১৫ বছরের শিরোপা খরা কাটাতে চায় রাজস্থান

শিরোপা খরায় এত লম্বা বিরতি নেই ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) চ্যাম্পিয়ন হওয়া আর কোনো ফ্রাঞ্চাইজির। প্রথম আসরে বাজিমাত করেছিল রাজস্থান র‌য়্যালস। এরপর কেটে গেছে ১৫ বছর। ট্রফির সংখ্যাটা আর দ্বিগুণ করতে পারেনি রাজস্থান। ২০২২ সালে আইপিএলের ফাইনালে উঠে উত্তর ভারতের ফ্রাঞ্চাইজিটি। তবে ফাইনালে দুর্দান্ত গুজরাট লায়ন্সের কাছে পাত্তাই পায়নি শিল্পা শেঠির দলটি।

রাজস্থান র‌য়্যালস

আগে ব্যাট করে হার্দিক পান্ডিয়া আর রশিদ খানদের তোপে পড়ে রাজস্থান। ৯ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১৩০ রান তোলে সানজু স্যামসনের দল। জবাবে দুই ওভার বাকি থাকতে মামুলি সংগ্রহ টপকে যায় গুজরাট।

৩১ মার্চ থেকে শুরু হওয়া নতুন মৌসুমে ইনজুরি প্রবণতায় অনেক ফ্রাঞ্চাইজি পিছিয়ে গেছে। তবে রাসস্থানের জন্য সুখবর, দলটিতে কোনো ইনজুরির হানা নেই। তারা হয়ত একমাত্র দল যারা পূর্ণ শক্তি নিয়ে মাঠে নামাতে পারবে।

গত আসরের দলটিই ধরে রেখেছে রাজস্থান। তার আগে ২০২২ সালের মেগা আইপিএল নিলামে দলটি ধরে রেখেছিল সানজু স্যামসন, জস বাটলার এবং জেসওয়ালকে। দল বদলে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু থেকে সেবার রাজস্থানে নাম লেখান লেগস্পিনার যজবেন্দ্র চাহাল। ওই আসরে সবচেয়ে বেশি উইকেট নিয়ে পার্পেল কাপের মালিক ছিলেন তিনি। এবারও সেখান থেকে শুরুর প্রত্যাশায় ভারতের জাতীয় দলের অন্যতম সদস্য।

বড় তারকা

দলটির বড় তারকা ইংল্যান্ড অধিনায়ক জস বাটলার। এ ছাড়া দলে আছেন শিমরন হেটমায়ার, যার মারমুখী ব্যাট ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন মুহূর্তেই। ম্যাচ ধরে রাখার ক্ষেত্রে জুড়ি নেই জো রুটের মতো ব্যাটারের। তিনিও এই দলের অন্যতম তারকা ক্রিকেটার। তবে তাকে দলে জায়গা পেতে লড়তে হতে পারে।

শক্তিমত্তা

রাজস্থানে শক্তির বিচারে এগিয়ে থাকবে তাদের ব্যাটিং লাইনআপ। দলটিতে অধিনায়ক সানজু স্যামসন, জস বাটলার, জো রুটদের মতো অভিজ্ঞ ব্যটারের ছড়াছড়ি। নতুনদের মধ্যে আছেন জেসওয়াল ও হেটমায়ারের মতো ক্রিকেটার।

বাটলার গত আসরটা খেলেছিলেন অবিশ্বাস্য ধারাবাহিকতায়। আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন তিনি। ১৭ ম্যাচ খেলে প্রায় দেড়শ স্ট্রাইকরেটে ৮৬৩ রান করেন। চারটি সেঞ্চুরি করেছেন, যা টুর্নামেন্টে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চসংখ্যক শতক। এবার নিশ্চয়ই সেখান থেকে শুরু করতে চাইবেন বাটলার।

আইপিএল যাত্রার আগে বাংলাদেশে ভালো কাটেনি অবশ্য বাটলারের। তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশের বিপক্ষে ধবলধোলাই হয়েছে তার দল। দলের সঙ্গে নিজের পারফরম্যান্স ছিল হতাশাজনক। যদিও আইপিএল নতুন একটা টুর্নামেন্ট, নতুন কন্ডিশন তাই ‘বাংলাদেশ অধ্যায়’ তার পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলবে না হয়ত।

২০২২ আসরে ফর্মে ছিলেন স্যামসন ও হেটমায়ারও। দলের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৫৮ রান স্যামসনের। ক্যারিবিয়ান তুর্কি ১৫৪ স্ট্রাইক রেটে করেন ৩১৪ রান। বাটলার-স্যামসন-হেটমায়ার ত্রয়ী ব্যাটার কী পারবেন আরও একবার একসঙ্গে জ্বলে উঠতে?

রাজস্থানের বোলিং বিভাগের বৈচিত্রতা তাদের এগিয়ে রাখবে অন্যসব দল থেকে। অনেকটা স্পিন নির্ভর বোলিং ইউনিট দলটির। চাহাল, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, অ্যাডাম জাম্পা এবং কুলদ্বীপ যাদব আছেন দলটিতে। এর মধ্যে জাম্পা ভারতের বিপক্ষে সবশেষ সিরিজে দারুণ বোলিং করেছেন। ফর্মে আছেন অশ্বিনও। গত মৌসুমের ফর্মটা নিশ্চয়ই আত্মবিশ্বাসী করবে চাহালকে। তাই দলে জায়গা পাওয়া নিয়ে লড়তে হবে তাদেরকে।

দুর্বলতা

রাজস্থানের বড় দুর্বলতা হতে পারে তাদের অলরাউন্ডার সঙ্কট। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের মতো রাজস্থানও হাঁটতে পারে ছয় ব্যাটার ও পাঁচ বোলার তত্ত্বে। এছাড়া জেসন হোল্ডার অলরাউন্ডার হিসেবে দলে জায়গা পেতে পারেন।

রাজস্থান রয়্যালস দল

ব্যটার: সানজু স্যামসন (অধিনায়ক), জস বাটলার (উইকেটরক্ষক), শিমরন হেটমায়ার, জেসন হোল্ডার, যশশ্বি জেসওয়াল, ধ্রুব জুরেল, দেবদুত পাডিকাল, রিয়ান পরাগ, কুনাল সিং রাথোরি, জো রুট।

অলরাউন্ডার: আবদুল বাসিত, জেসন হোল্ডার, দোনোভান ফেরেইরা, আকাশ ভাসিস্ত।

বোলার: মারুগাং অশ্বিন, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, কে এম আসিফ, ট্রেন্ট বোল্ট, কেসি কারিয়াপ্পা, যুজবেন্দ্র চাহাল, ওবেদ ম্যাকয়, নবদ্বিপ সাইনি, সন্দ্বীপ শর্মা, কুলদ্বীপ সেন, কুলদ্বীপ যাদব, অ্যাডাম জাম্পা, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা।