প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক: একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ এডিবির

বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে নতুন সরকারের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-এডিবি। সংস্থাটির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিনটিং আজ বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে বৈঠকে এ আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। এ সময় টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান কান্ট্রি ডিরেক্টর।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে বৈঠক করেন এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিনটিং

এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টরের সঙ্গে বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি কে এম শাখাওয়াত মুন সাংবাদিকদের এ ব্যাপারে ব্রিফ করেন। এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টরের বরাত দিয়ে মুন জানান, প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন এডিমন গিনটিং । তিনি প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, শেখ হাসিনা টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় এডিবি খুবই খুশি।

বৈঠকে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর গিনটিং বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার পুনর্নির্বাচন বাংলাদেশের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত জরুরি ছিল। এডিবি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। অতীতের মতো আগামী দিনগুলোতেও সরকারের সঙ্গে একত্রে কাজ করতে প্রস্তুত এডিবি।

গিনটিং এসময় বাংলাদেশের জ্বালানি খাত ও জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, কক্সবাজারে জলবায়ু পুনর্বাসন প্রকল্পে কার্যক্রম সম্প্রসারণ করতে চায় এডিবি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এডিবিকে ধন্যবাদ জানিয়ে বৈঠকে বাংলাদেশের জন্য এডিবির সহায়তা অব্যাহত রাখার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে বলেন, জলবায়ু ঝুঁকি এবং জলবায়ু জরুরি অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ এডিবির জলবায়ু অর্থায়নের একটি বড় অংশ পাবে বলে প্রত্যাশী। আশা করি, আপনারা সমর্থন অব্যাহত রাখবেন।

বর্তমানে এডিবি বাংলাদেশের অর্থনীতির সাতটি প্রধান খাতে ৬১টি প্রকল্পে অর্থায়ন করছে। এরমধ্যে রয়েছে পরিবহন, পানি ও শহুরে অবকাঠামো এবং সেবা, জ্বালানি, মানব ও সামাজিক উন্নয়ন, কৃষি, খাদ্য, প্রাকৃতিক ও গ্রামীণ উন্নয়ন, অর্থ, সরকারি খাত ব্যবস্থাপনা এবং শাসন খাত।

শেখ হাসিনা এডিবিকে বাংলাদেশের অর্থনীতির গ্রাজুয়েশন চ্যালেঞ্জের চাহিদা পূরণে প্রকল্প হাতে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আশা করছি, এডিবি বাংলাদেশের অগ্রাধিকার খাতগুলোতে অর্থায়ন অব্যাহত রাখবে যাতে দেশের প্রবৃদ্ধির গতি বজায় থাকে এবং একটি 'স্মার্ট বাংলাদেশের' ভবিষ্যত রূপকল্প বাস্তবায়ন সহজ হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি যেহেতু উচ্চ প্রবৃদ্ধির পথে অগ্রসর হচ্ছে, তাই এটা আকাঙ্খিত যে এডিবি এমন প্রকল্প হাতে নেয়ার জন্য বড় ধরনের সহযোগিতা দেবে যা ডিজিটাল গ্যাপ কমিয়ে দেবে, বাণিজ্য প্রতিযোগিতা ত্বরান্বিত করবে, উন্নত ও কম কার্বন প্রযুক্তি হস্তান্তর করবে, সবুজ শক্তি উৎপাদন করবে, জলবায়ু-সহনশীল কৃষির সম্প্রসারণ ঘটাবে, রপ্তানি বহুমুখীকরণ, স্মার্ট সিটি গড়ে তোলা এবং দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।

তিনি বলেন, চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতি ও বিশ্ব অর্থনীতির সার্বিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় অতিরিক্ত আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন হতে পারে বাংলাদেশের।

অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মো. জিয়াউদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।