৪৮ বছর জেলে কাটিয়ে খুনের মামলায় নির্দোষ প্রমাণ

খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে ২২ বছর বয়সে জেলে ঢুকেছেন। ৪৮ বছর কারাবন্দি থাকার পর জানা গেল, তিনি খুন করেননি। এভাবে অর্ধশতাব্দী জেল খেটে মঙ্গলবার নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহোমার গ্লিন সিমন্স। খবর বিবিসির।

যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘতম অন্যায় সাজার শিকার গ্লিন সিমন্স

যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘতম অন্যায় সাজার শিকার ব্যক্তিদের অন্যতম গ্লিন সিমন্স অবশ্য গত জুলাইতে কারামুক্তি পেয়েছেন। ৭১ বছরের বৃদ্ধ সিমন্সকে মামলা থেকে অব্যহতি দেন ওকলাহোমা কাউন্টি জেলা বিচারক অ্যামি পালুম্বো।

মঙ্গলবার এক আদেশে ওই নারী বিচারক বলেন, এই আদালত সুস্পষ্ট ও বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছে, সিমন্সকে যে অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত, সাজা ও কারা অন্তরীণ করা হয়েছে ... সিমন্স সেই খুন করেননি।

১৯৭৪ সালে ওকলাহোমা সিটির একটি মদের দোকানে ডাকাতির সময় বিক্রয়কর্মী ক্যারোলিন স্যু রজার্স নিহতের ঘটনায় সিমন্স ও রবার্ট নামে আরেক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল আদালত। ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ এক কিশোরের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে দুজনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।

যদিও সিমন্সের দাবি, ওই ডাকাতি ও খুনের সময় তিনি ওকলাহামোতেই ছিলেন না। তখন নিজ রাজ্য লুইসিয়ানায় ছিলেন তিনি।

পরবর্তীতে মৃত্যুদণ্ডের বিষয়ে মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কারণে শাস্তি হ্রাস করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হিসেবে জেলে কাটাতে থাকেন সিমন্স ও রবার্ট।

রবার্ট ২০০৮ সালে প্যারোলে মুক্তি পেলেও কারাগারেই ছিলেন সিমন্স। দীর্ঘ ২৮ বছর এক মাস ১৮ দিন জেলে কাটিয়ে মুক্তি মেলে সিমন্সের।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল রেজিস্ট্রি অব এক্সোনরেশনস অনুসারে, এত বছর জেলে কাটানোয় তিনিই যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময়ের দণ্ডিত বন্দি।

গত জুলাইতে জেলা আদালতের নজরে আসে, বাদীপক্ষের আইনজীবীরা ওই মামলায় যথাযথ প্রমাণ-কাগজপত্র সরকারি দপ্তরে জমা দেয়নি।

এরপরই বিচারক ওই খুনের ঘটনায় নতুন বিচার শুরু করতে এবং গ্লিন সিমন্সকে মুক্তি দেওয়ার আদেশ দেন। গত সোমবার একজন কাউন্টি  অ্যাটর্নি আদালতকে জানান, ওই ঘটনার পক্ষে যথাযথ কোনো প্রমাণ নেই। এরপরই সিমন্সকে নির্দোষ ঘোষণা করেন বিচারক।

ভুলভাবে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিরা ওকলাহোমার আইন অনুযায়ী, ক্ষতিপূরণ হিসেবে পৌণে দুই লাখ ডলার জরিমানা পেতে পারেন। ৭১ বছরের সিমন্স বর্তমানে লিভার ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করছেন। তার কেমোথেরাপির জন্য অর্থসহায়তা তুলছে গো ফান্ড মি।