প্রত্যাশা মেটাতে পারবে ব্যাঙ্গালুরু?

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) সবচেয়ে তারকাখচিত দল কোনটি? উত্তরে বেশিরভাগ মানুষই রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুকেই বেছে নেবেন। নিয়মিত যারা আইপিএলের খোঁজ-খবর রাখেন তারা জানেন প্রায় প্রতিবারই তারকাসমৃদ্ধ দল গঠন করে কর্নাটক প্রদেশের ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। একটা ট্রফির জন্য কিনা করেছে ব্যাঙ্গালুরু? কিন্তু অধরা শিরোপা ঘরে তুলতে পারেনি তারা।

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু

রাহুর দশা কাটাতে সবশেষ মৌসুমে অধিনায়কের পদ থেকে বিরাট কোহলিকে পর্যন্ত সরিয়ে দিয়েছে ব্যাঙ্গালুরু। তারা ভরসা রাখে দক্ষিণ আফ্রিকার ফ্যাফ ডু প্লেসির উপর। পরিবর্তন এনেছিল কোচিং প্যানেলেও। তাতে খুব একটা লাভ হয়নি। প্লে-অফ থেকে বিদায় নিয়েছে ব্যাঙ্গালুরু। এ নিয়ে টানা তিন আসরে প্লে-অফ বাধা অতিক্রম করতে পারলো না তারা।

গতকাল শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া আসরে ব্যাঙ্গালুরু শিবিরে আসছে বড় চমক। দলটির প্রধান কোচ হিসেবে দেখা যাবে  ব্রায়ান লারাকে। ক্যারিবীয় কিংবদন্তির অধীনে ব্যাঙ্গালুরু কী করে সেটা দেখার অপেক্ষায় সমর্থকরা। আইপিএলের ইতিহাসে তিনবার ফাইনাল খেলা দলটির সামনে এবারও প্রত্যাশা পূরণের চ্যালেঞ্জ।

বড় তারকা

ব্যাঙ্গালুরুতে প্রায় প্রতিবারই তারকা ক্রিকেটারের মিলনমেলা বসে। এবারও তার ব্যত্যয় হয়নি। দলটির অন্যতম বড় তারকা ক্রিকেটার নিঃসন্দেহে বিরাট কোহলি। এ ছাড়া তালিকায় থাকবেন ডু প্লেসির মতো পোড় খাওয়া ক্রিকেটার।

শক্তিমত্তা

বরাবরই ব্যাটিং শক্তির দল গঠন করে ব্যাঙ্গালুরু। দলটিতে এবারও তারকা ব্যাটারের অভাব নেই। ওপেনিংয়ে কোহলির সঙ্গে দেখা যেতে পারে ডু প্লেসিকে। গত আসরে অবিশ্বাস্য ফর্মে ছিলেন এই প্রোটিয়া ব্যাটার। ধারাবাহিকভাবে রান করেছেন, ছয় ফিফটিতে করেছেন ৪৬৮ রান। তবে চার রানের জন্য সেঞ্চুরি পাননি।

ওপেনিংয়ে কোহলিকে নিয়ে বলার কিছু নেই। এই প্রজন্মের অন্যতম সেরা ব্যাটার নিজের দিনে যেকোনো বোলিং লাইনআপ তছনছ করার সামর্থ্য রাখেন। মাঝে লম্বা সময় ফর্মহীনতায় ভুগেছেন তিনি। দুঃসময় পেছনে ফেলে অনেকদিন ধরেই রানে ফিরেছেন কোহলি।

দলটির তিন নম্বর পজিশনে দেখা যেতে পারে রজত পাতিদারকে। ঘরোয়া ক্রিকেটে রঞ্জি ট্রফিতে শেষ পাঁচ ম্যাচ চার ফিফটিতে ৫০৫ রান করেছেন। সবশেষ আইপিএলে রজত সুযোগ পান আট ম্যাচে সাতবার ব্যাট করে এক সেঞ্চুরি এবং দুই ফিফটিতে ৩৩৩ রান করেছেন। ব্যাটিং গড় ৫৫; স্ট্রাইকরেট ১৫২.৭! টপ অর্ডারের কোনো ব্যাটারের কাছ থেকে এমন পারফরম্যান্স যে কোনো দলের জন্য স্বস্তির।

ম্যাচ ফিনিশিংয়ের জন্য ব্যাঙ্গালুরুতে ছয়ে দেখা যেতে পারে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তার বোলিংটা বেশি কার্যকর। ব্যাট হাতে জ্বলে উঠলে যেকোনো প্রতিপক্ষের জন্য তিনি হয়ে উঠতে পারেন ভয়ঙ্কর।

ব্যাঙ্গালুরুর স্কোয়াডে চান্স পেলে উইল জ্যাক হতে পারেন বাজির ঘোরা। ইংল্যান্ড দলে যে কজন বিধ্বংসী ব্যাটার-অলরাউন্ডারের উত্থান হয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম জ্যাক। ব্যাঙ্গালুরুর একাদশে থাকলে মিডল অর্ডারে দারুণ ভূমিকা রাখতে পারেন তিনি।

বোলিংয়ে মোহাম্মদ সিরাজ এবং হার্শাল প্যাটেল বড় অস্ত্র তাদের। পরীক্ষিত বোলার তারা। এর বাইরে প্রস্তুত আছেন শাহবাজ আহমেদ। রবিন্দ্র জাদেজা, অক্ষর প্যাটেলদের পর ভারতীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে সমবচেয়ে সম্ভাবনময়ী হয়ে উঠেছেন তিনি। ৬২ টি-টোয়েন্টিতে প্রায় ১৩০ স্ট্রাইকরেটে ৭১৯ রান করেছেন শাহবাহ। বাঁহাতি স্পিনারের ৪৬টি উইকেটও আছে তার।

দুর্বলতা

ব্যাঙ্গালুরু মৌসুম শুরুর আগে বড় ধাক্কা খেয়েছে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলেকে হারিয়ে। ইনজুরিতে পড়েছেন তিনি। এই ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতেই ব্যাঙ্গালুরু নতুন করে বিপদে পড়েছে আরেক অস্ট্রেলিয়ানকে নিয়ে। সংবাদমাধ্যমে খবর বেড়িয়েছে ইনজুরির কারণে পেসার জশ হ্যাজলউডকেও মৌসুমের অর্ধেকটা সময় পাবে না ফ্রাঞ্চাইজিটি।

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু দল

ব্যাটার: বিরাট কোহলি, ফিন অ্যালেন, ফ্যাফ ডু প্লেসি (অধিনায়ক), অনুজ রাওয়াত, অভিনাশ সিং, ডিনেশ কার্তিক, উইল জ্যাক, রজত পাতিদার।

অলরাউন্ডার: আকাশ দ্বীপ, মনোজ বন্দেগী, মিচেল ব্রেসওয়েল, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, মহিপাল লামরোর, সুয়াষ প্রভুদেশাই, রজন কুমার, শাহবাজ আহমেদ, সনু যাদব, ডেভিড উইলি।

বোলার: মোহাম্মদ সিরাজ, হার্শাল প্যাটেল, সিদ্ধার্থ কাউল, হিমাংশু শর্মা, করণ শর্মা, রিস টপলি।