শেষের পথে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল প্রকল্প, সেপ্টেম্বরে চলবে ট্রেন

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ চূড়ান্ত পর্বে পৌঁছেছে। এরইমধ্যে প্রকল্পের ৮৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। রেললাইন নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে এবং ৮৬টি স্টেশন ভবনের কাজও প্রায় শেষ। সেপ্টেম্বর নাগাদ কক্সবাজার রুটে রেল চলাচল শুরু হবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন।

রেলস্টেশনে ব্যাগ-লাগেজ রেখেই সৈকতে ঘুরতে পারবেন পর্যটকরা

সরেজমিন দেখা যায়, সৈকত থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে কক্সবাজারের ঝিলংজা ইউনিয়নের হাজীপাড়ায় মাথা তুলেছে শামুক আকৃতির সুদৃশ্য রেলস্টেশন। ২৯ একর জায়গার ওপর নির্মিত হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন এ অবকাঠামো। ছয়-তলা স্টেশন ভবনটির আয়তন ১ লাখ ৮০ হাজার বর্গফুট। ভবনের পাশে হচ্ছে ৬৫০ মিটার দীর্ঘ ও ১২ মিটার প্রশস্ত তিনটি প্ল্যাটফর্ম।

স্টেশনের পাশেই নির্মিত হচ্ছে আবাসিক এলাকা। সেখানে আটটি ভবনের কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। আবাসিক হোটেল ছাড়াও স্টেশনে থাকছে ক্যান্টিন, লকার, কার পার্কিং। পর্যটকরা যাতে নিজেদের ব্যাগ-লাগেজ লকারে রেখে সৈকতে ঘুরতে ও কক্সবাজার বেড়াতে পারেন, সেজন্য এই বন্দোবস্ত। দৈনিক চার হাজার মানুষ এক স্টেশনের মাধ্যমে কক্সবাজারে যাতায়াত করতে পারবে।

রেলওয়ের প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে আমরা ট্রেন চলাচল চালু করতে পারব। পর্যটননগরীর নয়নাভিরাম স্টেশনটি ছাড়াও কক্সবাজার রুটে থাকছে আরও আটটি রেল স্টেশন। এর মধ্যে রয়েছে- সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, ডুলহাজারা, ঈদগাঁও, রামু, কক্সবাজার সদর ও উখিয়া।

তিনি বলেন, সবকটি স্টেশনের কাজ চূড়ান্ত পর্বে রয়েছে। তিনটি বড় রেলসেতু নির্মাণ হচ্ছে সাঙ্গু, মাতামুহুরী ও বাঁকখালী নদীর ওপর। এছাড়া ৪৩টি ছোট সেতু, ২০১টি কালভার্ট ও ১৪৪টি লেভেল-ক্রসিং নির্মাণ হচ্ছে। সাতকানিয়ার কেঁওচিয়াতে একটি ফ্লাইওভার, রামু ও কক্সবাজার এলাকায় দুটি হাইওয়ে-ক্রসিং হচ্ছে। হাতি ও অন্যান্য বন্যপ্রাণীর চলাচলের সুবিধার্থে ৫০ মিটারের একটি ওভারপাস ও তিনটি আন্ডারপাস করা হচ্ছে।

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে ডুলহাজার থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন ডুয়েল গজ সিঙ্গেল লাইন বসানো হচ্ছে। ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে সংযুক্ত হবে এ রেললাইন। কক্সবাজার রেল নেটওয়ার্কের আওতায় এলে পর্যটক ও স্থানীয় অধিবাসীদের জন্য নিরাপদ, আরামদায়ক, সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব যাতায়াতব্যবস্থা গড়ে উঠবে। একইসঙ্গে, মাছ, লবন, রাবার এবং অন্যান্য বনজ ও কৃষিপণ্য কম খরচে পরিবহনের সুযোগ হবে।

কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী বলেন, রেল চলাচল শুরু হলে ঢাকা থেকে পর্যটকরা অনায়াসে কক্সবাজার আসতে পারবেন। একইভাবে উত্তরাঞ্চল থেকে কাঁচামাল আনাও সহজসাধ্য হয়ে উঠবে।