ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় তুরস্কের কাঠের মসজিদ

তুরস্কের আনাতোলিয়া অঞ্চলে কাঠের ব্যবহারে নির্মিত হাইপোস্টাইল মসজিদগুলো ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় যুক্ত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ইউনেস্কোর ওয়েবসাইট অবলম্বনে এ খবর জানিয়েছে তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলু।

আনাতোলিয়ার একটি কাঠের মসজিদ

তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতির বরাত দিয়ে খবরে খবরে বলা হয়, সৌদি আরবের রিয়াদে বসেছে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির ৪৫তম অধিবেশন। ১০ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া এ অধিবেশন চলবে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এ অধিবেশনে মঙ্গলবার পর্যন্ত ৩৫টি সাংস্কৃতিক ও প্রাকৃতিক ঐতিহ্য যুক্ত করা হয়েছে।

এর মধ্যে আনাতোলিয়ার কাঠের মসজিদগুলো সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় যুক্ত হওয়ার মনোনয়ন পেয়েছে। এসব মসজিদ ১৩ থেকে ১৪ শতকের মাঝামাঝি সময়ে নির্মিত হয়েছে। তুরস্কের পাঁচটি ভিন্ন প্রদেশে মসজিদগুলোর অবস্থান। এগুলো হচ্ছে, পশ্চিম আফিয়ন প্রদেশের গ্র্যান্ড মসজিদ, কেন্দ্রীয় এস্কিসেহির প্রদেশের সিভরিহিসার গ্র্যান্ড মসজিদ, রাজধানী আঙ্কারার আহি শেরেফদ্দিন (আসলানহেন) মসজিদ, মধ্য কোনিয়া প্রদেশের বেসেহির জেলার এসরেফোগলু মসজিদ এবং উত্তর কাস্তামোনু প্রদেশের মাহমুদ বে মসজিদ।

একটি মসজিদের ছাদের নকশা

পশ্চিম আফিয়ন প্রদেশের গ্র্যান্ড মসজিদটি হাসান নুসরতুদ্দিনের নির্দেশে ১২৭২ সালে নির্মিত হয়েছিল। রাজধানী আঙ্কারার আহি শেরেফদ্দিন (আসলানহেন) মসজিদটি ১২৯০ সালে সেলজুকদের দ্বিতীয় মেসুদের সময়কালে নির্মিত হয়। মধ্য কোনিয়া প্রদেশের বেসেহির জেলার এসরেফোগলু মসজিদটি ১৩শ শতাব্দীর একটি মসজিদ। ১২৯৬ সালে সুলেমান বে বেইলিক আমলে নির্মিত মসজিদগুলোর মধ্যে শ্রেষ্ঠ এই মসজিদের নির্মাণকাজ শুরু করেছিলেন। কেন্দ্রীয় এস্কিসেহির প্রদেশের সিভরিহিসার গ্র্যান্ড মসজিদটি আনাতোলিয়ান সেলজুক সুলতান কায়কুবাদ প্রথমের শাসনামলে ১২৩১-১২৩২ সালে লেকার আমির সালাউদ্দিন দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। অন্যদিকে উত্তর কাস্তামোনু প্রদেশের মাহমুত বে মসজিদটি কাসাবা গ্রামের একটি ঐতিহাসিক মসজিদ, যা ১৩৬৬ সালে আনাতোলিয়ান রাজবংশের মাহমুদ বে দ্বারা নির্মিত হয়েছিল।

কাঠের ব্যবহারের কারণে মসজিদগুলো অনন্য। দীর্ঘকাল হয়ে গেলেও এসব কাঠের মসজিদ এখনও অক্ষত রয়েছে। মসজিদগুলোর বাইরের অংশে গাঁথনি, দেয়াল, কলাম কাঠের তৈরি। এছাড়া এসব মসজিদের ছাদেও কাঠ ব্যবহার করা হয়েছে। এসব মসজিদে বিভিন্ন আসবাবপত্রেও নিপুণ হাতের কাঠের কাজ ও হস্তশিল্প লক্ষ্য করা যায়। প্রতি বছর প্রচুর দর্শক তুরস্কের এসব মসজিদ পরিদর্শন করেন।