আপনি পড়ছেন

পার্স বা মানিব্যাগে প্রায় আধা ডজন বা তার বেশি কার্ড বহন করা এবং অর্থপ্রদান করার জন্য সঠিক কার্ডটি খুঁজে বের করা অনেক ঝামেলার কাজ। আর এজন্য অনেক সময়ও নষ্ট হয়। শিগগিরই এই কষ্টের অবসান ঘটতে যাচ্ছে। এমন একটি কার্ড আসতে যাচ্ছে যা সব ধরনের বিল দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে।

rapid passবাস্তব হতে চলেছে সমস্ত পরিবহনের জন্য একটি কার্ড

ঢাকার বাসিন্দারা শিগগিরই একটি সমন্বিত বিল প্রদানের সুবিধা নিতে পারবেন। কারণ এই একটি কার্ড ব্যবহার করেই তারা ইউটিলিটি বিল, রাস্তা ও সেতুর টোল থেকে শুরু করে সুপারমার্কেটে কেনাকাটা এবং শিক্ষার্থীদের বেতন পরিশোধ করতে সক্ষম হবেন।

বহুমুখী এই কার্ডটির নাম ‘র‍্যাপিড পাস’। বেশ কয়েকটি সরকারি পরিষেবার বিল দেওয়ার ক্ষেত্রেও এই কার্ডটি ব্যবহার করা যাবে। ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড এবং মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) অ্যাকাউন্ট থেকে কার্ডটি রিচার্জ করা যাবে।

সরকার দেশের পাবলিক ট্রান্সপোর্ট নেটওয়ার্কের মধ্যে একটি সর্বব্যাপী স্মার্ট টিকিটিং সিস্টেম চালু করার পরিকল্পনা করেছে। তাই র‌্যাপিড পাসের ব্যবহার বাড়ানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। পাঁচ বছর আগে এই স্মার্ট কার্ডটি রাজধানীতে সীমিত পরিসরে চালু করা হয়েছিল।

সম্প্রতি সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক সচিব এবং সরকারের পরিবহন সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠকে র‌্যাপিড পাসকে সর্বাত্মক স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই পাসের মাধ্যমে যাত্রীরা নির্বিঘ্নে সারা দেশে ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি), বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি), বিআরটিসি বাস, সরকারি ও বেসরকারি উভয় বাস, নৌ পরিবহন এবং ট্রেনসহ বিদ্যমান পরিবহন পরিষেবার সব ধরনের ভাড়া পরিশোধ করতে পারবেন।

র‌্যাপিড পাস হলো একটি স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় ভাড়া পরিশোধের ব্যবস্থা। বর্তমানে ঢাকা মেট্রো রেলের যাত্রীরা এটি ব্যবহার করছেন। আগামী অক্টোবর মাস থেকে বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) এবং বিআরটিসি বাস সার্ভিসে র‌্যাপিড পাস চালু হবে।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব আমিন উল্লাহ নূরী জানিয়েছেন, মেট্রোরেল ও বিআরটিতে র‌্যাপিড পাস পাইলটিং করা হয়েছে। এখন এটি বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডাব্লিউটিসি), রেলওয়ে এবং অন্যান্য খাতে চালু করা হবে।

তিনি বলেছেন, ‘সমস্ত পরিবহনের জন্য একটি কার্ড বা র‍্যাপিড কার্ড চালু করার মূল উদ্দেশ্য হলো ক্যাশলেস বা নগদ টাকা ছাড়া লেনদেন চালু করা। এতে মানুষের সময় বাঁচবে। এটি ঝামেলামুক্ত ভ্রমণ নিশ্চিত করবে এবং গণপরিবহনে স্বচ্ছতা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব আদায় বাড়াবে।'

ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) এসব কার্যক্রম সমন্বয় করবে। ডিটিএসএ এর ক্লিয়ারিং ব্যাংক ডাচ বাংলা ব্যাংকের নির্দিষ্ট কিছু শাখায় গ্রাহকের নাম ও মোবাইল নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করলে মাত্র ৪০০ টাকায় র‌্যাপিড পাস কার্ড পাওয়া যাবে। চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত ঢাকায় প্রায় ৬৬ হাজার ১৮০ জন এই কার্ড পেয়েছেন। প্রতি মাসে কার্ডধারীর সংখ্যা ২০ শতাংশ হারে বাড়ছে।

সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা পরিবহনের ভাড়া আদায় নিশ্চিত করবে। এছাড়া যাত্রা শুরু ও গন্তব্যের (অরিজিনেশন- ডেস্টিনেশন বা ওডি) ডাটা তৈরি করবে। এটি বাস্তবসম্মত কৌশলগত নগর পরিবহন পরিকল্পনার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, কয়েক বছর ধরে র‌্যাপিড পাস চালুর উদ্যোগ চলছে। এই উদ্দেশ্যে ডিটিসিএ দ্বারা পরিচালিত একটি প্রকল্পের অধীনে ট্রান্সপোর্ট ক্লিয়ারিং হাউজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই প্রকল্পের আওতায় বিআরটিসি, এইচআর ট্রান্সপোর্ট, ঢাকা চাকা এবং ওমামা বাস সার্ভিসে পরীক্ষামূলকভাবে র‌্যাপিড পাসের মাধ্যমে ভাড়া আদায় ও নিষ্পত্তি করা হয়েছে।

যেখানে র‍্যাপিড পাস পাবেন

আপাতত গ্রাহকরা ডাচ বাংলা ব্যাংকের শাখা এবং ডিটিসিএ অফিস থেকে এই কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন। জনসাধারণ যাতে সহজে এসব কার্ড সংগ্রহ করতে পারে সেজন্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকসহ সব ব্যাংক থেকে এ কার্ড দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক।

কার্ডটি ব্যবহারের নিয়ম

বাস, ট্রেন ও লঞ্চের কাউন্টারে এই কার্ড পাঞ্চ বা ট্যাপ করার ব্যবস্থা থাকবে। পরিবহনগুলোতে বিশেষ ডিভাইস থাকবে, যেখানে যাত্রীরা গন্তব্য উল্লেখ করে তাদের ভাড়া পরিশোধ করতে পারবেন এবং রসিদ নিতে পারবেন।

কার্ডটি পরিবহনে ওঠা এবং নামা উভয় ক্ষেত্রেই ব্যবহার করতে হবে। অন্যথায়, পরবর্তী যাত্রায় এটি ব্যবহার করা যাবে না।

এই প্রকল্পের পরিচালক মামুনুর রহমান জানিয়েছেন, ভাড়ার টাকা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্ড থেকে কেটে নেওয়া হবে এবং ক্লিয়ারিং হাউজে জমা করা হবে। সেখান থেকে সপ্তাহ শেষে কোন পরিবহনের মাধ্যমে কত টাকা জমা হয়েছে তা হিসাব করে সংশ্লিষ্ট পরিবহনের মালিক বা কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হবে।

প্রকল্পের আওতায় আর কী করা হবে?

ক্লিয়ারিং হাউজে বাস পরিষেবার জন্য সর্বাধিক ১ হাজার বাস ভ্যালিডেটর এবং কার্ডের জন্য একটি ডিভাইসের ব্যবস্থা করা হবে। ডিভাইসগুলোর মূল্য প্রাক্কলন করা হয়েছে সর্বাধিক ১ হাজার ৩০০ ডলার। এই ক্লিয়ারিং হাউজের মাধ্যমে ভাড়া নিষ্পত্তি ও বণ্টন করা হবে। এজন্য পাবলিক ট্রান্সপোর্ট অপারেটরদের (বাংলাদেশ রেলওয়ে, আরডিএইচ, বিআরটিসি, বিবিএ এবং ডিএমপি) ক্লিয়ারিং হাউজ সিস্টেমের সঙ্গে যুক্ত হতে হবে।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ মনে করছে, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেল সার্ভিস চালু হলে প্রতিদিন প্রায় ৪ লাখ ৮৩ হাজার মানুষ এই আধুনিক পরিবহনে যাতায়াত করবে। গত জুনে প্রতিদিন গড়ে ৭৭ হাজার যাত্রী মেট্রোরেলে যাতায়াত করেছেন।

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.