নজরদারির খবরে বিস্মিত নন জাতিসংঘ মহাসচিব!

যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস রাশিয়ার প্রতি দুর্বল। এ ধারণা থেকে দেশটি গুতেরেসের ওপর নজরদারি চালিয়েছে। তবে মার্কিনিদের এমন নজরদারির খবরে মোটেও বিস্মিত হননি অ্যান্তোনিও গুতেরেস। খবর আনাদোলু।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস

গত ৬ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পেন্টাগনের ফাঁস হওয়া গোপন নথিতে জাতিসংঘ মহাসচিবের ওপর নজরদারির চাঞ্চল্যকর এ তথ্য ওঠে আসার পর এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ওই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন গুতেরেস। তার মুখপাত্র স্টেফেন দুজারিক গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

স্টেফেন দুজারিক হতাশার সুরে বলেন, বিশ্ব সংস্থার প্রধান হিসেবে বিশ্বনেতাদের সঙ্গে মহাসচিব নানা ধরনের আলাপ-আলোচনা করবেন, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এতেও আড়িপাতার খবর পাওয়া গেল।

নথি ফাঁসের ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়

যুক্তরাষ্ট্রের ফাঁস হওয়া নথিগুলোতে বিভিন্ন দেশ ও রাষ্ট্রপ্রধানদের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র মূলত কী নীতি অবলম্বন করে, কাকে কেমন মূল্যায়ন করে, এ ধরনের তথ্যও পাওয়া গেছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক মিত্র দেশ নিজেদের সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যায়নে ক্ষুব্ধ হয়েছে।

ওই সব নথিতে জাতিসংঘস মহাসচিবের ব্যাপারে বেশকিছু তথ্য জানা যায়। রাশিয়ার বিভিন্ন দাবি মেনে নেওয়ার ব্যাপারে গুতেরেসকে বেশ তৎপর বলে মনে করে যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট সমাধানে জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্ততায় ‘কৃষ্ণসাগর শস্য চুক্তি’তে রাশিয়ার বিভিন্ন দাবি মেনে নেওয়াতেও তার আগ্রহের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। আবার কোনো কোনো রুশ প্রতিষ্ঠান অথবা ব্যক্তির ওপর যদি নিষেধাজ্ঞা শিথিলকরণেও প্রস্তুত ছিলেন তিনি।

নথিগুলোতে গুতেরেসের বেশকিছু কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। বলা হয়, ইউক্রেনে অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়াকে বিচারের মুখোমুখি করতে চেয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। কিন্তু এতে বাধা দিয়েছিলেন গুতেরেস। এছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে জাতিসংঘের মহাসচিবের অবস্থান ও বেশ কয়েকজন আফ্রিকার নেতার ব্যাপারে গুতেরেসের পর্যবেক্ষণের বিষয়টিও উঠে এসেছে। অপর একটি নথিতে গুতেরেস ও তার ডেপুটির কথোপকথনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

গুতেরেসের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের এমন অবস্থান ও নজরদারির বিষয় নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা বলেন, যুদ্ধের বিরূপ প্রভাব যেন দরিদ্র দেশগুলোর ওপর না পড়ে এবং গরিব দেশগুলো যেন প্রয়োজনীয় খাবার ও সার পায় সেটি নিশ্চিতেই শস্য চুক্তি নিয়ে এতটা তৎপর ছিলেন গুতেরেস।