তিউনিসিয়ায় ফের দূতাবাস খুলছে সিরিয়া

এক দশক পরে যুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়া উত্তর আফ্রিকার দেশ তিউনিসিয়ায় কূটনৈতিক মিশন পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া সেখানে একজন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করা হবে। ১২ এপ্রিল, বুধবার দেশ দুটি একটি যৌথ বিবৃতিতে এই তথ্য প্রকাশ করেছে। খবর আল জাজিরা।

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ

৩ এপ্রিল তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট কাইস সাইদ তার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে দামেস্কে রাষ্ট্রদূত নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপর সিরিয়া এই সিদ্ধান্ত নেয়।

সিরিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা সানা জানিয়েছে, যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্টের উদ্যোগের প্রতিক্রিয়ায় সিরিয়ার সরকার দেশটিতে দূতাবাস পুনরায় চালু করার এবং একজন রাষ্ট্রদূত নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ভ্রাতৃপ্রতিম দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ককে আরও সুসংহত করার লক্ষ্যে উভয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে আলোচনা চলছে।

গত মাসে তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট কাইস সাইদ সিরিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন। তিউনিসিয়ার এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সঙ্গে আরব দেশগুলোর সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের সর্বশেষ উদাহরণ।

গত ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাতে সিরিয়া এবং তুরস্ক ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এই ভূমিকম্পের পর সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন আরব নেতারা। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত সিরিয়ানদের জন্য ত্রাণও পাঠানো হয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে বিদ্রোহীদের কোণঠাসা করে দেওয়ার পর আসাদের সঙ্গে পুনরায় সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন আরব নেতারা।

এদিকে চলতি বছর আসাদ ওমান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করেছেন। এছাড়া গত মাসে, সৌদি আরব জানিয়েছিল, তারা কনস্যুলার পরিষেবাগুলো পুনরায় চালু করার বিষয়ে দামেস্কের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে।

২০১১ সালে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের নির্মমভাবে দমন করেছিল আসাদ সরকার। এরপরই দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। পরবর্তীতে ২০১২ সালে তিউনিসিয়া সিরিয়ার রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করেছিল।

উল্লেখ্য, ১২ বছর ধরে চলা সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে প্রায় ৫ লাখ মানুষ নিহত এবং লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এই যুদ্ধের শুরুতে বেশিরভাগ আরব দেশগুলো আসাদ বিরোধীদের সমর্থন দিয়েছিল। এখন এই দেশগুলো আসাদের সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে।