নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখতে ব্যর্থ ৮ ব্যাংক, ঘাটতি ২০ হাজার কোটি টাকা

২০২৩ সালের মার্চ মাসে এসে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২১ কোটি টাকায়। বছরের প্রথম তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১০ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা। ঝুঁকিপূর্ণ এসব ঋণের বিপরীতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশন সংরক্ষণ করতে পারেনি সরকারি-বেসরকারি আটটি ব্যাংক। এসব ব্যাংকের ঘাটতির পরিমাণ ২০ হাজার ১৫৫ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংক

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সরকারি খাতের অগ্রণী, বেসিক, রূপালী ব্যাংক; বেসরকারি খাতের বাংলাদেশ কমার্স, ঢাকা, ন্যাশনাল ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক এবং বিশেষায়িত খাতের বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত এসব ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ছিল ২০ হাজার ১৫৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ছিল ১৯ হাজার ৪৭ কোটি টাকা। সেই হিসাবে তিন মাস ঘাটতি বেড়েছে ১ হাজার ১০৮ কোটি টাকা।

নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাংক যে ঋণ দেয়, তার বিপরীতে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রভিশন হিসেবে জমা রাখতে হয়। কারণ, কোনো ঋণ যদি খেলাপিতে পরিণত হয়, তাহলে যেন ব্যাংক  আর্থিকভাবে ঝুঁকিতে না পড়ে। এক্ষেত্রে নিয়মিত ঋণের বিপরীতে প্রভিশন রাখতে হয় দশমিক ২৫ থেকে ৫ শতাংশ। নিম্ন বা সাব-স্ট্যান্ডার্ড ঋণের বিপরীতে রাখতে হয় ২০ শতাংশ, সন্দেহজনক ঋণের বিপরীতে ৫০ শতাংশ এবং মন্দ ঋণের বিপরীতে প্রভিশন রাখতে হয় ১০০ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত সরকারি খাতের অগ্রণী, বেসিক, রূপালী ব্যাংকে মোট প্রভিশন ঘাটতি ছিল ১১ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা। এরমধ্যে বেসিক ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ছিল ৪ হাজার ৫৭৯ কোটি টাকা, অগ্রণী ব্যাংকের ৪ হাজার ১১ কোটি টাকা এবং রূপালী ব্যাংকের ছিল ৩ হাজার ৮০ কোটি টাকা।

বেসরকারি চার ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি আছে ৮ হাজার ৪৮৬ কোটি টাকা। এরমধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংকের ৭ হাজার ৪৬৮ কোটি টাকা, ঢাকা ব্যাংকের ৪৯৭ কোটি টাকা, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ৩৬০ কোটি টাকা এবং স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ১৬০ কোটি টাকা। বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ঘাটতি তিন কোটি টাকা।