উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র অনলাইনে যেভাবে দাখিল

আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র শতভাগ অনলাইনে দাখিলে বাধ্যবাধকতা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কমিশন বলছে, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অংশ হিসেবে এই প্রথম কোনো নির্বাচনে পুরোসংখ্যায় প্রার্থীরা মনোনয়ন ফরম অনলাইনে পূরণ করবেন। অনলাইনে মনোনয়ন জমাদানের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া ও কারিগরি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এরইমধ্যে।

উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র অনলাইনে দাখিলে বাধ্যবাধকতা ইসির

নির্বাচন কমিশনের সিস্টেম ম্যানেজার আশরাফ হোসেন বলেন, এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আমরা কিছুটা হার্ডলাইন পন্থা অবলম্বন করেছি। কোন ম্যানুয়ালি মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া হচ্ছে না। পুরোটাই অনলাইনে জমা দিতে হবে। এতে প্রার্থীর যেমন সুবিধা, তেমনি রিটার্নিং কর্মকর্তাদেরও সুবিধা।

দেশের ৪৯৫টি উপজেলার মধ্যে প্রথম ধাপে ১৫২টি উপজেলা পরিষদে আগামী ৮ মে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই ধাপের মনোনয়ন দাখিলের শেষ তারিখ আগামী ১৫ এপ্রিল।

যেভাবে মনোনয়নপত্র দাখিল করা যাবে:

অনলাইনে মনোনয়ন দাখিলের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিলের জন্য প্রথমে ইসির ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন লিংকে ক্লিক করে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হবে; রেজিস্ট্রেশন সফলভাবে সম্পন্ন হলে যেই মোবাইল নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে, সেই মোবাইল নম্বরে ইউজার আইডি এবং এককালীন পাসওয়ার্ড পাঠানো হবে।

ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড সতর্কতার সঙ্গে সংরক্ষণ করতে হবে; লগইন পেইজে দেওয়া ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে লগইন করতে হবে। এরপর নতুন করে পাসওয়ার্ড রিসেট এবং নতুন পাসওয়ার্ডটি সংরক্ষণ করতে হবে; প্রার্থীর ড্যাশবোর্ডের বামপাশের মেনু থেকে পর্যায়ক্রমে প্রার্থী মনোনয়ন, প্রার্থীর ব্যক্তিগত তথ্যাদি, প্রার্থীর হলফনামা, নির্বাচনী ব্যয়, সম্পদ ও দায়, প্রার্থীর ফাইল সংযুক্তিকরণ, জামানত ও চূড়ান্ত দাখিলের ধাপগুলো সম্পন্ন করতে হবে।

চূড়ান্ত দাখিলের আগে ‘মনোনয়নপত্র’ বাটনে ক্লিক করে প্রার্থীর পূরণকৃত মনোনয়নপত্র পিডিএফ ফরম্যাটে ডাউনলোড করে সবকিছু ঠিকঠাক আছে কিনা দেখে নেওয়া যাবে। তাতে কোনো কিছু পরিবর্তন বা যোগ করতে হলে সেটি চূড়ান্ত দাখিলের আগেই সম্পন্ন করতে হবে।

চূড়ান্ত দাখিল একবার হয়ে গেলে আর পরিবর্তন করার সুযোগ নেই; সঠিকভাবে মনোনয়নপত্র দাখিল করা হলে মোবাইলে বার্তার মাধ্যমে নিশ্চিত করা হবে। প্রার্থীর মনোয়নপত্র দাখিলের পর, যাচাই-বাছাইয়ের প্রতিটি স্ট্যাটাস মোবাইলে বার্তার মাধ্যমে প্রার্থীকে জানানো হবে।

যেসব ডকুমেন্টের স্ক্যান কপি প্রয়োজন হবে:

প্রার্থীর সদ্য তোলা রঙ্গীন পাসপোর্ট সাইজের ছবি; স্ট্যাম্প পেপারে যথাযথ স্থানে ম্যাজিস্ট্রেট বা নোটারী পাবলিকের স্বাক্ষরিত হলফনামা (প্রার্থীর মনোনয়ন সমাপ্তের পর হোম পেজ থেকে মনোনয়নপত্র ডাউনলোড করে স্ট্যাম্প পেপারে প্রিন্ট করতে হবে, পিডিএফ ফরম্যাট); রাজনৈতিক দলের প্রত্যয়নপত্র (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, পিডিএফ ফরম্যাট); আয়কর রিটার্নের কপি, সম্পদের বিবরণী ও সর্বশেষ আয়কর পরিশোধের প্রমাণপত্র বা রশিদ (পিডিএফ ফরম্যাট); সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতার সত্যায়িত সনদপত্র (পিডিএফ ফরম্যাট); ইউটিলিটি বিল (পিডিএফ ফরম্যাট); ভোটার তালিকার সিডি কেনার রশিদ (পিডিএফ ফরম্যাট); অন্যান্য কাগজপত্র (পিডিএফ ফরম্যাট)।

যেসব তথ্য হাতের কাছে রাখতে হবে:

জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বর; মোবাইল নম্বর; ইমেইল এড্রেস; টিআইএন নম্বর; প্রস্তাবকারী ব্যক্তি, তার এনআইডি ও ঠিকানা (অবশ্যই সংশ্লিষ্ট উপজেলার ভোটার হতে হবে); সমর্থনকারী ব্যক্তি, তার এনআইডি এবং তার ঠিকানা (অবশ্যই সংশ্লিষ্ট উপজেলার ভোটার হতে হবে); ভোটার তালিকায় প্রার্থীর ভোটার ক্রমিক নম্বর; ডকুমেন্টস স্ক্যানার; ক্যামেরা সুবিধাসহ ল্যাপটপ বা ডেক্সটপ বা ট্যাব বা মোবাইল;

এছাড়াও বর্তমান কর্মস্থলের নাম ও ঠিকানা; পিতা-মাতার তথ্য, স্বামী বাস্ত্রীর নাম, জন্মতারিখ, বয়স, জন্মস্থান; তাৎক্ষণিক যোগাযোগের জন্য টেলিফোন বা মোবাইল বা ইমেইল এড্রেস; সন্তানদের তথ্য; শিক্ষাগত যোগ্যতা; ফৌজদারি মামলা সংক্রান্ত তথ্য (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে); প্রার্থীর ওপর নির্ভরশীলদের আয়ের উৎস, প্রার্থীর দায় ও ঋণ সংক্রান্ত তথ্য; প্রার্থীর বাৎসরিক আয় ব্যয়ের বিবরণী;

এছাড়াও লাগবে সদ্য তোলা রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ৩০০*৩০০ পিক্সেলে স্ক্যান করা ছবি; রাজনৈতিক দলের (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) প্রত্যয়ন; আয়কর রিটার্নের কপি; সম্পদ বিবরণী; সর্বশেষ আয়কর পরিশোধের রশিদ; নির্বাচনের ব্যয় নির্বাহের জন্য ব্যবহৃতব্য ব্যাংকের নাম, একাউন্ট নম্বর এবং ব্যাংকের শাখার নাম; সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতার সত্যায়িত সনদপত্র; এবং ভোটার তালিকার সিডি কেনার রশিদ। সবগুলো ডকুমেন্টস পিডিএফ আকারে রাখতে হবে।