উপজেলা নির্বাচন রোজার আগে না পরে, দ্বিধায় ইসি

এবার উপজেলা নির্বাচনের ভোট রমজানের আগে নাকি পরে নেওয়া হবে, এ ব্যাপারে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রোজার আগেই ভোট শুরু করার নীতিগত সিদ্ধান্ত হলেও রমজানের আগে এসএসসি পরীক্ষা এবং পরে বর্ষাকাল ভাবাচ্ছে ইসিকে। আর সেজন্যই উপজেলা নির্বাচন ইস্যুতে আজ রবিবার (২১ জানুয়ারি) অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে মিলিত হতে যাচ্ছে ইসি।

এবার উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার অপেক্ষায় নির্বাচন কমিশন

এবার যে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হবে সেটি ৬ষ্ঠতম। সারা দেশে বর্তমানে উপজেলা পরিষদ রয়েছে ৪৯৫টি। ২০১৯ সালে পঞ্চম উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মেয়াদের পাঁচ বছর পেরিয়ে এখন নির্বাচন করার উপযোগী হয়েছে ৪৫২টির।

২০১৯ সালে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ওই বছরের মার্চ থেকে শুরু হয়ে পাঁচ ধাপে ভোট হয়। এভাবে ৪৫৫টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন শেষ হয় জুনে। এর মধ্যে মার্চেই হয়েছিল চারটি ধাপের ভোট।

ইসি আইন অনুযায়ী উপজেলা পরিষদের মেয়াদ পূর্তি হওয়ার আগের ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। সে অনুযায়ী, এখন ৪৫২টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের উপযোগী হয়ে আছে। এসব উপজেলায় চলতি বছরের জুনের মধ্যেই নির্বাচন করতে হবে।

ইসির বিভিন্ন শাখার তথ্যমতে, অনেক উপজেলা চেয়ারম্যান পদত্যাগ করে গত ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার শূন্য হয়েছে ৫০টির বেশি উপজেলা পরিষদ।

সূত্রমতে, আগামী মার্চে রমজান মাস শুরুর আগে প্রথম ধাপে উপজেলা পরিষদ ভোট করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ইসি। কিন্তু মাধ্যমিক পরীক্ষার সময়সূচি ঘোষণা হওয়ার পর রোজার আগে নির্বাচন করা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে।

সূত্রমতে, ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হবে। আর ৬ থেকে ১২ মার্চ সাপ্তাহিক ছুটি ব্যতীত প্রতিটি কর্মদিবসে পরীক্ষা রয়েছে। চাইলে পরীক্ষার এ সূচির সঙ্গে সমন্বয় করে রোজার আগে এক দফা ভোট নিতে পারে ইসি। একইভাবে রোজার পর ঈদ-পরবর্তী এক সপ্তাহের গ্যাপে গ্যাপে তিন থেকে চার ধাপে ভোট সম্পন্ন করা যায়।

ইসি সূত্র জানিয়েছে, দুটি প্রস্তাবনা সামনে রেখে ইসির সিদ্ধান্তের জন্য নথি উত্থাপন করা হয়েছে। আজ রবিবার ইসির দপ্তরে দপ্তরে ওই নথির প্রাথমিক সম্মতি মিলতে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নির্বাচন কমিশনার জানান, এর বাইরে জটিলতা এড়াতে ইসি নিজেদের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চালাতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে বসতে পারে। সেখানে বিস্তারিত আলোচনার পর সিদ্ধান্তে উপনীতি হলে দ্রুতই ইসি সভা ডেকে তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে।

ইসিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সরঞ্জাম কেনার সঙ্গেই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রয়োজনীয় জিনিস কেনাকাটা হয়েছে। ভোটার ও ভোটকেন্দ্রও চূড়ান্ত। এখন অপেক্ষা শুধু তফসিল ঘোষণার।