কাঠগড়ায় মানহীন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সদ্য সমাপ্ত টেস্ট সিরিজে স্রেফ খড়কুটোর মতই উড়ে গেছে বাংলাদেশ। বোলিং কিছুটা স্বস্তিদায়ক হলেও স্বাগতিকতের ব্যাটিং ছিল একেবারেই ছন্নছাড়া। কোন ইনিংসে দলীয় চারশ নেই, নেই কোন ব্যক্তিগত শতক। খেলাটি টেস্ট হলেও, ব্যাটিংয়ের ধরণ দেখে মনে হয়েছে সবাই বুঝি সাদা বলের ক্রিকেট খেলতে নেমেছেন!  আর এর পেছনে ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীনতাকেই দায়ী করলেন বিসিবির (বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড) টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান আহমেদ সাজ্জাদুল আলম।

বোল্ড আউট জাকির হাসানবোল্ড আউট হয়ে ফিরছেন জাকির হাসান

সিরিজটি আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের অংশ হলেও সেটা সম্ভবত কারোরই মাথায় ছিল না। কেন বলছি? সিলেটে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টের দুই ইনিংসের কোনটিতেই নাজমুল হোসেন শান্তরা দুইশ রানের কোঠাও স্পর্শ করতে পারেনি। ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ অপরাজিত ৮৭ এসেছিলে মমিনুল হকের ব্যাট থেকে। ম্যাচটিতে ৩২৮ রানে উড়ে গেছে টাইগাররা।

পরেরটিতে চট্টগ্রামেও ব্যাটিংয়ের দশা তথৈবচ। প্রথম ইনিংসে সংগ্রহ সাকুল্যে ১৭৮, দ্বিতীয় ইনিংসে টেনেটুনে এল ৩১৮ রান। টপ ও মিডল অর্ডারদের নিদারুণ ব্যর্থতায় এখানে সর্বোচ্চ অপরাজিত ৮১ রান এল অফস্পিনিং অলরাউন্ডারের (মেহেদি হাসান) ব্যাট থেকে। ব্যাট হাতে ধারাবাহিক এই ব্যর্থতার কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে টোয়েন্টিফোর লাইভ নিউজপেপার জানতে পেরেছে, ঘরোয়া চার দিনের ম্যাচগুলোতে নুন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই বলেই টেস্টে এর প্রভাব ফুটে উঠেছে।

আহমেদ সাজ্জাদুল আলম বলছিলেন, ‘টেস্টে ভাল করতে হলে ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের মান ভাল হওয়া আবশ্যক। আমাদের জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা এখানে খেললে টুর্নামেন্টগুলো প্রতিদ্বন্দ্বিতামুলক হত। কিন্তু জাতীয় দলের ঠাসা সূচির কারণে তারা সেই সুযোগটাই পায় না। ফলে আমাদের চার দিনের ম্যাচগুলো মান খুবই নিচু। কারণ ওখানে যারা খেলছে তারা কোন কঠিন প্রতিপক্ষ পাচ্ছে না। ফলে এই জায়গায় অনেক বড় শূণ্যতার তৈরী হয়, যা আমরা টেস্ট ম্যাচ খেলতে গেলে হাড়ে হাড়ে টের পাই।’

তাহলে করনীয় কি? এমন প্রশ্নের জবাবে, বিসিবির এই পরিচালক বললেন, ‘ এই ক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে বিসিবিকেই। তারা আইসিসির সঙ্গে আলোচনা করে জাতীয় দলের আন্তর্জাতিক সূচি এমনভাবে করবে যেন ঘরোয়া ক্রিকেটের সঙ্গে তা সাংঘর্ষিক না হয়। জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা সবাই যখন এখানে খেলবে আমাদের চারদিনের খেলার মানও অনেক উন্নত হবে। তখন টেস্টে আর এমন নিম্নমানের ফলাফল দেখতে হবে না।’

আইসিসি ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের এবারের চক্রে এই অবধি চার ম্যাচের ১ জয়, ও ৩ হারে ১২ পয়েন্ট নিয়ে ৯ দলের মধ্যে টেবিলের আটে বাংলাদেশ। এদিকে ১০ ম্যাচের ৩ জয়, ৬ হার ও ১ ড্রয়ে ২১ পয়েন্ট নিয়ে তলানিতে ইংল্যান্ড। আর ৯ ম্যাচের ৬ জয়, ২ হার ও ১ ড্রয়ে ৭৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে ভারত।