হজের নিবন্ধন করতে গিয়ে জানলেন তিনি ‘মৃত’!

রায়পুর উপজেলার ৭৫ বছর বয়সী মো. তছলিম নামের এক বৃদ্ধ হজের নিবন্ধনের জন্য কাগজপত্র সংগ্রহ করতে গিয়ে হতবাক হয়েছেন যখন তিনি জানতে পারেন যে তিনি 'মৃত' বলে চিহ্নিত। বুধবার (৩১ জানুয়ারি) সকালে তিনি যখন তার জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) অনলাইন কপি সংগ্রহ করতে যান তখন এই তথ্য জানতে পারেন।

মো. তছলিম

স্থানীয় বাজারের কম্পিউটার দোকানে তাকে জানানো হয় যে তার এনআইডির স্ট্যাটাসে তাকে 'মৃত' দেখানো হচ্ছে। পরে আরও কয়েকটি দোকানে গেলেও একই ফল পাওয়া যায়। অবস্থা দেখে তিনি নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে পরিচয়পত্রের অনুলিপি তুলতে যান। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তার এনআইডি প্রিন্ট করে দেখেন, সেখানেও তার স্ট্যাটাস 'মৃত' লেখা রয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে রায়পুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ ফয়সাল আলম দ্রুততম সময়ের মধ্যে 'মৃত'র তালিকা থেকে মো. তছলিমের নাম সরানোর আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, "মো. তছলিম তার ছেলেকে নিয়ে আমার কার্যালয়ে পরিচয়পত্রের অনুলিপির জন্য আসলে আমি সার্ভারে সার্চ দিয়ে দেখি, তিনি ডেড ভোটার। হজ নিবন্ধনের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র এবং অনলাইন যাচাইয়ের অনুলিপি প্রয়োজন। কিন্তু মৃত ভোটার হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ায় তার বর্তমান এই পরিচয়পত্রের অনুলিপি কাজে লাগবে না। বিষয়টি আমরা সংশোধন করতে পারব না। তবে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে আবেদন করা হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে সংশোধন করে দেওয়া হবে।"

এবার আর হজে যাওয়া হচ্ছে না তছলিমের

চরআবাবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাওলাদার নূরে আলম জিকু বলেন, "এখন অনেক কাজেই জাতীয় পরিচয়পত্র এবং অনলাইন যাচাইয়ের অনুলিপি প্রয়োজন হয়। মো. তছলিম অনলাইন যাচাই করতে গেলে তার জাতীয় পরিচয়পত্রের অনুলিপি পাওয়া যায়নি। আমি তাকে 'জীবিত আছেন' মর্মে প্রত্যয়নপত্র দিয়েছি। নির্বাচন কমিশনে গেলে এটি সংশোধন হয়ে যাবে। তবে সময় শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে এবার মো. তছলিম আর হজের সুযোগ পাবেন না।"

ভুক্তভোগী মো. তছলিম হতাশার সাথে বলেন, "হজের নিবন্ধন করতে গিয়ে দেখি জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি কার্ড) অনলাইন কপির প্রয়োজন পড়েছে। সেটি তুলতে গিয়ে দেখি আমি 'মৃত'। নির্বাচন অফিস থেকে অনেক কষ্ট নিয়ে বাড়ি ফিরেছি।

ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ বছর বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের হজে যাওয়ার কোটা ছিল। তবে কয়েক দফা সময় বাড়ানোর পরও গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত নিবন্ধন করেছেন ৬৯ হাজার ৬৩৪ জন। খালি থেকে গেছে কোটার ৫৭ হাজার ৫৬৪টি ইউনিট।