আসামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, ভেঙে পড়ছে সড়ক-বাঁধ

টানা বৃষ্টিপাতের কারণে আসামে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। উজানের রাজ্য অরুণাচলেও অবিরাম বৃষ্টি হচ্ছে। সেখান থেকে বয়ে আসা পানির ঢল আসামের নদীগুলোর জন্য বাড়তি চাপ সৃষ্টি করছে। ব্রহ্মপুত্র, পুঠিমারি ও অন্য কয়েকটি নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানির তোড়ে বেশকিছু জেলায় সড়ক ও বাঁধ ভেঙে গেছে।

শনিবার পর্যন্ত আসামের ১১টি জেলা বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে

আসাম রাজ্য সরকারের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার পর্যন্ত আসামের ১১ জেলার ১৭টি রাজস্ব সার্কেলের ৭৭টি গ্রাম বানের পানিতে তলিয়ে গেছে। বন্যাকবলিত জেলার মধ্যে রয়েছে- বিশ্বনাথ, দাররাং, ঢেমাজি, ডিব্রুগড়, লখিমপুর, তামুলপুর, উদালগুড়ি, কাছাড়, জোড়হাট, কামরূপ ও নলবাড়ি। এর মধ্যে কাছাড়, জোড়হাট, কামরূপ ও নলবাড়ির শহরাঞ্চলও প্লাবিত হয়েছে।

গৌহাটিতে সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের (সিডব্লিউসি) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জোড়হাট জেলার নেমতিঘাট পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একইভাবে কামরূপ জেলার এনএইচ রোড ক্রসিং পয়েন্টে পুঠিমারি নদীর পানিও বিপৎসীমার উপর দিয়ে বইছে।

আসামের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের তথ্য মতে, বন্যায় এ পর্যন্ত ৩৪ হাজারের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১৬ হাজার পুরুষ, ১৫ হাজার নারী ও অন্যরা শিশু। উদালগুড়ি জেলায় দুর্গত মানুষের জন্য রিলিফ ক্যাম্প খোলা হয়েছে। বন্যার কারণে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬১ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। হাফলং ও হাজং এলাকায় ভূমিধসের খবর পাওয়া গেছে।

বানের তোড়ে সড়ক ও বাঁধ ভেঙে গেছে বেশকিছু এলাকায়

রাজ্য সরকারের কর্মকর্তারা জানান, বন্যার পানি এরইমধ্যে লখিমপুর জেলায় নারায়ণপুর-ফার্ম বাঁধ, হরসিঙ্গা সিংড়িমারি শুকলাই নদী বাঁধ ও উদালগুড়ি জেলার কালাইগাঁও বাঁধের উপর দিয়ে বইতে শুরু করেছে। নলবাড়ি জেলায় মোরা পাগলদিয়া নদীর পানির তোড়ে পিডব্লিউডির বাঁধের ৪০ মিটার অংশ ভেঙে গেছে। আরও কয়েকটি এলাকা থেকে নদীভাঙনের খবর পাওয়া গেছে।

ব্রহ্মপুত্রের পানি বেড়ে যাওয়ায় অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন সংস্থা দ্বীপ অঞ্চলে ফেরি সার্ভিস বন্ধ রেখেছে। আগামী পাঁচদিন পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে বলে আজ দুপুরে বিশেষ আবহাওয়া বুলেটিনে জানানো হয়েছে।