পররাষ্ট্রমন্ত্রী: আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, গোপনে কিছু হয়নি

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের সঙ্গে কোনো গোপন সমঝোতা হয়নি বলে জোর দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো চাপ অনুভব করিনি। চাপের বিষয়টি গণমাধ্যমে তুলে ধরা হয়। আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও সংঘাতমুক্ত নির্বাচনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। গোপনে কিছু হয়নি।’

এ কে আবদুল মোমেন

বুধবার বিকেলে সচিবালয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মোমেন এসব কথা বলেন। যদিও বিভিন্ন দেশ, বিশেষ করে পশ্চিমা দেশগুলো অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য জোর দিয়ে আসছে।

তিনি বলেন, ‘ভারত, আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন - তারা আমাদের বন্ধু এবং উন্নয়ন অংশীদার যাদের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক বিশেষভাবে শক্তিশালী, এবং আমরা শ্রমিকদের অবস্থার উন্নতির জন্য তাদের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানাই, তবে এটি অবশ্যই বাস্তবসম্মত হতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভারত আমাদের সম্পর্কের একটি সোনালী অধ্যায় বজায় রেখে আমাদের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে সাহায্য ও সহযোগিতা করেছে। ইউরোপ আমাদের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য বাজার এবং তারা আমাদের পণ্য কেনে।’

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বন্ধুপ্রতীম দেশগুলোর আকস্মিক নীরবতা এবং এটা কূটনৈতিক সাফল্য কিনা জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আমাদের নীতিতে বিশ্বাস করি। যে দেশগুলো নীতি মেনে চলে সেগুলোই সাধারণত পছন্দ করা হয়।’

তিনি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে বলেন, ‘এটি আমাদের লক্ষ্য এবং এটি পশ্চিমাদের লক্ষ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আমরা তাদের পাশে আছি। যদিও তারা (বিদেশিরা) পর্যবেক্ষণ করে, বিরোধী দল (বিএনপি) সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত, যা কেউ প্রশংসা করে না।’

নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমাদের চাপের জবাবে আবদুল মোমেন বলেন, ‘আমরা কখনো চাপ অনুভব করি না। মিডিয়া আমাদের চাপ দিচ্ছে। আমাদের মানসিক চাপ আমাদের নিজস্ব চাপ। একটি বিশ্বাসযোগ্য, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য আমরা নিজেরাই চাপ অনুভব করছি। আমরা বহিরাগত তাগিদ দিয়ে নয়, বিশ্বের কাছে এটি প্রদর্শন করতে চাই।’

মার্কিন সহায়তার কথা তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেন, ‘সহায়তা হলো যুক্তরাষ্ট্র তাদের দেশে যারা বাংলাদেশে নির্বাচন বয়কট বা প্রতিরোধ করবে তাদের অনুমতি দেবে না। কাউকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত তাদের। এতে আমরা সন্তুষ্ট। যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা করেছে যে তারা নির্বাচন বয়কট বা প্রতিরোধকারীদের জন্য ভিসা নীতি প্রয়োগ করবে। আমি খুব খুশি হব যদি তারা সত্যিকার অর্থে এটি বাস্তবায়ন করে। বিরোধী দল (বিএনপি) নির্বাচন বর্জন করছে, যুক্তরাষ্ট্র যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তা বাস্তবায়ন হলে ভালো হবে।’

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আওয়ামী লীগ মনোনীত ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জবাব দেন, "অবশ্যই এটা বিশ্বাসযোগ্য হবে। ভোটাররা অংশগ্রহণ করলে তা বিশ্বাসযোগ্য। যদি ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ১০-১৫ শতাংশ ভোটার ভোটের মতো নির্বাচন হয়, তাহলে তা বিশ্বাসযোগ্য হবে না। দেশের মানুষ তা প্রত্যাখ্যান করেছে; বিদেশি দেশগুলোও এটা মেনে নেবে না।"