উক্তির পুনরাবৃত্তি, এবার তার ভূমিকায় রাবাদা। যেটা ড্রেসিংরুমে সবাইকে উজ্জীবিত করেছে বলে জানান হেন্ডরিক্স।

৩৩ বছর বয়সী হেনড্রিক্স বলেন, ‘এই জয়টাকে আমি ২০০৬ সালের ওয়ানডের রেকর্ড জয়ের সঙ্গে তুলনা করব। দুইটা জয় একই, সাদা বলের দুই ফরম্যাটে যেখানে সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড দক্ষিণ আফ্রিকার।’

রেকর্ড জয়ে ব্যাটে ডি ককের সঙ্গে জুটি বাঁধেন হেন্ডরিক্স। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে দুজনে মিলে এনে দেন ১০২ রান। ২৮ বলে ৬৮ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকার জয়কে সহজ করে দিতে তিনিও অন্যতম ভূমিকা পালন করেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে বললেন, ‘আপনি যখন ক্রিকেটের আক্রমণাত্মক ব্র্যান্ডের কথা বলেন, এর অর্থ এই নয় যে আপনাকে প্রতিটি বলেই স্লগ করতে হবে। পিচ যখন ব্যাটারদের পক্ষে থাকে এবং মাঠ তুলনামূলক ছোট হয়, তখন আপনাকে ওভারহিট করতে হবে না।’