নাম পরিচয়হীন ৫০ বছর বয়সী এক নারী, যিনি নিজেকে গোটা পৃথিবীর মালিক দাবি করেন, তিনি ধান চাষ করেছিলেন মহাসড়কের ফেলে রাখা জায়গায়। মৌসুম শেষে সেখান থেকে পাওয়া গেছে তিন মণ ধান। ঘটনাটি ভারতের মুর্শিদাবাদের। খবর এবিপি।

woman cultivated paddyমহাসড়কের মাঝে ধানক্ষেত ও ধানের মালিক নারী

মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার বেসরকারি গাড়ি স্ট্যান্ডের উল্টো দিকে নির্মীয়মাণ জাতীয় সড়কের পাশে থাকেন ওই নারী। সবাই তাকে পাগলি হিসেবেই চেনে। থাকেন খোলা আকাশের নীচে এক টুকরো প্লাস্টিক মুড়ি দিয়ে। তিনিই মহাসড়কে ধান চাষ করে হৈ-চৈ ফেলে দিয়েছেন।

স্থানীয় গণমাধ্যমসূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গের যোগাযোগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। ‘ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অব ইন্ডিয়া’ বেশ কয়েক বছর আগে ওই জাতীয় সড়কের আরও দু’টি লেন সম্প্রসারণের কাজ শুরু করে। এর জন্য সংস্থাটি প্রায় দুই দশক আগে জমিও অধিগ্রহণ করেছিল। তবে সামান্য কিছু কাজ হওয়ার পর দীর্ঘদিন ধরে কাজ বন্ধ।

প্রকল্পের এই জায়গাগুলোর অনেক জায়গাতেই পানি জমে থাকে। গত কয়েক মাস আগেও বৃষ্টিতে সেখানে পানি জমে যায়। সুযোগটি কাজে লাগিয়ে ওই নারী সেখানে ধানচাষ শুরু করেন। খুব যে পরিকল্পিত ছিল তা নয়, তবে আশপাশের এলাকায় বেচে যাওয়া ধানের চারা এনে সেখানে লাগিয়েছেন। রাস্তার পাশে স্তূপ করে রাখা গোবরকে ব্যবহার করেছেন সার হিসেবে। তার এ কাজকর্মকে পাগলের কর্মকাণ্ড হিসেবেই দেখেছেন সবাই। তবে কিছুদিন আগে বৃষ্টি পেয়ে তার ‘ধানক্ষেত’ সবুজে ছেয়ে গেলে নজরে পড়ে সবার। বিশাল মহাসড়কের মাঝখানে ধানক্ষেত!

স্থানীয়রা জানান, নিজের ধানক্ষেত নিয়ে ওই নারী ছিলেন ভীষণ সতর্ক। দিনরাত পাহারা দিয়েছেন। এমনকি সেই ধানক্ষেতের ওপর দিয়ে পাখি উড়ে যাওয়ারও অনুমতি ছিল না বলে মন্তব্য করেন স্থানীয়রা।

জানা গেছে, এরই মধ্যে তার ক্ষেতের অর্ধেকের বেশি ধান পেকে গেছে। নিজেই সেগুলো ঝাড়াই মাড়াই করে বস্তাবন্দী করেছেন। বাকি অর্ধেক ধান তোলা হলে মোট তিন মণের মতো ধান হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পাঁচ বছর ধরে ওই এলাকায় থাকলেও কেউ তার নাম-পরিচয় জানতে পারেনি। কারো সঙ্গে কোনো সমস্যাও হয়নি। তবে তার সাম্প্রতিক এই কর্মকাণ্ডে কিছুটা বিব্রত প্রকল্পের কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের প্রকল্প কর্মকর্তা সুবীর মিশ্র বলেন, সরকারের অধিগ্রহণ করা জমিতে দখলদারি বেআইনি। কিন্তু ওই নারী যে কাণ্ড ঘটিয়েছেন, তাতে সত্যি বলতে আমরাও মুগ্ধ। আমরাও কেমন যেন এই ধানক্ষেতের মায়ায় পড়ে গেছি।

Discover extraordinary stories from around the world with our exceptional news coverage. From uplifting human interest stories to groundbreaking scientific discoveries, we bring you the best of the best. Stay informed about the latest breakthroughs in technology, medicine, and beyond, and explore the world's most fascinating cultures and communities. Get inspired and informed with our exceptional news coverage.