আফগানিস্তানের বিপক্ষে একাদশে থাকবেন তো বিজয়?

লম্বা সময় পর আবারও জাতীয় দলে ফিরেছেন আনামুল হক বিজয়। সবশেষ গত বছরের ডিসেম্বরে ভারতের বিপক্ষে হোম সিরিজে খেলেছিলেন কুষ্টিয়ার এই ক্রিকেটার। এবার মূলত আনামুলকে দলে ফেরানো হয়েছে লিটন কুমার দাসের বদলি হিসেবে।

আনামুল হক বিজয়

জ্বরের কারণে পুরো এশিয়া কাপ থেকে ছিটকে গেছেন লিটন। এজন্য বিজয়কে শ্রীলঙ্কায় পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। এই বিষয়টা সবাইকে অবাক করে দিয়ে গেছে। দেওয়াটাই তো স্বাভাবিক।

সবশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ, ডিপিএলে আবাহনী লিমিটেডের হয়ে ব্যাট হাতে দারুণ সময় পার করেছেন বিজয়। টুর্নামেন্ট শেষ করেছেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮৩৪ রান করে। হাঁকিয়েছিলেন সমান তিনটি করে সেঞ্চুরি এবং ফিফটি। এ সময়ে স্ট্রাইকরেটে ছিল ৯৭.৩১। যেটা আধুনিক ক্রিকেটের জন্য খুবই উপযোগী।

ডিপিএলে এমন পারফরম্যান্স করেও এশিয়া কাপের প্রাথমিক দলে জায়গা পাননি বিজয়। খুব স্বাভাবিকভাবে মূল দলেও ছিলেন না। এমনকি ব্যাকআপ হিসেবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড যে আটজন ক্রিকেটারকে আলাদাভাবে প্রস্তুত করে রাখছে সে তালিকাতেও নেই বিজয়ের নাম।

মূল দলে বিজয় নাও থাকতে পারে। হয়ত কম্বিনেশনের বিবেচনায় তাকে এশিয়া কাপের জন্য নির্বাচকরা তাকে বিবেচনা করেননি। তাই বলে ডিপিএলে দারুণ ফর্মে থাকার পরও বিজয়কে নিয়ে এমন অবিচার সেটা মেনে নিতে পারেননি সমর্থকরা। বিষয়টা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক ঝড়ও হয়েছে।

সব ঝড় থেমেছে লিটনের জ্বর না কমায়। লিটন যেতে না পারায় দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে বিজয়কে শ্রীলঙ্কার বিমানে তুলে দিয়েছে ক্রিকেট বোর্ড। অথচ টিম ম্যানেজমেন্টের কোনো পরিকল্পনাতেই ছিলেন না এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। এমন একজনকে দলে নিয়ে সবাইকে রীতিমতো চমকে দিয়েছে বিসিবি। যদিও এর পক্ষে যুক্তি দাঁড় করিছেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।

এশিয়া কাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ছিল ৩১ আগস্ট শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। তার আগের দিন বদলি হিসেবে ডাক পেয়ে দলের সঙ্গে যোগ দেন বিজয়। তাই ভ্রমণক্লান্তি থাকায় লঙ্কানদের বিপক্ষে সে ম্যাচের একাদশে রাখা হয়নি বিজয়কে। তাছাড়া তরুণ তানজিদ হাসান তামিম ও নাঈম শেখের ওপর ভরসা রাখতে চাইছিল বাংলাদেশ দল।

জোর আলোচনা ছিল, লিটনের অনুপস্থিতিতে অনভিষিক্ত তানজিদ ও নাঈমকে দিয়েই ইনিংসের গোড়াপত্তান করাবে বাংলাদেশ। ম্যানেজমেন্টের এই সিদ্ধান্তে পুরোপুরি ব্যর্থ লাল সবুজের দল। শ্রীলঙ্কার কাছে ৫ উইকেটে হেরে এশিয়া কাপের মিশন শুরু করেছে টাইগাররা।

এদিন বাংলাদেশের সংগ্রহটা ছিল একেবারেই সাদামাটা। আগে ব্যাট করে ৪২.৪ ওভারে ১৬৪ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। দলের ব্যাটিংয়ের এমন ছন্নছাড়া অবস্থার পেছনে বড় দায় বর্তায় দুই ওপেনার তানজিদ ও নাঈমের ওপর। দলীয় ৪ রানেই ফেরেন তানজিদ। 

অভিষেক ম্যাচে রানের খাতা খুলতে পারেননি তানজিদ। মাহেশ থিখসানার বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই সাজঘরে ফিরেছেন তিনি। তানজিদ ফেরায় দ্বায়িত্ব ছিল নাঈমের কাঁধে। এর আগে তিনটা ওয়ানডে খেলা নাঈমও সে দায়িত্ব পালন করতে পারেননি।

২৩ বলে ১৬ রান করে আউট হয়েছেন নাঈম। স্ট্রাইকরেট ৬৯.৫৭। দুই ওপেনারের এমন ব্যর্থতার পর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। ফলশ্রুতিতে যা হওয়ার ছিল তাই হয়েছে।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ওপেনারের এমন ব্যর্থতার পর অনুমিতভাবেই চিন্তিত ম্যানজেমেন্ট। আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে ওপেনিংয়ে একটা পরিবর্তন আনার সুযোগ আছে সাকিব, হাথুরুসিংহেদের সামনে। আর শেষ পর্যন্ত যদিও ওপেনিংয়ে পরিবর্তন আনাই হয় তাহলে সে জায়গাটি নেবেন বিজয়। কারণ এই ডানহাতি ছাড়া এই মুহূর্তে দলে আর কোনো বিকল্প ওপেনার নেই। ইনজুরির কারণে আগে থেকেই দলের বাইরে আছেন তামিম ইকবাল খান।

অবশ্য কোচ এবং অধিনায়ক ওপেনিংয়ে পরিবর্তনের কথা চিন্তা না করলেও অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না। হয়ত তানজিদ ও নাঈমকে আরও একটা সুযোগ দিলেও দিতে পারেন তারা। অনেক ক্ষেত্রেই তো মাত্র একটা ম্যাচ দেখে দলে পরিবর্তনের কথা ভাবা হয় না। তাই এশিয়া কাপে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ম্যাচে একাদশে বিজয়ের থাকা এবং না থাকার সমান সম্ভাবনা আছে।