বাংলাদেশের এতো পর্যটক কেন ভারতগামী?

ভারতের ভিসা পাওয়া নিয়ে নানা জটিলতার অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও দেশটির পর্যটন শিল্পে বর্তমানে একটি বড় অবদানকারী দেশ হিসেবে উঠে এসেছে বাংলাদেশের নাম। বিদেশী পর্যটকদের তালিকায় দশ বছর আগে শীর্ষ দশের তালিকায় বাংলাদেশের নাম না থাকলেও বিগত কয়েক বছর ধরে ভারতে বাংলাদেশি পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েছে লক্ষণীয় হারে।

দেশটির পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, ২০১৫ সালে পর্যটকদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পরই বাংলাদেশ দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল। এই বছর ১,১৩৩,৮৭৯ জন বাংলাদেশি পর্যটক ভারতে গিয়েছেন যা দেশটিতে ভ্রমণে যাওয়া মোট পর্যটকের ১৪.১৩ শতাংশ। আর একই বছরে প্রথম অবস্থানে থাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটক ছিল মোট পর্যটকের ১৫.১২ শতাংশ।

টাইম অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, ঢাকায় ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশের কনস্যুলেট না থাকায় সেসব দেশের ভিসা পেতে বাংলাদেশিরা ভারতে ছুটতে বাধ্য হন। অন্যদিকে বিবিসির ব্যাখ্যায় বলা হয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই চিকিৎসা, ব্যবসা ও কেনাকাটার জন্যই বাংলাদেশিরা ভারতে যায়।

তবে ২০১৬ সালে বাংলাদেশের শীর্ষে অবস্থান করার মূল কারণ হিসেবে ভিসা প্রক্রিয়া আগের চেয়ে সহজ করাকেই সবচেয়ে বেশি প্রধান্য দিচ্ছেন ভারতীয় হাই কমিশনার। তিনি বলেন, 'প্রতিবেশী বাংলাদেশের সঙ্গে যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ করতে আমরা বদ্ধপরিকর। আগের তুলনায় এখন প্রক্রিয়া সহজ হয়েছে। আশা করা যায় নিকট ভবিষ্যতে এই প্রক্রিয়া জটিলতামুক্ত হবে।'

ভারতীয় হাইকমিশনার এক মন্তব্যে বলেন, গত ঈদের সময়ে ভিসা ক্যাম্প করে প্রায় ৬০ হাজার ভিসা দেওয়া হয়েছে যা বাংলাদেশি পর্যটক বাড়াতে বড় রকমের ভূমিকা রেখেছে।

রোববার হাইকমিশনের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ভারত যেতে নিশ্চিত টিকিটের বিপরীতে বাংলাদেশি পর্যটকদের আর ই-টোকেন লাগবে না। তারা কোনো ধরনের অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়াই সরাসরি ‘ট্যুরিস্ট ভিসার’ জন্য আবেদন করতে পারবেন।

এই বিবৃতিতে ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার বিষয়ও উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ও ভারতের যোগাযোগ ব্যবস্থা দৃঢ় করার উদ্দেশ্যে গত বছরের অক্টোবরে নারী ভ্রমণকারী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের জন্য সরাসরি ট্যুরিস্ট ভিসা স্কিম চালু করা হয়। পরে ১ জানুয়ারি ২০১৭ এটি সব বাংলাদেশি ভ্রমণকারীর জন্য বর্ধিত করা হয়েছে।