বিশ্বমঞ্চে প্রথমবার মুখোমুখি আফগানিস্তান ও নেদারল্যান্ডস

সেমিফাইনালের দৌড়ে এগিয়ে যেতে মাঠে নামছে আফগানিস্তান ও নেদারল্যান্ডস। বিশ্বকাপে এই প্রথম তারা মুখোমুখি হচ্ছে। ভারত বিশ্বকাপের ডার্কহর্স হয়ে উঠেছে আফগানরা। অন্যদিকে ২০১১ সালের পর এবারই প্রথম বিশ্বকাপে সুযোগ পেয়ে নিজেদের সবটা উজাড় করে দিচ্ছে ডাচরা। লখনউতে আজ দুপুর আড়াইটায় শুরু হবে ম্যাচটি।

সেমিতে খেলার স্বপ্ন দেখছে দুই দলই

দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ইতিহাস গড়েই ক্ষান্ত হয়নি নেদারল্যান্ডস। বাংলাদেশকে হারিয়ে স্বপ্ন দেখছে সেমিফাইনালে খেলার। সেমিতে জায়গা করে নিতে হলে জয়ের কোনো বিকল্প নেই দলটির সামনে। অপরদিকে বাংলাদেশের বিপক্ষে হার দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করলেও ইংল্যান্ড, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ইতিহাস গড়ার লক্ষে ছুটে চলছে আফগানিস্তান। ডাচদের হারাতে পারলেই সেমির পথে একধাপ এগিয়ে যাবে দলটি।

শক্তির বিচারে এগিয়ে আফগানিস্তান। দলে রয়েছে একঝাঁক তারকা ক্রিকেটার। ব্যাটিংয়ে যেমন রয়েছেন– রহমানুল্লাহ গুরবাজ, ইব্রাহিম জাদরান, রহমত শাহ, হাশমতুল্লাহ শাহিদিরা তেমনি বোলিংয়ে আছেন রশিদ খান, মুজিব উর রহমান, ফজলহক ফারুকীরা। অলরাউন্ডার হিসেবে দলের গুরুদায়িত্ব পালন করে চলছেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই, মোহাম্মদ নবীরা।

টুর্নামেন্টের হট ফেভারিট তিনটি দলকে হারালেও ম্যাচ বাই ম্যাচ এগুতে চান দলটির অধিনায়ক হাশমতুল্লাহ শাহিদি, ‘আমাদের সামনে তিনটি ম্যাচ। নেদারল্যান্ডসের পর অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলব আমরা। আমাদের ম্যাচ বাই ম্যাচ যেতে হবে। আমরা যেকোন দলকে হারাতে পারি। আপাতত নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে ভাবছি। তারা ভালো দল, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েছে। আমরা তাদের বিপক্ষে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে চাই।’

ডাচরা যে খুব বেশি পিছিয়ে, এমনও নয়। তাদের শক্তির মূল জায়গা বোলিং। ব্যাটিংয়ে এখন পর্যন্ত টপ অর্ডার ব্যাটাররা হতাশ করলেও গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ভয়ংকর হতে উঠতে পারেন ম্যাক্স ও'দাউড, কলিন অ্যাকারম্যানরা। দলের ভরসার নাম হয়ে আছেন অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস। আছেন বাস ডি লিডের মতো অলরাউন্ডার। বল হাতে আফগান টপ অর্ডারদের কাঁপন ধরাতে প্রস্তুত লোগান ফন বিক, পল ফন মিকেরেনরা।

আফগান চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত ডাচ অধিনায়ক। জানিয়েছেন জয় ছাড়া কিছুই ভাবছে না তার দল। আফগানদের বিপক্ষে ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে স্কট এডওয়ার্ডস বলেন, ‘এখন পর্যন্ত এই বিশ্বকাপ আমাদের কাছে স্মরণীয়। আমরা দক্ষিণ আফ্রিকা ও বাংলাদেশকে হারিয়েছি। এগুলো আমাদের অনুপ্রেরণা দিচ্ছে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে এগুলো কাজে লাগাতে চাই। সেমির দৌড়ে থাকতে হলে জয়ের কোনো বিকল্প নেই আমাদের সামনে।’

অতীত পরিসংখ্যানে আফগানিস্তান বেশ এগিয়ে। ওয়ানডে ক্রিকেটে ৯ বারের মুখোমুখি লড়াইয়ে আফগানিস্তানের জয় ৭টিতেই। নেদারল্যান্ডস জয় পেয়েছে মাত্র ২ ম্যাচে। তাও সেটা ২০০৯ এবং ২০১২ সালের কথা। ২০২২ সালে তিনবার মুখোমুখি হয়েছিল দল দুটি। তিনবারই হেসেছে আফগানরা।

অতীত পরিসংখ্যান আফগানিস্তানের পক্ষে কথা বললেও বিশ্বমঞ্চে যেকোনো কিছুই ঘটতে পারে। এক যুগ পর বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়া নেদারল্যান্ডস চাইবে অতীত ভুলে নতুন ইতিহাস গড়তে। বিশ্বমঞ্চে প্রথম দেখায় কে হাসবে শেষ হাসি! সেটাই এখন দেখার অপেক্ষায় ক্রিকেটপ্রেমীরা।