গত আসর থেকে শিক্ষা নেবেতো হায়দরাবাদ?

২০২২ সালে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) সানরাইজার্স হায়দরাবাদ প্রথম দুই ম্যাচ হারার পর টানা পাঁচ ম্যাচ জিতেছিল। উড়তে থাকা দলটাকে মাটিয়ে নামিয়ে আনে গুজরাট টাইটানস। নিজেদের অষ্টম ম্যাচে তৃতীয় পরাজয়ের স্বাদ নিতে হয় হায়াদরাবাদকে। সেই যে ছন্দপতন হলো, আর ঘুড়ে দাঁড়াতে পারেনি কমলা জার্সিধারীরা। বাকি ম্যাচগুলো হেরে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে থেকে টুর্নামেন্ট শেষ করতে হয়েছে দলটিকে।

সানরাইজার্স হায়দরাবাদ

শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে আইপিএলের ১৬তম আসর। নতুন মৌসুমে নতুন করেই শুরু করতে চাইবে হায়াদরাবাদের ফ্রাঞ্চাইজিটি। এবারের যাত্রা শুরু করার আগে দলটিতে পরিবর্তন এসেছে বেশ কিছু। নিয়মিত অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনকে ছেড়ে দিয়েছে ফ্রাঞ্চাইজিটি। এ তালিকায় আছেন নিকোলাস পুরানও।

আগামী রোববার রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে মাঠের লড়াইয়ে নামবে হায়দরাবাদ। এই ম্যাচেই সানরাইজার্সের অধিনায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটবে এইডেন মার্করামের। তার অধীনে দলটি কতদূর যেতে পারে সেটাই দেখার বিষয়। ২০১৬ সালের চ্যাম্পিয়নরা কি পারবে তাদের দ্বিতীয় ট্রফি ঘরে তুলতে?

নতুন মৌসুমে বেশ কিছু ক্রিকেটারকে দলে টেনেছে হায়দরাবাদ। যার মধ্যে হ্যারি ব্রুকস এবং গ্লেন ফিলিপসের কথা আলাদা করে বলতে হয়। এই মুহূর্তে ইংল্যান্ডের যে কয়জন ক্রিকেটারকে আপকামিং সুপারস্টার ধরা হয় হ্যারি ব্রুক তাদের মধ্যে অন্যতম। টি-টোয়েন্টের এই মারমুখী ব্যাটার দাঁড়িয়ে গেলে চুরমার করে দিতে পারে যে কোনো দলের বোলিং ইউনিট।

সবশেষ নিউজিল্যান্ড সফরে দেখিয়েছেন নিজের সামর্থ্য। যদিও লাল বলের ক্রিকেট ছিল সেটি। তবে ব্রুকের ব্যাটিং তো ছিল সাদা বলের ক্রিকেটের মতোই। টিম সাউদি, টেন্ট বোল্টদের নাস্তানুবাদ করে ছড়েছেন। চার ইনিংসে দুই ফিফটির সঙ্গে এক সেঞ্চুরি করেছেন। তিনি তার প্রতিটি ইনিংসই খেলেছেন প্রায় টি-টোয়েন্টি স্টাইলে।

বড় তারকা

হেনরিখ ক্লাসেন হায়দরাবাদের অন্যতম বড় তারকা। সবশেষ দক্ষিণ আফ্রিকা- উইন্ডিস সিরিজে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরক ইনিংস খেলেছেন। টি-টোয়েন্টির রেকর্ড ২৫৮ রান তাড়া করে জেতার সেই ম্যাচের অন্যতম নায়ক ছিলেন ক্লাসেন।

শক্তিমত্তা

সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বড় শক্তি তাদের দেশীয় খেলোয়ার। ব্যাটিংয়ের শুরুতে অভিষেক শর্মার সঙ্গে দেখা যেতে পারে মায়াঙ্ক আগারওয়ালকে। পাঞ্জাব কিংস ছেড়ে এবারই হায়দারাবাদে নাম লিখিয়েছেন আগারওয়াল। পাঞ্জাবের অনেক বিপদের ম্যাচে হাল ধরার রেকর্ড আছে এই ব্যাটারের। এরপর তিন নম্বর পজিশনে দেখা যেতে পারে রাহুল ত্রিপাঠিকে। শর্টার ফর‌ম্যাটের কার্যকরী প্যাকেজ তিনি।

বোলিংয়েও নেতৃত্ব দেবেন ভারতের স্থানীয় ক্রিকেটারেরা। শুরুতে পেস বোলিংয়ে জুটি বাঁধতে পারেন ভুবনেশ্বর কুমার এবং উমরান মালিক। এরপর তৃতীয় অস্ত্র হিসেবে আছে টি নটরাজন।

দুর্বলতা

হায়দরাবাদের অধিনায়ক মার্করাম, তার সঙ্গে ব্যাটার হিসেবে বিদেশি কোটায় দলে সুযোগ পাবেন ব্রুক এবং ক্লাসেন। বাকি আরেকজন খেলোয়ার কাকে রেখে কাকে নেবে এমন অবস্থা। মার্কো জ্যানসেনকে খেলাতে পারে। তাহলে তাদের স্পিন বোলিং অ্যাটাক দুর্বল হয়ে পড়বে। যদিও প্রোটিয়া এই অলরাউন্ডার আছেন দুর্দান্ত ফর্মে। আদিল রশিদ কিংবা আকিল হোসেনের মধ্য থেকে একজন সুযোগ পেতে পারেন।

গতবারও একই সমস্যায় পড়েছিল দলটি। বারবার পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গেছে তারা। যার কারণে ছন্দটাও ধরে রাখতে পারেনি। সেই একই পথে এবার নিশ্চয়ই হাঁটতে চাইবে না হায়দরাবাদ। সেরা একাদশ সাজানোই তাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ।

সানরাইজার্স হায়দরাবাদ দল

ব্যাটার: মায়াঙ্ক আগারওয়াল, আনমোলপ্রিত সিং, হ্যারি ব্রুক, আবদুল সামাদ, হেনরিখ ক্লাসেন, এইডেন মার্করাম, গ্লেন ফিলিপস, রাহুল ত্রিপাঠি, উপেন্দ্র যাদব।

অলরাউন্ডার: অভিষেক শর্মা, মার্কো জ্যানসেন, নিতিশ কুমার রেড্ডি, সানভির সিং, ওয়াশিংটন সুন্দর।

বোলার: ভুবনেশ্বর কুমার, মায়াঙ্ক ডাগার, ফজল হক ফারুকী, আকিল হোসেন, কার্তিক ত্যাগী, মায়াঙ্ক মারকান্ডে, টি নটরাজান, আদিল রশিদ, উমরান মালিক, ভবরন্ত শর্মা, সামর্থ্য ভিয়াস।