মির্জা ফখরুল: সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরব না

সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত রংপুর থেকে শুরু হওয়া রোডমার্চ চলবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘যখন আমরা এই সরকারকে উৎখাত করতে পারব, সেদিনই রোডমার্চ শেষ হবে। এই সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরব না।’

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (ছবিতে গোল চিহ্নিত)

শনিবার বিকেলে রংপুর থেকে দিনাজপুরের উদ্দেশে শুরু হওয়া ‘তরুণদের রোড মার্চ’ উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন। বিএনপির সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল এ রোডমার্চের আয়োজন করে।

রংপুর গ্র্যান্ড হোটেল মোড়ে রোডমার্চ উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। সঞ্চালনা করেন যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, রংপুরে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর ঐতিহ্য রয়েছে। ব্রিটিশ শাসনামলে রংপুরে তেভাগা আন্দোলন হয়। রংপুরের কৃতী সন্তান নুরুলদীন আন্দোলনের ডাক দেন।

তিনি আরও বলেন, এই স্বৈরাচারী ও লুটেরাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য রংপুর থেকে হাজার হাজার তরুণ বাংলাদেশের জনগণকে ডাকছে। এই সরকারের পতনের জন্য রংপুর থেকে রোডমার্চের ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, এই আওয়ামী লীগ সরকার নানা কৌশলে ও বলপ্রয়োগের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে আছে। তারা পরিকল্পিতভাবে গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠানোর চেষ্টা করছে। আজ বাংলাদেশের মানুষ ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে না।

তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের মানুষ আজ অসহায়। তেল, লবণসহ সবকিছুর দাম বেড়েছে। এছাড়া মানুষ বিদ্যুৎ পায় না এবং কৃষকরা তাদের জমিতে সেচ দিতে পারে না।

এই সরকার লাগামহীন দুর্নীতিতে লিপ্ত হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, অর্থনীতির অবনতি হচ্ছে এবং রিজার্ভ কমছে। তরুণরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এবং তাদের কোনো কর্মসংস্থান নেই।

ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার গত ১৫ বছরে পরিকল্পিতভাবে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। তাই আমরা শান্তিপূর্ণভাবে দাবি আদায়ের চেষ্টা করছি। আমরা স্পষ্ট বলেছি এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে।’

রংপুরবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনি কি ২০১৪ সালে ভোট দিতে পেরেছিলেন? পারেননি। ১৫৩ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। একটি সরকারের অধীনে জনগণ ভোট দিতে পারে না, নির্বাচন হতে পারে না। শুধু বিএনপি নয়, সব রাজনৈতিক দল ঘোষণা করেছে এই সরকারের অধীনে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য নয়। বামপন্থী জোট বা কমিউনিস্ট পার্টি আমাদের সঙ্গে নেই। তারাও ঘোষণা করেছে এই সরকারের অধীনে তারা নির্বাচনে অংশ নেবে না। 

এদিকে সকাল ৮টা থেকে রংপুরে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও গাইবান্ধা জেলার গাড়ি, মাইক্রোবাস, মিনিবাস ও মোটরসাইকেলে নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। তারা স্লোগান দিচ্ছিল। তারা বিএনপি কার্যালয়ের প্রধান সড়কে অবস্থান নেন।

এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধন শেষে রংপুর থেকে দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে বাস, মাইক্রোবাস, পিকআপ, মোটরসাইকেল নিয়ে একটি রোডমার্চ রওয়ানা হয়। দিনাজপুরে রোডমার্চ শেষ হবে।