জামায়াত নেতার বাড়িতে ডেপুটি স্পিকারের মধ্যাহ্নভোজ

জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য শামসুল হকসহ বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য ঈশ্বরদীতে জামায়াত নেতার বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে দল ও দলের বাইরে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে।

আরআরপি ফিড মিল প্রাঙ্গণে গাছের চারা লাগান ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক

জানা গেছে, ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক বুধবার (২৬ জুলাই) সকালে ঈশ্বরদীর রূপপুরে নির্মাণাধীনপারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প পরিদর্শন করতে যান। এ সময় তার সঙ্গে সংরক্ষিত মহিলা আসনের ১১ জন সংসদ সদস্য ও স্থানীয় সংসদ সদস্য নূরুজ্জামান বিশ্বাসও উপস্থিত ছিলেন। তারা প্রকল্পের অগ্রগতিবিষয়ক একটি প্রেজেন্টেশনও প্রত্যক্ষ করেন।

ডেপুটি স্পিকার শামসুল হকের সঙ্গে থাকা এমপিরা হলেন, নূরুজ্জামান বিশ্বাস, শাহিন আক্তার, খালেদা খানম, শিরীন আহমেদ, জিন্নাতুল বাকিয়া, বাসন্তী চাকমা, শামসুন নাহার, নার্গিস রহমান, মনিরা সুলতানা, নাদিরা ইয়াসমিন, রত্না আহমেদ, সালমা চৌধুরী, সেলিনা ইসলাম ও ডরথী রহমান।

ডেপুটি স্পিকারের নেতৃত্বে রূপপুরে নির্মাণাধীন পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প পরিদর্শন

পরে তাদের সৌজন্যে শহরের ইসলামপুর (ভূতেরগাড়ি) এলাকায় পাবনার ঈশ্বরদী পৌরসভা জামায়াতের আমির ও আরআরপি ফিড মিলের অন্যতম মালিক গোলাম আজমের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হয়। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শন শেষে ডেপুটি স্পিকারসহ উপস্থিত সংসদ সদস্যরা গোলাম আজমের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ সম্পন্ন করেন এবং কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেন। পরে তারা সেখানে একটি গাছের চারাও রোপণ করেন। তবে একটি সূত্র জানিয়েছে, দলে ১৭ জন এমপি থাকলেও তাদের কেউ কেউ আগেই বিদায় নিয়েছিলেন।

পাবনা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ইকবাল হোসাইন এ বিষয়ে বলেন, আমরা বরাবরই সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোতে অংশগ্রহণ করি, সেখানে এমপি, মন্ত্রীরাও আসতে পারেন। এতে দোষের কিছু নেই।

এ বিষয়ে গোলাম আজমের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তার ভাতিজা ও আরআরপি গ্রুপের পরিচালক রফিকুল আলম বলেন, ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক সম্পর্কে আমার মামা হন। তাই তিনিসহ এমপি মহোদয়েরা আমাদের নিমন্ত্রণে এসেছিলেন।

তবে বিষয়টি নিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের মধ্যে। এ বিষয়ে ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বলেন, আরআরপি গ্রুপের মালিক গোলাম আজমের প্রতিষ্ঠানে ডেপুটি স্পিকার আমন্ত্রিত ছিলেন বলে আমিও গিয়েছিলাম। তবে এটি কোনো রাজনৈতিক অনুষ্ঠান ছিল না।

অন্যদিকে ঈশ্বরদী পৌর যুবলীগের সভাপতি মো. আলাউদ্দিন বলেন, সরকারদলীয় এমপিদের আর খাওয়ার জায়গা ছিল না, তাদেকে জামায়াত নেতার বাড়িতে খেতে হলো! বিষয়টি খুবই লজ্জাজনক।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল রহিম বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তাই বলারও কিছু নেই। আর ডেপুটি স্পিকার বিষয়টি সম্পর্কে বলেন, তাদের খাবারের আয়োজনের দায়িত্ব ছিল স্থানীয় এমপির। তিনিই এ বিষয়ে ভালো জানেন। তবে পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী) আসনের সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান বিশ্বাস জানিয়েছেন, সংসদ সদস্যদের সফর ও খাবারের বিষয়টি ছিল জাতীয় সংসদের ব্যবস্থাপনায় হয়েছে। তাদের আমন্ত্রণেই রূপপুর প্রকল্প পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। আরআরপি গ্রুপের নিমন্ত্রণ পেলেও আমি সেখানে যাইনি। জরুরি কাজে ঢাকায় চলে এসেছি।