শঙ্কার পর বাংলাদেশের ইতিহাস

মিরপুর টেস্টে প্রথম দুই দিন দাপট ছিল বাংলাদেশের। দ্বিতীয় দিন শেষে আয়ারল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল (দ্বিতীয় ইনিংসে) চার উইকেট হারিয়ে ২৭ রান। ইনিংস ব্যবধানে পরাজয় তখন চোখ রাঙাচ্ছিল সফরকারীদের। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ায় অ্যান্ডি বালবার্নির দল। তৃতীয় দিনটা নিজেদের করে নেয় তারা। সারাদিন ব্যাট করে উইকেট হারায় মোটে তিনটি।

আয়ারল্যান্ডকে সাত উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ

লিড রিষ্টপুষ্ট করতে চতুর্থ দিন মাঠে নামেন দুই অপরাজিত আইরিশ ব্যাটার অ্যান্ডি ম্যাকব্রেইন এবং গ্রাহাম হিউম। তাদের সে চেষ্টায় বাঁধা হয়ে দাড়ান এবাদত হোসেন। চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনেই সব শঙ্কা উড়িয়ে দেন তিনি। তার জোড়া শিকারে মাত্র ছয় রান যোগ করতেই ২৯২ রানে গুটিয়ে যায় আইরিশরা। বাংলাদেশ লক্ষ্য পায় ১৩৮ রানের। মামুলি রান তাড়ায় তিন উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় সাকিব আল হাসানের দল। এ জয়ের মধ্য দিয়ে এক ম্যাচের টেস্ট সিরিজ নিজেদের করে নিলো বাংলাদেশ।

একটা দিক দিয়ে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ। এর আগে কোনো টেস্ট খেলুড়ে দেশের সঙ্গে প্রথম মোকাবেলায় জয় ছিল না সাকিব আল হাসানদের। আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয়ের মধ্য দিয়ে সে বৃত্ত থেকে বেরিয়ে এলো বাংলাদেশ।

ছোট লক্ষ্যের পেছনে ছুটে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে ব্যাট চালান তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। ইনিংসের প্রথম ওভারে মার্ক অ্যাডায়ারকে কাভার ড্রাইভে চার মেরে শুরু করেন তামিম। পরের ওভারে মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলেই ছক্কা হাকান লিটন। ওই ওভারে আরও একটি বাউন্ডারি হাকান উইকেটরক্ষক এই ব্যাটার।

দুজনের আক্রমণ চলে তৃতীয় ওভারেও। দুজনে প্রথম চার ওভারে ২৭ রান তুলে ফেলেন। এরপর এক অদ্ভুতুরে আউটে সাজঘরে ফেরেন লিটন। প্রথমে বল হেলমেট হয়ে ব্যাটে লাগে, এরপর স্টাম্পে আঘাত হানে। ১৯ বলে ২৩ রানে থামে লিটনের ইনিংস।

লিটনের ফেরার পর মাত্র ৪ রান করে সাঝঘরে ফিরেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এরপর মুশফিকুর রহিম উইকেটে জুটি বাধেন তামিম ইকবালের সঙ্গে। দুজনে লাঞ্চ বিরতির আগে সংগ্রহ করেন ৪৬ রান। জয়ের জন্য তখন দরকার ছিল ৪৯ রান। বিরতির পর বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি তামিম। ৬৫ বলে ৩১ রান করে বেন হোয়াইটের বলে আউট হন বাহাতি ওপেনার।

মুমিনুল হককে নিয়ে বাকি পথটুকু পাড়ি দেন মুশফিক। প্রথম ইনিংসে শতক হাকানো এই ব্যটার দ্বিতীয় ইনিংসে পেয়েছেন ফিফটির দেখা। অপরাজিত ছিলেন ৪৮ বলে ৫১ রান করে। অন্যপ্রান্তে একটি করে ছক্কা-চারে ২২ বলে ২০ রানে অপরাজিত থাকেন সাবেক অধিনায়ক মুমিনুল।

আয়ারল্যান্ডের পক্ষে একটি করে উইকেট পেয়েছেন অ্যাডায়ার, অ্যান্ডি ম্যাকব্রেইন এবং বেন হোয়াইট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

আয়ারল্যান্ড: ২১৪ এবং ২৯২
বাংলাদেশ: ৩৬৯ এবং ১৩৮/৩

ফলাফল: বাংলাদেশ সাত উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মুশফিকুর রহিম (১২৬ এবং ৫১* রান)
সিরিজ: বাংলাদেশ ১-০ তে জয়ী