ভিসা জটিলতা, অনিশ্চয়তায় বহু হজযাত্রী

হজের সময় এগিয়ে এলেও ট্রাভেল এজেন্সিগুলো ভিসা আবেদন সম্পন্ন করতে না পারায় বিপাকে পড়েছেন হজযাত্রীরা। ভিসা না হওয়ায় গত ১০ দিনে ৬ হাজার ২২৮ জন হজযাত্রীকে নিতে পারেনি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। একই কারণে ছয়টি হজ ফ্লাইট বাতিল করেছে রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থাটি। আটকে পড়া হজযাত্রীরা শেষপর্যন্ত আদৌ হজ পালন করতে পারবেন কিনা তা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।

ভিসা সমস্যার কারণে ছয়টি হজ ফ্লাইট বাতিল করেছে বিমান

ভিসা নিয়ে বিপত্তির জন্য হজ এজেন্সিগুলোকে দায়ী করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে গতকাল রোববার ৯০টি এজেন্সিকে কারণ দর্শাও নোটিশ পাঠিয়েছে মন্ত্রণালয়। এজেন্সিগুলোকে তিনদিনের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করায় এজেন্সিগুলোকে দায়ী করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

বিমানের একটি সূত্র জানিয়েছে, সৌদি আরবে সুলভ আবাসন খুঁজতে গিয়ে হজ এজেন্সিগুলো ভিসা প্রক্রিয়াকরণে পিছিয়ে পড়েছে। সৌদিতে বাড়িভাড়ার পারমিট দেখাতে না পারলে ভিসা দিচ্ছে না দেশটির দূতাবাস।

তবে হজ এজেন্সিজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) দাবি করেছে, ভিসা নিয়ে কোনো সংকট সৃষ্টি হয়নি। সৌদি কর্তৃপক্ষ হজযাত্রীদের ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করতে একটি চিঠি পাঠিয়েছে জানিয়ে হাব সভাপতি শাহাদাত হোসেন তসলিম বলেন, আমরা চিঠিটি এজেন্সিগুলোর কাছে ফরোয়ার্ড করেছি।

চলতি বছর ১ লাখ ২২ হাজার ২২১ জন বাংলাদেশি হজের জন্য নিবন্ধন করেছেন। এদের মধ্যে প্রায় ৬২ হাজার জন যাবেন বিমানের ফ্লাইটে। অবশিষ্ট হজযাত্রী পরিবহন করবে সৌদি এয়ারলাইন্স ও ফ্লাইনাস। বিমানে হজযাত্রীদের প্রায় ১০ শতাংশ ফ্লাইট মিস করেছেন।

ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ মে থেকে হজ ফ্লাইট শুরু হয়েছে। এরপর দুই সপ্তাহ হতে চললেও এখনও প্রায় ৪০ হাজার হজযাত্রীর ভিসা হয়নি।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স প্রতিদিন পাঁচটি হজ ফ্লাইট পরিচালনা করছে। প্রতিটি ফ্লাইটে আসন সংখ্যা ৪১৯। ভিসা সমস্যার কারণে এসব ফ্লাইটে আসন খালি থাকছে। যাদের যাত্রা বিলম্বিত হচ্ছে সেই হজ যাত্রীদের কিভাবে নেওয়া হবে তা নিয়ে উদ্বেগ বোধ করছেন বিমানের কর্মকর্তারা।

বিমানের নতুন এমডি শফিউল আজিম বলেন, ভিসা ইস্যুর কারণে ১ জুন পর্যন্ত ৬ হাজার ২২৮ জন হজযাত্রী নির্ধারিত ফ্লাইটে আরোহন করতে পারেনি। ছয়টি ডেডিকেটেড হজ ফ্লাইট বাতিল করতে হয়েছে।

তিনি বলেন, হজ মৌসুমে বিমানবন্দরের ব্যস্ততার কারণে সৌদি কর্তৃপক্ষ আগে থেকে ফ্লাইট শিডিউল করে থাকে। ডেডিকেটেড হজ ফ্লাইটগুলোকে হজযাত্রী নামিয়ে খালি অবস্থায় ফিরে আসতে হয়। ফিরতি পথে যাত্রী ওঠানোর সুযোগ থাকে না। এ অবস্থায় আটকে পড়া হজযাত্রীদের জন্য নতুন শিডিউল ম্যানেজ করা কঠিন হবে।

এজেন্সিগুলো হজযাত্রী পাঠানো শুরু করলে এখনও সমস্যা উতরে যাওয়া সম্ভব মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছি। এজেন্টরা নিয়ম মানতে শুরু করলে আমরা হজযাত্রীদের সৌদি নিয়ে যেতে পারব।